চিনের জিনপিং কি হিটলারের আরও এক রূপ! লাদাখ আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে কোন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে
চিনের জিনপিং কি হিটলারের আরও এক রূপ! লাদাখ আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে কোন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে
চিনের অন্দরে তাঁর সঙ্গে অনেকেই মাওয়ের তুলনা করতে শুরু করেছেন। বিস্তারবাদের নেশাগ্রস্ত চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই মুহূর্তে বিশ্ব আঙিনায় বড় ত্রাস হয়ে উঠছেন। বিশ্বের তাবড় মিডিয়া তাঁর সঙ্গে অ্যাডল্ফ হিটলারের তুলনা করেছে। যে হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন। তাহলে জিনপিং এর হাত ধরে কোন 'আগামী'কে দেখতে চলেছে বিশ্ব? জিনপিং এর সঙ্গে হিটলারের একাধিক 'মিল' নিয়ে 'স্টার্টনিউজ' এর সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট একাধিক চাঞ্চল্যকর বার্তা দিয়েছে।
হিটলার-জিনপিং মিল
১৯২৯ সাল থেকে ১৯৩২ সালে বিশ্ব দেখেছে বহু পরিমাণ কর্মী ছাঁটাই। দেখেছে দরিদ্রতা। সেই সময় সাম্যবাদ ও অর্থনৈতিক উন্নতির ঝড় তুলতে চেয়ে এমন বিপদগ্রস্ত মানুষের সামেন আসেন অ্যাডফ্ল হিটলার। জার্মানি যাঁকে প্রথমে অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছে। এবার আসা যাক ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ঘটনায়।
২০০৭-২০০৯ সালে কী ঘটেছে?
এই দুটি বছরেও কার্যত বিশ্ব একইভাবে আর্থিক ধস দেখেছে। বিশ্ব অর্থনীতি তলানির দিকে যেতে শুরু করে। আর হিটলারের মতোই আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতির স্বপ্ন দেখিয়ে চিনকে নতুন নীতির দিকে নিতে থাকেন শি জিনপিং।
রাজনৈতিক শত্রু নিধন ও জিনপিং-হিটলার
জার্মানিতে ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত নিজের রাজনৈতিক একের পর এক শত্রুকে হত্যা করেন হিটলার। গ্রেগার ট্র্যাসারের হত্য়া, স্লাইগারের মৃত্যুর সাক্ষী ততদিনে জার্মানি। খানিকটা একইভাবে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চিনে একের পর এক রাজনৈতিক শত্রুদের জেলবন্দি করেছেন শি। বোর শেলা ই, জু ওয়াংক্যান, সুন জ্যানকিয়াং এর উদাহরণ।
একনায়কতন্ত্র
১৯৩৩ থেকে ১৯৩৪ সালে জার্মানিতে একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার দিকে হিটলার এগিয়ে যান। দখলে নেন সেদেশের সেনাকে।২০১৪ থেকে ১৯ সাল পর্যন্ত চিনের সমস্ত ক্ষেত্রের একছত্র নিয়ন্ত্রক হিসাবে নিজেকে দাবি করেন জিনপিং।এই সময়ের মধ্যেই পিএলএৎ কমান্ডার ইন চিফ হয়ে যান জিনপিং।
একছত্র ক্ষমতা
১৯৩৩ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে অ্যাডল্ফ হিটলার জানিয়ে দেন সমস্ত রাষ্ট্রের অংশকে মেনে নিতে হবে যে হিটলারই দেশের সর্বেসর্বা।২০১৬-১৮ সালের সময়ে শি জিনপিং নিজেকে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির 'কেন্দ্র' হিসাবে দাবি করেন। তাঁর প্রতি সকলের 'আনুগত্য' দাবি করেন জিনপিং। চলে মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ।
যুদ্ধ প্রস্তুতি
১৯৩৩ সালের পর থেকেই জার্মানিতে গোপনে যুদ্ধের জন্য সমরসজ্জা প্রস্তুত করতে থাকেন হিটলার। সেই সময় নৌসেনা ও লুফ্ত ওয়েফকে তৈরি করেন তিনি। এরপর জার্মানির আস্ফালন শুরু হয় ব্রিটেনের ওপর। ২০১৩ সাল থেকে জিনপিং গোপনভাবে লালফৌজকে সাজাতে শুরু করেন। চিনের নৌশক্তি দ্বিগুণ হতে থাকে।
আরও কিছু মিল
১৯৩৮ সালে অস্ট্রিয়াকে নিজের সঙ্গে নিয়ে , হিটলার পক্ষ জানান দেয় সেদেশ জার্মান বলবে তবে স্বাধীন থাকবে। একইভাবে ২০১৯ সালে তাইওয়ান নিয়ে পদক্ষেপ নেয় চিন। জিনপিং জানান, সেখানে চিনা ভাষায় কথা বলা হবে, তবে স্বাধীনতা থাকবে।
বিস্তারবাজের নেশা
১৯৩৮ এর পর থেকে একাধিক ভূখণ্ডে যেখানে জার্মানরা বসবাস করেছেন, সেই স্বাধীন দেশেগুলির ভূখণ্ডকে জার্মানি নিজের বলে দাবি করতে থাকে। হিটলারের দাবি ছিল, সেখানে যেবেতু আগে জার্মানদের বসবাস ছিল, তাই এলাকাগুলি তাদের। একইভাবে বহু স্বাধীন দেশের ভূখণ্ডকে চিন নিজের বলা শুরু করে দিয়েছে ২০১৯ থেকেই। যার জেরে ভারত, ভূটানের মতো দেশগুলি রয়েছে।
অরুণাচল কেন চাইছে চিন?
হিটলারের মতোই জিনপিং এর জাবি অরুণাচলে বহু তিব্বতীয় বাস করেন, বহু মানুষ চিনা ভাষায় কথা বলেন, ফলে এলাকা চিনের মধ্যে থাকা উচিত। ঠিক যেভাবে হিটলার ১৯৩৩ সালে বহু স্বাধীনদেশের সীমানা দাবি করেন।
জিনপিং এর ভারত হানা ও হিটলারের পোল্যান্ড হানা
১৯৩৯ সালে হিটলার পোল্যান্ড দখল করতে যায়। হিটলারের পক্ষের দাবি ছিল জার্মানির রেডিও স্টোশন ভেঙে পোল্যান্ডই প্রথম হামলা করেছে। ২০২০ সালের ৫ মে লাদাখে চিনা আগ্রাসনের নেপথ্যে ভারতের ওপর দোষ চাপায় বেজিং। দুই একছত্র নায়ক যেন এভাবেই কোথাও 'মিলে' যাচ্ছেন!
মোদীকে 'মিথ্যার আবর্জনা’ দূর করার বার্তা, স্বচ্ছ ভারত গড়ার পরামর্শ দিলেন রাহুল