চিনে কমিউনিস্ট শাসনের ৭০ বছর উপলক্ষ্যে কিছু তথ্য জেনে নিন
আগামী পয়লা অক্টোবর চিনে কমিউনিস্ট পার্টি শাসনের ৭০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করা হবে সেন্ট্রাল বেজিং-এ। নানা ধরনের অনুষ্ঠান, প্য়ারেড চলবে দিনভার।
আগামী পয়লা অক্টোবর চিনে কমিউনিস্ট পার্টি শাসনের ৭০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করা হবে সেন্ট্রাল বেজিং-এ। নানা ধরনের অনুষ্ঠান, প্য়ারেড চলবে দিনভার। সেই পিপলস রিপাবলিক অফ চায়নার ক্রম পর্যায় দেখে নেওয়া যাক।
১) মাও-সে-তুং নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি ১৯৪৯-র ১ অক্টোবর চিনের দখল নেয়। পরাজিত চিয়াং কাই-শেকের ন্যাশনালিস্ট সরকারকে ডিসেম্বরে তাইওয়ানে পাঠানো হয়।
২) ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ : দুই কোরিয়ার লড়াইয়ে দক্ষিণ দেশের সমর্থনে দাঁড়ায় আমেরিকা। সেই যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিল চিন। সেই যুদ্ধে এক লক্ষ চিন সৈন্যের মৃত্যু হয়েছিল।
৩) ১৯৫৭ : গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ড মুভমেন্টের মাধ্যমে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার দিকে হেঁটেছিল গণপ্রজাতন্ত্রী চিন। এই রূপান্তরের মাধ্যম ছিল শিল্পায়ন ও সমবায়ীকরণ। চিন সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন সেদেশের বহু শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা। সমাজে তাঁদের ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল।
৪) ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ : গণপ্রজাতন্ত্রী চিনে এই তিন বছরের দুর্ভিক্ষে তিন কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই পরিস্থিতির জন্য গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ড-কেই দায়ী করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
৫) ১৯৫৯ : অর্থনৈতিক দুরাবস্থা এবং দুর্ভিক্ষ চলাকালীনই তিব্বতের লাসা দখলের উদ্দেশে সেখানে ঢুকে পড়ে চিনের বিরাট লাল বাহিনী। পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন চৈনিক ধর্মগুরু দালাই লামা।
৬) ১৯৬২ : সীমান্ত নিয়ে বিরোধিতার জেরে প্রতিবেশী ভারত আক্রমণ করে চিন। চিনা সেনা অরুণাচল প্রদেশ ও লাদাখে ঢুকে পড়ে। যুদ্ধে জয়ী হয়ে একতরফা যুদ্ধবিরতি জারি করে চিন সরকার। আকসাই চিন দখলে রেখে অরুণাচলপ্রদেশ ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
৭) ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৬ : মাও সে-তুং-র নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিপ্লব সংঘটিত হয়। চিনকে পুঁজিবাদী ও সনাতন চিন্তামুক্ত করতে এই বিপ্লবকে শুদ্ধিকরণের মর্যাদা দেওয়া হয়। বহু পুঁজিবাদী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে সেসময় ধ্বংস করা হয়।
৮) ১৯৭১ : তাইওয়ানের ন্যাশনালিস্ট সরকারকে হঠিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘে অন্তর্ভূক্ত হয় গণপ্রজাতন্ত্রী চিন।
৯) ১৯৭২ : চিন সফরে যান আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন।
১০) ১৯৭৬ : চিনের থাংসানে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে প্রায় তিন লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। সে বছরই প্রয়াত হন চিনের প্রেসিডেন্ট মাও সে-তুং। কমিউনিস্ট নেতা দেং জিয়াওপিং-র হাতে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়।
১১) ১৯৭৮ : দেং জিয়াওপিং-র নেতৃত্বেই বাজার অর্থনীতির দিকে ঝুঁকেছিল গণপ্রজাতন্ত্রী চিন। সে দেশের বিদেশী বিনিয়োগের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল। শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক সংস্কার।
১২) ১৯৭৯ : চিন ও আমেরিকার মধ্যে নতুন কূটনৈতিক বন্ধন তৈরি হয়েছিল।
১৩) ১৯৮৫ : ইতিহাসে প্রথমবার আমেরিকার সঙ্গে উদ্বৃত্ত সম্পদের বাণিজ্য শুরু করে চিন।
১৪) ১৯৮৯ : রাজনৈতিক সংস্কারের বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু করেছিলেন চিনের ছাত্র ও শ্রমিকরা। তা বিদ্রোহ চাপা দিতে ওই বছরের ৪ জুন তিয়ানেনমেন স্কোয়ারে ১০০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
১৫) ১৯৯৭ : প্রয়াত হন গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দেং জিয়াওপিং। সে বছরই ব্রিটিশ কলোনী হংকং চিনে অন্তর্ভূক্ত হয়।
১৬) ১৯৯৮ : এশিয়া জুড়ে শুরু হয় অর্থনৈতিক অস্থিরতা। প্রায় তিন কোটি মানুষ কর্মচ্যুত হন।
১৭) ২০০১ : ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের সঙ্গে হাত মেলায় গণপ্রজাতন্ত্রী চিন।
১৮) ২০০৮ : চিন অধিকৃত তিব্বতের লাসায় ভয়ঙ্কর দাঙ্গায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়। সে বছরই সিচুয়ানে ভূমিকম্পে আশি হাজার মানুষের মৃত্য হয়। একই বছর বেজিং-এ বসে অলিম্পিকের আসর।
১৯) ২০১২ : চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হন শি জিং-পিং। পরের বছরই চিনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ক্ষমতায় এসে পুরনো সিল্ক রোড পুনরুদ্ধার করেন জিং-পিং।
২০) ২০১৭ : বেজিং সফরে যান মার্কিম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরের বছরই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যুদ্ধ শুরু হয়।
২১) ২০১৮ : প্রেসিডেন্টের মেয়াদ তুলে দিয়ে দেশের সংবিধান সংস্কার করে চিন।
২২) ২০১৯ : চিনের শাসন থেকে রেহাই পেতে হংকং-এ শুরু বিদ্রোহ।
[ মোদী সরকারের নতুন সংস্কার প্রস্তাব! সরকারিকর্মীদের অবসরের বয়সসীমা কমাতে আলোচনা]
[ইসরোর বড় সাফল্য, মঙ্গলের কক্ষপথে ৫ বছর ধরে সফল প্রদক্ষিণ ভারতের মঙ্গলযানের]