উইঘুর অত্যাচারের 'সত্যি' ঝুলি থেকে বেড়িয়ে পড়তেই ফুঁসছে চিন, মরিয়া হয়ে এবার কোন পাল্টা চাল বেজিংয়ের
রাষ্ট্রসংঘ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে সরব হয় উইঘুর সমাজের মানুষজন। যেই তথ্যের ভিত্তিতে এই রব উঠেছে সেই সত্যি উদঘাটনের নেপথ্যে রয়েছে এক জার্মান গবেষক ও অস্ট্রেলিয়ার এক থিঙ্কট্যাঙ্ক। এদিকে উইুরদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কালিমালিপ্ত চিন এখন পাল্টা চাল দিতে মরিয়া।
মামলা করার হুমকি দিয়েছে চিন
জানা গিয়েছে উইঘুরদের নিয়ে গবেষণা ও এই বিষয়ক ঘটনা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য জার্মান গবেষক আদ্রিয়ান জেঞ্জ ও অস্ট্রেলিার স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটে বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছে চিন। এদিকে উইঘুরদের তরফে চিন সরকারকে ইতিমধ্যেই চাপে রাখা হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে শি জিনপিংয়ের দলের বিরুদ্ধে। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম, যদিও আইসিসির বিচারব্যবস্থা চিন স্বীকার করে না।
উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের কাহিনী বহু পুরোনো
চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের কাহিনী বহু পুরোনো। জিনজিয়াং কাগজে কলমে স্বায়ত্তশাসিত হলেও, চিনের সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলের শহরগুলোর ভেতর দিয়েই গেছে সিল্ক রোড, তাই শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে জিনজিয়াং এর অর্থনীতি কৃষি ও বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল। জন্ম নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ধর্ম পালন করায় বাধা সহ একাধিক নির্যাতনের সম্মুখীন এখানকার মানুষরা।
উইঘুরদের ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়
বিংশ শতাব্দির শুরুর দিকে উইঘুররা নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ১৯৪৯ সালে চিনের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কিছুদিন পর চিনের কমিউনিস্ট সরকার উইঘুরদের বৃহত্তর চিনের সাথে যোগ দেয়ার প্রস্তাব জানায়। প্রস্তাব মেনে না নেয়ার পর থেকে শুরু হয় উইঘুর মুসলিমদের উপর নির্যাতন। তাদের ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়। ধর্মীয় প্রার্থনালয় ভেঙে দেওয়া হয়।
উইঘুরদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ
উইঘুরদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এক মূল মন্ত্র হল তাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা। আর এই বিষয়ে চিনে সরকার বেশ কঠোর। দুইয়ের বেশি সন্তান থাকলে গরিব উইঘুরদের থেকে বড় পরিমাণে জরিমনা নেওয়া হয়। এর জেরে ১৯৪৯ সালে জিনজিয়াং এ যেখানে উইঘুর মুসলিমদের সংখ্যা ছিল ৯৫ শতাংশ, ১৯৮০ সালের মধ্যেই তা ৫৫ শতাংশে নেমে আসে। এছাড়া ২০১৮ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ উইঘুরকে চিনের 'সন্ত্রাসবাদ' কেন্দ্রগুলিতে আটক রাখা হয়েছে।