ভারতের বিরুদ্ধে ডাহা ফেল জিনপিংয়ের রণকৌশল! লাদাখ সীমান্তে আরও অশান্তির আঁচ নয়া রিপোর্টে
লাদাখে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের বারংবারের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিল সেদেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। নিজেকে মাও জেদংয়ের সঙ্গে তুলনা করা শি জিনপিংয়ের কাছে এটাই ছইল সুবর্ণ সুযোগ, তাই তো ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিবেশী দেশের উপর এরকম অতর্কিত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল বেজিং। তবে এই সিদ্ধান্ত যে ব্যাকফায়ার করেছে তা বলাই বাহুল্য। এবং তার জেরে অস্বস্তিতে আছেন জিনপিং।
মুখ পুড়েছে জিনপিংয়ের
শি জিনপিংয়ের এই মুখ পোড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে এক মার্কিন ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনেও। নিউজউইক নামক সেই শীর্ষ স্থানীয় মার্কিন ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে যে চিনের এই হামলার বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার তৎপরতা আশা করেনি বেজিং। এবং ভারতের লড়াই করার ক্ষমতার জেরেই চিনের এই অতর্কিত হামলা অপ্রত্যাশিতভাবে ফ্লপ করেছে বলেও মন্তব্য করা হয় মার্কিন প্রতিবেদনটিতে।
পিএলএ-র হামলা অপ্রত্যাশিতভাবে ফ্লপ করেছে
প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, 'শি জিনপিংয়ের জন্যে এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে ভারতের উপর এই হামলা চালানোর পরিকল্পনাটি নিজে কষেছিলেন শি জিনপিং নিজে। তবে পিএলএ-র এই হামলা অপ্রত্যাশিতভাবে ফ্লপ করেছে। চিনা সেনার এই ব্যর্থতার দাম দিতে হবে। সীমান্তেও এর প্রভাব পড়বে, চিনের রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে।'
নৃশংস হামলা চালাতে কোমর কষছে চিন
তবে প্রতিবেদনটিতে সতর্ক করে বলা হয়, বিগত প্রচেষ্টাগুলি ব্যর্থ হওয়ায় আরও নৃশংস হামলা চালাতে উদ্যত হচ্ছে চিন। নউজউইকের মতে, চিনের আগ্রাসী শাসকের কাছে এই ব্যর্থতা ফের হামলা চালানোর প্রেরণা দেবে। শি জিনপিং শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট হিসাবে যে চিনা সেনার প্রধান, তেমন নয়। সেদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের প্রধানও তিনি। তাই এই সব ক্ষেত্রে সামরিক পরিকল্পনা নেওয়া হয় তাঁরই অধীনে।
চিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড়সড় রদবদল
এদিকে এই ব্যর্থতা চিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বড়সড় বদল আনার জন্যে পথ মসৃণ করে দেয়। ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে শি জিনপিং তাঁর বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত নেতাদের পদ থেকে সরিয়ে, তাঁদের স্থানে নিজের অনুগত সৈনিকদের বসাচ্ছেন। গালওয়ানের ঘটনার পর থেকেই এই রদবদল চলে আসছে। তবে প্যাংগংয়ে সাম্প্রতিক ব্যর্থতার জেরে এই রদপদলের প্রক্রিয়া আরও গতি পাবে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
ভারতের আক্রমণে দিশাহারা চিন
কয়েকদিন আগেই পূর্ব লাদাখের প্যাংগং এলাকায় স্থিতাবস্তা লঙ্ঘন করে চিনা বাহিনী। প্যাংগং লেকের দক্ষিণ দিক থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে তারা৷ তবে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরে চিন সেনার অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে ভারতীয় সেনা। এরপরই প্যাংগং লেকের গুরুত্বপূর্ণ বেশ একটি স্থানের দখল নেয় ভারতীয় সেনা। যার জেরে চিনা সেনার গতিবিধির উপর আরও কড়া নজরদারি চালাতে সক্ষম হবে ভারত। ভারতের এহেন আক্রমণাত্মক মনোভাবে আরও হকচকিয়ে গিয়েছে চিন।
চিন্তার রেখা দেখা দিয়েছে শি জিনপিংয়ের মুখে
আদতে চিনের পদাতিক সৈনিকদের সেরকম যুদ্ধের প্রশিক্ষণ বা অনুভব নেই। শেষবার চিনের পদাতিক সৈনিকরা লড়েছিলেন ভিয়েতনামে। তবে ভিয়েতনামের মতো ছোট দেশও চিনের সেই হামলাকে প্রতিহত করে দেয়। তাতে মুখ পুড়েছিল চিনা সেনার। সেইখানে দাঁড়িয়ে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যেও ভারতের সঙ্গে সেই অর্থ পেরে উঠছে না চিনা সেনা। আর তাই চিন্তার রেখা দেখা দিয়েছে শি জিনপিংয়ের মুখে। তবে লাদাখ ফ্রন্টে চিনের এই ব্যর্থতা কোনও ভাবেই শি জিনপিংয়ের ঘাড়ে চাপানো যাবে না।
লাদাখে আরও বড় আক্রমণের আশঙ্কা
এটাই চিনের রাজনৈতিক সমীকরণের অলিখিত আইন। তাহলে কী করা যাবে? আরও তীব্র আক্রমণে ভারতকে পরাস্ত করতে পারলেই মান ফিরবে চিনের। আর এই কারণেই আশঙ্কা বাড়ছে যে, সম্মান ফিরে পেতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পথেই হাঁটতে পারে চিন। প্রসঙ্গত, বিগত ১০০ দিন ধরে চিন-ভারত এই ফেস অফ চললেও চিন কিন্তু ভারতকে টলাতে পারেনি। আর এখানেই আরও বড় আক্রমণের আশঙ্কায় ভরা মেঘ ঘনীভূত হয়ে লাদাখে আকাশে ঘুরছে।
মোদী-মমতা সহ ১০ হাজার ভারতীয়কে নজরে রাখছে চিন! লাদাখ সংঘাতের আবহেই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস