আফগানিস্তান নিয়ে চিনের অত্যুৎসাহকে এখনই লাল পতাকা দেখাতে রাজি নয় আমেরিকা
মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন মনে করছেন আফগানিস্তান নিয়ে চিনের বাড়তে থাকা আগ্রহ আদতে ইতিবাচক হলেও হতে পারে। অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর চিনের এই আফগান প্রীতিকে এখনই খুব একটা নেতিবাচক চোখে দেখছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ব্লিনকেন বলছেন চিন যদি আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তাহলে তিনি অবশ্যই এই পদক্ষেপকে অভিনন্দন জানাবেন। ঘটনা হল, দুই দিনের ভারত সফরে আসা মার্কিন বিদেশসচিব এমন বক্তব্য করতে পারেন তা আন্দাজ করা যায়নি। বরং মনে করা হয়েছিল, আফগানিস্তানে যে অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাতে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন আরও কাছাকাছি আসবে। কারণ ইতিমধ্যে আফগানিস্তান থেকে ৯০ শতাংশের বেশি মার্কিন সেনা তুলে নেওয়া হয়েছে। যারা গত দুই দশক ধরে তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিল।
বুধবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি তালিবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এবং আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে তালিবানরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিন, এমন দাবি জানান। একই সঙ্গে চিন আফগানিস্তানকে নবনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেও কথা দিয়েছে। চিন তালিবান নেতাদের সঙ্গে তিয়ানজিন প্রদেশে আলোচনায করেছে। তালিবান নেতারা চিন সফরে গিয়ে আফগানিস্তানে শান্তি এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করছেন। চিনা বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং লি আলোচনা শেষে এমনটাও বলেছেন, চিন তালিবানদের পাশে থাকবে, পাশাপাশি তালিবানরা পূর্ব তুর্কিস্তানের ইসলামিক বিদ্রোহ যা চিনের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি বড় আশঙ্কা সেই বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে তালিবানরা।
তালিবানরা চিনকে বন্ধু হিসেবে দেখছে এবং সে দেশে চিনারা খুব তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ করবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন ফের একবার তালিবানদের আলোচনার টেবিলে বসার পরামর্শ দিয়েছেন।
আফগানিস্তান ইস্যুতে চিন প্রথম থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে এসেছে। এবং যেভাবে আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করেছে, সেটা সে দেশের নীতি ব্যর্থতা বলেও তোপ দাগতে ছাড়েনি চিন। এই মুহূর্তে আফগানিস্তানের মানুষের কাছে সুযোগ রয়েছে তাদের দেশকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর। এমনটাই বিবৃতি দিয়েছে চিনের বিদেশমন্ত্রক।
ঘটনা হল, চিন যেভাবে তালিবান নেতাদের উস্কানি দিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে চাইছে, তা ঘুরিয়ে ভারতকে চাপে রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি আফগানিস্তানে ভারতের কর্তৃত্ব কমলে পাকিস্তানের পক্ষেও তা নিশ্চিতভাবে সুবিধাজনক হবে।