চাঁদের সমতলে জলের চিহ্ন! দাবি চিনের বিজ্ঞানীদের
চাঁদের সমতলে জলের চিহ্ন! দাবি চিনের বিজ্ঞানীদের
চাঁদে লাভা দিয়ে তৈরি একটি সমতলে জলের চিহ্নের সন্ধান পেয়েছেন চিনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জলের উৎসের সন্ধানে তাঁরা নতুন করে গবেষণা শুরু করেছেন। চলতি সপ্তাহে নেচার কমিউনিকেশন বলে একটি পত্রিকায় এমনটাই দাবি করেছেন চিনা বিজ্ঞানীরা।
নেচার কমিউনিকেশন পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদে লাভা দিয়ে সমতল রয়েছে। সেই সমতলকে 'ওসেন অফ স্ট্রম' বা 'ঝড়ের সাগর' বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে কঠিন লাভার অংশ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় হাইড্রক্সিল আকারে জলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। হাইড্রক্সিল একটি জলের অনু ও একটি জলের অনু নিয়ে গঠিত।
অন্যদিকে, জল দুটো হাইড্রেজেনের অনু ও একটি অক্সিজেনের অনু দিয়ে তৈরি। কয়েক দশক আগে নাসা চাঁদে হাইড্রক্সিলের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। চিনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, হাইড্রক্সিলের যে সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তার খুব নগন্য অংশ হয়তো বাইরে থেকে এসেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই হাইড্রক্সিল থেকে চাঁদে জলের উৎসের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। তার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
চিন তাদের চাঁদের দেবীর নাম অনুসারে চাং'ই-৫ মিশনের সূচনা করে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এই কর্মসূচির অধীনে চিন চাঁদে ওশেনাস প্রোসেলারামের পূর্ববর্তী সময়ের মাটি ও শিলা পুনরুদ্ধার করে। সেখান থেকেই ১,৭৩১ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করে। সেই নমুনা থেকেই হাইড্রক্সিলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সরাসরি জল না হলেও হাইড্রক্সিলের সন্ধানে বিজ্ঞানীদের মনে নতুন করে আশা জন্মাতে শুরু করেছে। চাঁদে জলের উৎস সন্ধানে বিজ্ঞানীরা নতুন করে গবেষণা শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
বিদ্যুৎ চালিত গাড়িকে কি মোবাইলের মতো চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে? উত্তর খুঁজছেন এমআইটির দুই ছাত্র
এই নমুনা যখন সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই সময় চাঁদের তাপমাত্রা ছিল ২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। সেই সময় চাঁদের ভূপৃষ্ট অত্যন্ত শুষ্ক ছিল। চাঁদের দুটো ভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া মাটি বা শিলাতে হাইড্রক্সিলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। চাং'ই-৫ চিনে নদী বা ঝরনার সম্পর্কে বিশেষ কোনও তথ্য দিতে পারেনি। তবে ল্যান্ডারটি চাঁদের পাথর ও মাটিতে প্রতি মিলিয়নে ৩০টি হাইড্রক্সিল খুঁজে পেয়েছে।
এই সন্ধানের পর চিন আরও চন্দ্র মিশন চালু করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে চাঁদে জলের সন্ধান পাওয়া গেলে তা যে একটা যুগান্তকারী আবিষ্কার হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দীর্ঘ মেয়াদি মানব বাসস্থানের পরিকল্পনায় নতুন দিক খুলে যেতে পারে বলে মনে করা যেতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট করে চাঁদে জলের অস্তিত্ব নিয়ে কিছু বলতে পারেননি। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই বিষয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। হাইড্রক্সিল পাওয়া মানের জলের সন্ধান পাওয়া নয় বলেও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।