সত্যিই কি দক্ষিণ চিন সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে এই দেশ, জানুন চিন কী বলছে
বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সপক্ষে বৃহস্পতিবার চিন বলেছে ওই অঞ্চলে তাদের 'তর্কাতীত সার্বভৌমত্ব' রয়েছে।
দক্ষিণ চিন সাগরের তিনটি স্থানে জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে চিন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে বুধবার এখবর প্রকাশিত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার চিন দাবি করেছে ওই অঞ্চলে তাদের 'তর্কাতীত সার্বভৌমত্ব' রয়েছে। অঞ্চলটিকে আরও একবার নিজেদের দেশের অংশ বলে দাবি করে সেখানে অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টিতে একপ্রকার শিলমোহর দিল তারা।
[আরও পড়ুন:বয়স ১০৪ বছর, আর বেঁচে থাকতে চান না অস্ট্রেলিয়ার এক বিজ্ঞানী]
দক্ষিণ চিন সাগর এবং পূর্ব-চিন সাগর, উভয় ক্ষেত্রেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে চিন। দক্ষিণ চিন সাগরের প্রায় সবটাই তাদের বলে দাবি করে চিন। পাল্টা দাবি রয়েছে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন্স, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই এবং তাইওয়ানের। এদিন চীনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, 'নানশা (যা আন্তর্জাতিক মহলে স্পার্টলি নামে পরিচিত) দ্বীপ ও তার সংশ্লিষ্ট দ্বীপপুঞ্জ চিনের অখণ্ড অংশ'। যদিও দ্বীপটির ওপর দাবি রয়েছে ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ান-এর। চুনিং আরও বলেন, 'দক্ষিণ চিন সাগরে চিন এর কার্যক্রম আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক সংহতির পরিচয়। এটা আমাদের অধিকার'।
মার্কিন ও পশ্চিমী সংবাদ সংস্থাগুলি দাবি করেছিল মার্কিন গোয়েন্দাদের রিপোর্টে জানা গিয়েছে স্পার্টলি দ্বীপে চিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে। এর আগে এনিয়ে চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মন্তব্য করতে চায়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছিল গত ত্রিশ দিনে ফিয়েরি ক্রস রিফ, সুবি রিফ ও মিসচিফ রিফে চিন তাদের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে।যদিও মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও বিষয়টিকে স্বীকার করতে চায়নি। তারা বলেছিল গোয়েন্দা তথ্য় িনেয় মুখ খুলবেন না। কিন্তু এদিন সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টি স্বীকার না করলেও, 'নিজেদের ভূখণ্ডে তারা যা ইচ্ছে করতে পারে', এই মন্তব্য়ের মধ্য দিয়ে বিষয়টি একপ্রকার মেনেই নিয়েছে তারা।
ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে প্রশ্ন করতে চুনিং বলেন, 'যে স্থাপনার কথা বলে হচ্ছে তা কোনও নির্দিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দেশ গুলির এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তাদের বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে দেখা উচিত।'
কী ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে চীন? আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমগুলির দাবি, 'ওয়াইজে-১২বি' জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে সেখানে। যা দিয়ে ২৯৫ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে যে কোনও নৌযানে হামলা চালানো যায়। আছে 'এইচকিউ-৯বি'। এটি একটি দূর পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। ১৬০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে যে কোনও বিমান, ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে পারে এটি।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থিংকট্যাংকের দক্ষিণ চিন সাগর বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গ্রেগ পোলিং জানান, 'ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘটনাটি গুরুত্বপূর্ণ। স্পার্টলি দ্বীপে এই প্রথম চিন ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করলো। এটা দক্ষিণ চিন সাগরে নিজের আধিপত্য বৃদ্ধির জন্য চিনের একটা বড় পদক্ষেপ। সারা বিশ্বব্যাপি বাণিজ্যের জন্য এই সমুদ্র পথটি গুরুত্বপূর্ণ।'
[আরও পড়ুন: তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত আসামী! তাঁকে দেশে ফেরানো নিয়ে যা বললেন হাসিনা]