শান্তি নয় বিবাদ চাইছে চিন, লাদাখ ইস্যুতে ফের ভারতকে দুষে চাঞ্চল্যকর দাবি বেজিংয়ের!
ফের ভারতকে লাদাখ নিয়ে দোষারোপ করল চিন। লাদাখ বরাবর এলএসি এতিক্রম করে ভারতই নাকি চিনের ভূখণ্ডে ঢুকেছিল। সোমবার ফের এমনই দাবি করা হল বেজিংয়ের তরফে। যদিও চিনের এহেন অবান্তর ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি ভারতীয় সেনা বা কেন্দ্রের তরফে। প্রসঙ্গত, সংসদে আজ রাজনাথ সিং লাদাখ ইস্যুতে কথা বলতে পারেন। তবে তার আগেই দিল্লিতে নিয়োযিত চিনা রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ ঘিরে ফের এক পরদ উত্তেজনা জন্মাচ্ছে দুই দেশের মাঝে।
লাদাখে ঘাঁটি পিছোচ্ছে না চিন
আদতে চিন মুখে এক বললেও কাজের বেলায় উল্টোটাই করে। লাদাখের ক্ষেত্রেও তাই দেখা গিয়েছে। ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা সীমান্তে চিনের ঘাঁটি পিছিয়ে নেওয়ার কোনরকম ইচ্ছে গত কয়েকদিনে দেখা যায়নি। বরং সেখানে তারা সেনা এবং পরিকাঠামোগত নির্মাণ কাজ বাড়িয়ে চলেছে আগের তুলনায়। তাই চিনের কথায় বিশ্বাস করার পাত্র নয় ভারত।
উত্তেজনার পরিস্থিতি বজায় রয়েছে লাদাখে
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনার পরিস্থিতি যাতে আর বৃদ্ধি না পায়, তা নিশ্চিত করতে ভারত-চিন সেনা পর্যায়ের বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি, কারণ চিন ক্রমেই আরও সেনা বাড়াচ্ছে প্যাংগং লেক এলাকায়। কয়েকদিন আগেই পূর্ব লাদাখের প্যাংগং এলাকায় স্থিতাবস্তা লঙ্ঘন করার চেষ্টা করে চিনের পিএলএ। অগাস্টের শেষ দিকের সেই ঘটনায় ভারত-চিন উত্তেজনা আরও বাড়ে।
অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল চিন, ভারত নয়
প্যাংগং লেকের দক্ষিণ দিক থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে তারা৷ তবে প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীরে চিন সেনার অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে ভারতীয় সেনা। এরপরই প্যাংগং লেকের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি স্থানের দখল নেয় ভারতীয় সেনা। যার জেরে চিনা সেনার গতিবিধির উপর আরও কড়া নজরদারি চালাতে সক্ষম হবে ভারত। এই বিষয়টিকেই এবার ইস্যু বানাতে উদ্যত হয়েছে বেজিং।
চিনের পিএলএ-কে যোগ্য জবাব দেয় ভারত
সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাঝেই নতুন করে সীমান্তে উত্তেজনা ছড়ায় চিন। তবে চিনকে যোগ্য জবাব দেয় ভারত। এরপরে নিজেদের দোষ ঢাকতে চিন উল্টে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধেই সীমান্ত পার হয়ে উত্তেজনা ছড়াবার অভিযোগ তুলতে থাকে। এরপর দুই পক্ষের তরফে সীমান্তে ৪৪ বছর পর গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটে। যদিও তা ছিল ওয়ার্নিং শট। এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘুরিয়ে সেই ভারতের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছে চিন।
ভারতের অধীনে বেশ কয়েকটি স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট
এরই মধ্যে ভারত বেশ কয়েকটি স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব বজাতে সক্ষম হওয়ায় চিনা সেনার গতিবিধি এখন ভারতীয় স্ক্যানারের নিচে। যদিও এরপরে শান্তি প্রতিষ্ঠার একাধিক চেষ্টা হলেও পূর্ব লাদাখের গালওয়ান, গোগরা, হট স্প্রিং, দেপসাং সমতলভূমি, প্যাংগং লেক ও পাহাড়ির খাঁজ বা ফিঙ্গার পয়েন্টগুলোতে চিনের বাহিনীকে ঘাঁটি গেড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এরই মাঝে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের যুদ্ধবিমানকেই চক্কর কাটতে দেখা গেছে।
গুরুত্বপূর্ণ চূড়াগুলির দিকে নজর দিচ্ছে চিনও
চিনের তরফে অন্তত ২০ থেকে ৩০টি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়েছে প্যাংগং এলাকায়। এছাড়া জানা গিয়েছে চিন প্যাংগং এলাকায় নিজেদের ৫ থেকে ৬ হাজার সৈন্য মোতায়েন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে। ভারতীয় সেনার অধীনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ চূড়াগুলি দখলের উদ্দেশ্যেই সেখানে সৈন্য বহর বাড়ায় পিএলএ। তাছাড়া ট্যাঙ্ক স্কোয়াড্রনও মোতায়েন করেছে চিন। পুরদস্তুর যুদ্ধের জন্যে তৈরি হচ্ছে তারা। তবে মনে করা হয়েছিল মস্কোতে বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের পর এই উত্তেজনা কিছুটা কমবে। তবে চিনের তরফে এই সেনা বহর কমানোর কোনও খবর এখনও মেলেনি।
লাদাখ সংঘাতের মাঝেই চালু চিনের অন্য এক যুদ্ধ! কী এই হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার?