মুম্বই হামলার পাক মাস্টারমাইন্ড-এর পাশে চিন, ভারত-আমেরিকার আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় বাধা বেজিংয়ের
পাকিস্তানের জঙ্গি সাজিদ মীরকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকার মনোনয়নে বাধা দিল চিন
২০০৮ সালের প্রধান মাস্টারমাইন্ড লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সাজিদ মীরকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় নথিভুক্ত করার পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াল চিন। আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় নাম নথিভুক্ত করতে ভারত ও আমেরিকা সাজিদ মীরের নাম রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মনোনীত করে। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারেও আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকার পাক জঙ্গির নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াল চিন।
জানা গিয়েছে, সাজিদ মীরকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য আমেরিকার প্রস্তাবটি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ আল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটির অধীনে নিয়ে আসা হয়। আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য মনোনীত করা হয়। রেজোলিউশন ১২৬৭ অনুযায়ী আইএসআইএল, আল-কায়দা এছাড়াও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যকলাপকে সমর্থন করে বা অর্থায়নে সাহায্য করে এমন গোষ্ঠী বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
সাজিদ মীর প্রথম নয়, এর আগেও চিন বহুবার পাক মদতপুষ্ট একাধিক জঙ্গিকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার বিরোধিতা করেছে। এলইটি ও জামাত-উদ-দাওয়ার নেতা আবদুল রহমান মাক্কি এবং জইশ-ই মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই আবদুল রউফ আজহারের নাম আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় তোলার জন্য ভারত ও আমেরিকা প্রস্তাব দিয়েছিল। সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিন।
সাজিদ মীর মুম্বইয়ের বিস্ফোরণে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিল। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় শুধু তাজ হোটেলে ২৬ জন বিদেশি, নয় জন জঙ্গি সহ মোট ১৭৫ জন নিহত হয়েছিলেন। ২৯১ জন আহত হয়েছিলেন। হামলায়আজমল কাসভ নামের এক জঙ্গিকে ভারতের নিরাপত্তারক্ষীরা আটক করেন। পরে বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। জানা গিয়েছে, মীর মুম্বই হামলার লস্কর-ই-তইবার একজন প্রোজেক্ট ম্যানেজার ছিল। স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে মুম্বই হামলায় যাঁদের পণবন্দি করেছিল জঙ্গিরা, তাঁদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল মীর। তিনি ভারত বিরোধী সন্ত্রাসী অভিযানে যুক্ত জাকি উর রহমান লাকভির নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালো করতেন। জানা গিয়েছে, লস্কর ই তইবার বিদেশি সদস্যপদ বাড়ানোর জন্য ও তাঁদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিল। এরজন্য মীরকে একাধিকবার বাংলাদেশ, কানাডা, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ যেতে হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসে পাকিস্তান সরকারের তরফে সাজিদ মীরকে গ্রেফতারের দাবি করা হয়। ইসলামাবাদের একটি আদালত সাজিদ মীরকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বলে পাক সরকারের তরফে জানানো হয়। যদিও গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়, সাজিদ মীরের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বার বার পাক প্রশাসনের দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করে সাজিদ মীরের বেঁচে থাকার অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেল।