করোনা আবহে থমকে থাকা বিশ্ব অর্থনীতি দেখছে চিনের ম্যারাথন দৌড়!
এই করোনা মহামারী এমন এক সময়ে এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে পড়ে বিশ্ব বাণিজ্য হুমকির মুখে। মুক্ত বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ গুরুতর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে এই মহামারীর জেরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এটিই সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সময় সমগ্র বিশ্বের জন্য। এরই মধ্যে চিনের লাদাখ ও দক্ষিণ চিন সাগরে আগ্রাসনে তিতি বিরক্ত বিশ্ব। এসবের মাঝেও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চিন। এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে চিন প্রথম এবং একমাত্র দেশ যাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থমকে নেই।
৩.২ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে চিনের
ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে ইতালির আমদানি করা প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ব্লাড থিনার চিন থেকে আসে। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ৯৭ শতাংশ, জাপান তাদের চাহিদার ৫০ শতাংশ এবং জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্স তাদের প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ৪০ শতাংশ চিন থেকে আমদানি করে। এই মহামারী আরও চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছে যে চিনের উপর কতটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। আর এর ফলেই করোনা আবহেও ৩.২ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে চিনের।
করোনার জেরে থমকে বিশ্ব
করোনা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে জাপান, সাউথ কোরিয়াসহ এশিয়ার প্রায় সবকটি দেশে। এরপরই ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়িয়ে আফ্রিকা মহাদেশেও হানা দেয় এটি। যখন এই প্রকোপ শেষ হবে, তখন কী শুধু চিনই বীরদর্পে দাঁড়িয়ে থাকবে? এই প্রকোপ শুরু হওয়ার পর গোটা বিশ্বে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত এই সংক্রমণে। আমেরিকা, যে কী না বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী দেশ, এই করোনার জেরে নুইয়ে পড়েছে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ এখন সেটি। সেখানে ৩৩ লক্ষের বেশি আক্রান্ত।
বিশ্ব আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে চিনের উপর
এই পরিস্থিতিতে আমেরিকাতে গত কয়েক দিনে চাকরি হারিয়েছেন ১ কোটি ৬০ লক্ষের বেশি মানুষ। এরা সবাই আমেরিকায় বেকারত্ব ভাতার জন্য আবেদন জানিয়েছে। ১৯৪৮ সালের পর এত বাজে অবস্থা কখনও হয়নি আমেরিকাতে। অর্থনীতি প্রায় ধসের মুখে সেখানে। তবে চিন এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদের অর্থনীতিকে। গোটা বিশ্ব যেন আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে তাদের উপর।
দক্ষিণ চিন সাগরের ফ্যক্টর
এদিকে দক্ষিণ চিন সমুদ্রে চিনের একচেটিয়া আধিপত্য তাদের এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও সাহায্য করছে। এই সাগর বিশ্বের ব্যস্ততম সামুদ্রিক বাণিজ্য রুট৷ এই পথ দিয়ে বার্ষিক ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়৷ যার ফলে শুধুমাত্র ক্ষুদ্র প্রতিবেশী অঞ্চলগুলির উপর নয়, একাধিক দেশগুলির উপরও এই সামুদ্রিক বাণিজ্য রুটের প্রভাব রয়েছে৷ এছাড়া পূর্ব চিন সাগরে চিনের দাবিতেও ঝামেলায় পড়েছে আমেরিকা। উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে চিনের ইয়েলো সমুদ্র ও পূর্ব চিন সমুদ্রের অর্থনৈতিক জোনগুলি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ তার উপরে চিন জাপানের সেনকাকু বা ডিয়াওইউ দ্বীপগুলির উপর কর্তৃত্ব দাবি করে৷ এই এলাকার মাধ্যমে আন্তঃঅঞ্চল ও বিশ্ব বাণিজ্য হয়৷ যার ফলে চিনের এই এলাকার উপর কর্তৃত্ব দাবি একাধিক দেশের উপর প্রভাব ফেলছে।
লাদাখে শান্তির গ্যারান্টি নেই! ভারত-চিন আলোচনার মাঝেই কোন ইঙ্গিত রাজনাথের