For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাওয়ালি কনসার্ট ভণ্ডুল কি দেশে ‘ক্যানসেল কালচারে’র নতুন রূপ?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাওয়ালি কনসার্ট ভণ্ডুল কি দেশে ‘ক্যানসেল কালচারে’র নতুন রূপ?

  • By Bbc Bengali

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বুধবার সন্ধ্যায় কাওয়ালি কনসার্টে হামলা চালিয়ে অনুষ্ঠান ভণ্ডুল করার পর, কনসার্ট আয়োজকেরা একই জায়গায় বৃহস্পতিবার প্রতিবাদী কনসার্ট করেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত একটি কাওয়ালি কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন।

যেহেতু এর আগে কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কাওয়ালি গানের আসর বা কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়নি, ফলে শুরু থেকেই অনুষ্ঠানটি ঘিরে আগ্রহ ছিল মানুষের মনে।

সামাজিক মাধ্যমে কয়েকদিন যাবত এ আয়োজনের পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরণের আলোচনাও চলছিল।

আরো পড়তে পারেন:

এখন হামলা হবার পর সে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বেশ সমালোচনা মুখর হয়েছেন।

প্রশ্ন উঠছে কেন হলো এই হামলা?

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ

কনসার্টের মত একটি নির্দোষ অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর কারণ নিয়ে নানা রকম আলোচনা চলছে।

এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে অন্যতম কারণ বলে মনে করেন কেউ কেউ।

কারণ, হামলার জন্য অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর:

বুধবার রাতে হামলার পর আয়োজকেরা অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে।

কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন হামলা চালানো কিংবা বাধা সৃষ্টি এবং হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, পুলিশ এবং বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে কথা বলার পর জানা যাচ্ছে যে কাওয়ালি আয়োজকদের কয়েকজন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার রক্ষা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত।

কোটা-বাতিল আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি এ প্ল্যাটফর্মের নেতাকর্মীদের সাথে ছাত্রলীগকে এর আগে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্য বিবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।

সেই বিরোধের সূত্র ধরে বুধবারের হামলা হতে পারে বলে মনে করেন কেউ কেউ।

যদিও কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ বিষয়টি স্বীকার করেননি।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর বুধবার রাতে বলেছিলেন, অনুষ্ঠানটি করার অনুমতি আগেই দেয়া হয়েছিল, কিন্তু বুধবার দুপুরে ছাত্রদের একটি অংশ এসে তার কাছে অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি করেছিল।

ওই ছাত্ররা কারা সে সম্পর্কে তিনি পরিষ্কার জবাব দেননি।

ভিন্নমত নাকচ বা 'ক্যানসেল কালচারে'র নতুন রূপ?

কাওয়ালি মূলত এক ধরণের আধ্যাত্মিক ভক্তিমূলক গান। সাধারণত উর্দু ভাষায় গাওয়া হলেও বাংলা এবং হিন্দিতেও কাওয়ালি গাওয়া হয়।

এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছিল কয়েকদিন ধরেই।

কাওয়ালি বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা এমন প্রশ্নও তুলেছিলেন কেউ কেউ ফেসবুকে।

কাওয়ালি কনসার্টে হামলার সাথে এসব প্রশ্নের যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন মনে করেন, এটা ভিন্নতর সংস্কৃতিকে নাকচ করে দেয়ার সংস্কৃতি।

একে 'ক্যানসেল কালচারের' নমুনা বলে বর্ণনা করেন তিনি।

'ক্যানসেল কালচার' মানে হচ্ছে, যা আমার মত নয়, বা আমার মতের সঙ্গে যা মিলছে না, সেটিকে নাকচ করে দেয়া, ক্ষেত্রে বিশেষে ঠেকিয়ে দেয়া।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভিন্নমতের ব্যাপারে এক ধরণের অসহিষ্ণুতা দেখা গেছে।

অধ্যাপক নাসরিন বলেন, "কোন দল বা গোষ্ঠী মনে করতে পারে আমি যেভাবে সংস্কৃতিকে দেখি, আমার কাছে সংস্কৃতির যে বোধ, এটি তার সঙ্গে যায় না, তাহলে সেটি এখানে চলতে পারে না।"

অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন
BBC
অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন

"কোন কারণ বলা হলো না, কিন্তু একটি অনুষ্ঠান ভণ্ডুল করে দেয়া হলো জোরপূর্বক-ভাবে। নিজের থেকে ভিন্ন কিছুকে নাকচ করে দেয়ার প্রবণতা থেকে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে আমার মনে হয়।"

তিনি বলছেন, অতীতে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর ক্ষেত্রে এরকম প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কোন অনুষ্ঠানের ওপর হামলা করার ঘটনা তেমন দেখা যায় না। এই কনসার্টের জন্য আগে থেকে প্রশাসন অনুমতি দিয়েছিল আয়োজনের, কিন্তু অনুষ্ঠানের দিনের আগে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোন বিরোধিতা দেখা যায়নি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মুক্ত পরিবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন অনেক সময়ই সরকার দলীয়দের অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে, এ কারণেও সেগুলো বন্ধের চেষ্টা দেখা যায় অনেক জায়গাতেই।

বামপন্থী একটি ছাত্র সংগঠনের সাবেক সভাপতি এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফিরোজ আহমেদ মনে করেন, ক্ষমতাসীন দলের ক্ষেত্রে যখনই জনগণের মধ্য থেকে তারা নৈতিক সমর্থন পায় না, যখন কোন আয়োজনে তাদের গুরুত্ব দেয়া হয় না, তখনই তারা নানা ধরণের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার শুরু করে।

তিনি এ হামলার ঘটনাকে 'উগ্র জাতীয়তাবাদী' আচরণ বলে অভিহিত করেছেন।

"উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অনুসারী যারা তাদের মুখের অস্ত্র হয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর কাজ করে পেশী শক্তির মাধ্যমে," তিনি বলেন।

এদিকে, কাওয়ালি কনসার্টে হামলার ঘটনার নিন্দা করে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে অনেক সংস্কৃতি কর্মীকে।

কিন্তু বিবিসির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তারা বিবিসির কাছে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

English summary
Chaos in Kawali programme of Dhaka university
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X