ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট ব্রিটিশ পার্লামেন্টের, বরিসের ব্রেক্সিট প্রতিশ্রুতি পূরণ সময়ের অপেক্ষা মাত্র
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়ে দীর্ঘ দিনের অনিশ্চয়তা ও টালবাহানা শেষ করলেন ব্রিটিশ সাংসদরা। ব্রিটেনের 'হাউজ অফ কমনস'-এ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ব্রেক্সিট প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ৩৩০টি। ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৩১টি। এরপর হাউজ অফ লর্ডস-এ ব্রেক্সিট প্রস্তাব পাশ হলেই আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আইনে পরিণত হয়ে যাবে এটি।
এর আগে বারবার পিছিয়ে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে গ্রেট ব্রিটেনের বিচ্ছেদের দিনক্ষণ। গতবছর বরিস জনসন জানান, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি কার্যকর করা হবে ব্রেক্সিট। মোট তিন দফা পিছিয়ে গেল ইইউ জোট থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা।
'বাঁচি বা মরি ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করব' এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথমবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন। কিন্তু পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা বেন অ্যাক্ট আইনের কারণে ইইউ-র কাছে বিচ্ছেদের দিনক্ষণ তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানাতে বাধ্য হন বরিস।
২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ জোট থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেয়। বিচ্ছেদের প্রকৃত তারিখ ছিল চলতি বছরের ২৯ মার্চ। কিন্তু ব্রিটেনের পার্লামেন্ট থেরেসা মে-র নেতৃত্বাধন সরকারের সম্পাদিত বিচ্ছেদ চুক্তিতে অনুমোদন দেয়নি। আবার চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকরেরও বিরোধিতা করে বিরোধিরা। ব্রিটিশ সরকার ও পার্লামেন্টের এমন বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে আটকে যায় বিচ্ছেদ। এরপর প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন থেরেসা। ব্রেক্সিট কার্যকরী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গঠন করেন বরিস জনসন। এরপরও পিছিয়ে ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ। বরিস জনসন বিচ্ছেদ কার্যকরে নতুন একটি চুক্তিতে সম্মত হন। সংখ্যাগরিষ্ঠতাবিহীন প্রধানমন্ত্রী বরিস ৩১ অক্টোবরের আগে চুক্তিতে পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে সায় দেয়নি পার্লামেন্ট।
এরপরেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা করেন বরিস। ১২ ডিসেম্বরের সেই নির্বাচন জিতে শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন বরিস। আর এবার ব্রেক্সিট কার্যকর করা কেবল মাত্র সময়ের অপেক্ষা।