৪৮ ঘণ্টায় ৫০ মন্ত্রীর পদত্যাগ, ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রীর গদি ছাড়ছেন বরিস জনসন
বরিস জনসনের পতন যে ঘনিয়ে এসেছে তা অনেকদিন আগে থেকেই মালুম হচ্ছিল। মাস খানেক আগে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে নিজের পদের জন্য আস্থা ভোট সংগ্রহ করতে হয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যে পদত্যাগ করেন ট্রেজারি প্রধান ঋষি সুনক এবং স্বাস্থ্য সচিব সাজিদ জাভিদ। পদত্যাগ করেন সদ্য নিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রীও।
এরপরেই বিষয়টি আরও ঘোরালো হয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার তা একদম স্পষ্ট হয়ে গেল। জনসন নিজেই জানিয়ে দিলেন যে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি। বরিস জনসন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতার পদও ছাড়বেন বলে জানা গিয়েছে।
৫০ জনের বেশি মন্ত্রী ৪৮ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে ব্রিটেন সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা বলেছেন যে একাধিক কেলেঙ্কারিটে জড়িত জনসন। এরপরেও তিনি দায়িত্বে থাকার উপযুক্ত নন। তাঁর দল, কনজারভেটিভ পার্টির কয়েক ডজন প্রকাশ্য বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন বলে খবর মিলেছে। এসব চাপের মুখে পড়ে তিনি নিজেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই বছরের অক্টোবরে কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে একজন নতুন নেতা নিযুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত জনসন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন। কয়েকদিন ধরে তার চেয়ার বেশ টলমল করছিল। নিজের গদি বাঁচাবার প্রচুর চেষ্টা করেন। কিন্তু জনসনকে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া সকলেই তাঁর সঙ্গ ছেড়ে চলে যান। ফলে পতন ঘন্টা বেজে যায় তাঁর।
জনসন যখন ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসেন। তখন দেখা গিয়েছিল যে, তিনি ব্রিটেনের এমন কিছু অংশে ভোট পেয়েছেন যা আগে কখনও তার কনজারভেটিভ পার্টি পায়নি। তারপরেঅ রক্ষা হল না। আসলে তাঁর দলের লোকেরাই তাঁকে চাইছেন না। তার অর্থমন্ত্রী, নাদিম জাহাভি, যিনি শুধুমাত্র বুধবার এই পদে যোগ দিয়েছিলেন, তিনিও জনসনকে পদত্যাগ করার কথা বলেছেন। এর পরপরই, নবনিযুক্ত শিক্ষা সচিব মিশেল ডোনেলান পদত্যাগ করেন, বলেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সরে যাওয়ার জন্য "অনুরোধ" করেছেন।
২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি উঁচু পদ পেয়েছিলেন। ১ জুলাই, ব্রিটেন সরকার দাবি করে যে জনসন পিনচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। কিন্তু একজন মুখপাত্র পরে বলেন করেছেন যে এটি সম্পূর্ণ সত্য নয় এবং প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ সম্পর্কে জানতেন। মঙ্গলবার, সাইমন ম্যাকডোনাল্ড, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ব্রিটেনের বিদেশ দফতরের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা বলার জন্য অভিযুক্ত করেন।
শীঘ্রই, জনসন এমপি ক্রিস পিনচারের বিরুদ্ধে পূর্বের অসদাচরণের অভিযোগ সম্পর্কে কী জানতেন তা ব্যাখ্যা করার জন্য চাপের মুখে পড়ে যান। সেই শুরু, পরে আরও নানা সমস্যায় জড়িয়ে যান তিনি।যখন ট্রেজারি প্রধান ঋষি সুনক এবং স্বাস্থ্য সচিব সাজিদ জাভিদ সরকার থেকে পদত্যাগ করেন , তখন জনসন স্বীকার করতে বাধ্য হন যে তিনি পিনচারের ঘটনা লোকাতে তিনি না মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন।