কোনও ভাষা নেই, শিস দিয়ে কথা বলেন এই গ্রামের বাসিন্দারা, কোথায় জানেন এমন জায়গা
এমন গ্রামও বিশ্বে রয়েছে যেখানে সকলে কথা বলেন শিস দিয়ে, পাখির মতো কিচির-মিচির করে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ নানা ভাষায় কথা বলেন। প্রান্তিক আদিবাসীরাও নিজেদের মধ্যে কথা বলে ভাষার আদান-প্রদান করেই। তবে এমন গ্রামও বিশ্বে রয়েছে যেখানে সকলে কথা বলেন শিস দিয়ে, পাখির মতো কিচির-মিচির করে। আজব মনে হলেও এমনটা সত্যি।
[আরও পড়ুন:বিশ্বের একমাত্র মহিলা পরিচালিত বাজার রয়েছে ভারতেই, পুরুষরা এখানে শুধুই ক্রেতা]
তুরস্কে গিরেসান প্রদেশে কানাকি জেলায় কুসকয় নামে এক গ্রামের মানুষরা পাখির মতো আওয়াজ করে নিজেদের ভাব ব্যক্ত করেন। সেগ্রামে কথা বলার কোনও ভাষা নেই। উত্তর তুরস্কের এই গ্রামের জ্ঞাপন ক্রিয়া ইতিমধ্যে ইউনেস্কোর হেরিটেড তালিকায় স্থান পেয়ে গিয়েছে।
এই ভাবের আদান-প্রদানকে ইউনেস্কো বলছে 'বার্ড ল্যাঙ্গোয়েজ'। বিলুপ্তপ্রায় এই ঐতিহ্যকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই এলাকায় ১০ হাজার মানুষ এমন উপায়ে ভাবের আদান-প্রদান করেন। উচ্চ তরাই অঞ্চলে পাহাড়ের আড়ালে একে-অন্যকে না দেখেই শিস দিয়ে ভাবের আদান-প্রদান করেন এখানকার মানুষ।
বলা হচ্ছে, প্রায় ৫০০ বছর ধরে এভাবেই ভাবপ্রকাশ করে আসছেন এই জনজাতি। তবে গত ৫০ বছরে সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাষা বা ভাব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
একেরপর এক প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে এভাবেই চলে আসছে। তবে প্রযুক্তির ফাঁদ যেমন রয়েছে, তেমনই আগে যারা শিস দিয়ে ভাবের আদানপ্রদান করতেন, সেই প্রজন্ম বুড়িয়ে গিয়েছে। তাদের জিহ্বা, আঙুল, দাঁতের জোর কমে গিয়েছে। আর নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তির নাগপাশে আটক। যার ফলে এই অদ্ভুত ভাবের ব্যবহার বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
এলাকার প্রধান মুহতার বলেছেন, প্রযুক্তি থাবা বসালেও আমরা আমাদের ঐতিহ্য বজায় রাখার চেষ্টা করে চলেছি। গ্রামের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষ এখনও শিস দিয়ে ভাব প্রকাশ করেন। ইউনেস্কো 'বার্ড ল্যাঙ্গোয়েজ'-কে মান্যতা দেওয়ায় খুশি গ্রামবাসীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিস দেওয়া ভাষার ব্যবহার বিভিন্ন সময়ে স্পেন, মেক্সিকো ও গ্রিসে দেখা গিয়েছে। তবে তুরস্কে যেটা চলছে তা গুনমানে অনেক উন্নত। ৪০০টির বেশি শব্দ বা বাক্যবন্ধনী রয়েছে এতে। স্থানীয় স্কুলে এর শিক্ষাদান শুরু হয়েছে যাতে এটিকে বাঁচিয়ে রাখা যায়।
[আরও পড়ুন:বিয়ারের আস্ত সুইমিংপুল খুলল ইউরোপের এই দেশে ]