For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বিডিআর বিদ্রোহ: ১২ বছরে কোন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি

তিন বছর আগে হাইকোর্টে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। অন্যদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটি ঝুলে আছে নিম্ন আদালতে।

  • By Bbc Bengali

বিদ্রোহের ওই ঘটনায় ৫৭জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জন মারা যান
Getty Images
বিদ্রোহের ওই ঘটনায় ৫৭জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জন মারা যান

পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুটো ফৌজদারি মামলা দায়ের হলেও গত ১২ বছরে একটিরও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবার পর সেটি এখন সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। অন্যদিকে বিস্ফোরক মামলা এখনো আটকে আছে নিম্ন আদালতে। এখনও ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

২০১৩ সালে নিম্ন আদালতের রায়ের পর তিন বছর আগে হাইকোর্টেও হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু আপিল বিভাগে শুনানি শুরু না হওয়ায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত।

নিম্ন আদালতে হত্যা মামলার রায়:

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।

এই ঘটনার চার বছর পর ২০১৩ সালের ৫ই নভেম্বর নিম্ন আদালত হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করে।

এই হত্যা মামলার মোট আসামির সংখ্যা ছিল ৮৫০ জন।

নিম্ন আদালতের রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এছাড়া ২৫৬ জনকে ১৭ থেকে ১ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মামলায় খালাস পেয়েছেন ২৭৮ জন।

বাকি ৪ আসামী নিম্ন আদালতে রায় ঘোষণার আগেই মারা যান। এছাড়া রায় ঘোষণার পরে মারা যান আরও ১১জন।

আরও পড়তে পারেন:

'এডিসি বললো,স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে'

'জওয়ানরা উল্লাস করছিল কে কতজনকে মেরেছে'

'পিলখানায় গিয়ে দেখি অস্ত্র গোলাবারুদ ছড়িয়ে আছে'

বাহিনীটির নিজস্ব আইনে চারহাজারের বেশি জওয়ানের সাজা হয়েছে।
Getty Images
বাহিনীটির নিজস্ব আইনে চারহাজারের বেশি জওয়ানের সাজা হয়েছে।

হাইকোর্টে মামলার রায়:

১৫ জনের মৃত্যুর কারণে উচ্চ আদালতে মোট ৮৩৫ আসামীর শুনানি শুরু হয়।

৩৭০ কার্য দিবস শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭শে নভেম্বর রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

সেখানে মোট ৫৫২ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। খালাস দেয়া হয় ২৮৩ জনকে।

নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জন আসামীর মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে হাইকোর্ট। ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন প্রদান করা হয় এবং ৫ জন খালাস পান।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম এত বেশি সংখ্যক আসামির সাজা হাইকোর্টে অনুমোদন হয়।

নিম্ন আদালতে ১৬০ জন যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীর মধ্যে হাইকোর্ট ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখে এবং ১৪ জনকে খালাস দেয়।

তবে নিম্ন আদালতে যাদেরকে খালাস দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ৬৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে হাইকোর্ট ৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

৪ জনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩৪ জনের খালাস আদেশ বহাল রাখে।

সে হিসেবে হাইকোর্টে মোট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ১৮৫ জনকে।

এছাড়া ২২৮ জনকে ১৩ থেকে ১ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

আইন।
Getty Images
আইন।

চূড়ান্ত নিষ্পত্তি থমকে আছে

হাইকোর্টের এই রায়ের পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সর্বোচ্চ আদালতে এখনও আপিল শুনানি শুরু করা যায়নি।

ফলে মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিষয়টি থমকে আছে।

মূলত, হাইকোর্টের রায়ে খালাস ও সাজা কম পাওয়া মোট ৮৩ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়ে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ ধরনের আপিলের সংখ্যা ২০টি।

অন্যদিকে, মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া দুই শতাধিক আসামি খালাস চেয়ে আপিল করেছেন। এ ধরনের আপিলের সংখ্যা ৪৭টি।

সব মিলিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের ৬৭টি আপিল ও লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছে। যা এখন চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।

তবে একে দীর্ঘসূত্রিতা বলতে চান না সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

তার মতে,বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো বড় সংখ্যক আসামী নিয়ে কোন আইন এতো দ্রুত নিষ্পত্তি হয়নি। এটি অনেক বড় কাজ। সে হিসেবে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে খুব অল্প সময়ে রায় ঘোষণা হয়েছে।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলেও বিচারিক প্রক্রিয়ার নানা জটিলতার কারণে আপিল শুনানি শুরু হতে দেরি হচ্ছে বলে আইনজীবীরা জানান।

সংবিধান অনুযায়ী রায়ের কপি পাওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে আপিল করার বিধান রয়েছে।

আপিলের সময় পেরিয়ে গেলেও কারণ দেখিয়ে ও জরিমানা দিয়ে আপিলের সুযোগ রয়েছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

সব আপিল দায়ের সম্পন্ন হলে দুইপক্ষ সার সংক্ষেপ জমা দেবে। এরপর আপিল শুনানির জন্য তৈরি হবে। এভাবেই বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হবে। এরপর রিভিউ আবেদন করারও সুযোগ থাকবে। যা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

মি রায় বলেন "এসব আপিল শুনানি করে যদি সুপ্রিম কোর্ট মনে করে যে, হাইকোর্টের ভুল আছে তাহলে সেই ভুলগুলো সংশোধন করবে, তখন আইনজীবীরা তাদের আপিল নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাবেন। পুরো বিষয়টি সময়সাপেক্ষ।"

মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহতদের স্মরণ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালের দৃশ্য
Getty Images
মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহতদের স্মরণ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালের দৃশ্য

বিস্ফোরক মামলা ঝুলে আছে

এদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটির বিচারকাজ ২০১১ সালে শুরু হলেও এখনও ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আটকে আছে।

পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৩ ও ২৪শে মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে।

মোট সাক্ষীর সংখ্যা ১৩৪৫ জন জন হলেও এ পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে মাত্র ১৮৫ জনের।

মামলার মোট আসামির ৮৩৪ জন। এরমধ্যে ২৪ জন মারা গেছেন এবং পলাতক আছেন ২০ জন।

দুটি মামলার একই আসামী হওয়ায়, তাদের নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রতি মাসে দুই থেকে তিন দিন মামলার কার্যক্রম চালানো হয়।

এভাবে ধীর গতিতে এই মামলার কার্যক্রম চলতে থাকায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তি কবে হতে পারে সেটা এখনও অনিশ্চিত।

হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা এই বিস্ফোরক মামলার আসামি হওয়ায় তাদেরকে মুক্তি দেয়া যাচ্ছে না।

বিজিবির নতুন লোগো, ডানে বিডিআর এর পুরাতন লোগো
BBC
বিজিবির নতুন লোগো, ডানে বিডিআর এর পুরাতন লোগো

তবে বিশ্বজিৎ রায় বলছেন, বিস্ফোরক মামলায় আসামী সংখ্যা অনেক বেশি হলেও প্রসিকিউশন যদি মনে করে তার সবার সাক্ষ্য গ্রহণের দরকার নাই। অল্প কয়েকজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে মামলা প্রমাণ করা সম্ভব। তাহলে তারা সবার সাক্ষ্য ছাড়াই রায় ঘোষণা করতে পারেন।

সাক্ষ্যদের সাক্ষ্য নিতে পদ্ধতিগত বাঁধা থাকলেও আন্তরিকতার অভাব নেই বলে তিনি জানান।

English summary
BDR mutiny: No case has been finalized in 12 years
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X