নিজে সুস্থ থেকে মারণ রোগ মের্স–করোনা ভাইরাস বহন করছে বাদুড়, জানুন কিভাবে
নিজে সুস্থ থেকে মারণ রোগ মের্স–করোনা ভাইরাস বহন করছে বাদুড়, জানুন কিভাবে
করোনা ভাইরাস যেভাবে গোটা বিশ্বে থাবা বসিয়েছে তাতে বিশ্ববাসীর পরিস্থিতি খুবই খারাপ। বিজ্ঞানীরা আগেই প্রমাণ করে দিয়েছে যে এই ভাইরাসের উৎস বাদুড় এবং এই প্রাণী কিভাবে নিজে অসুস্থ না হয়ে এই মের্স করোনা ভাইরাস বহন করে। বিজ্ঞানীরা এর ওপরও আলোকপাত করেছেন যে করোনা ভাইরাস কিভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।
বাদুড়ের কোনও ক্ষতি করে না করোনা ভাইরাস
এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, মধ্য প্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম ভাইরাস, যা মের্স নামে পরিচিত, সেটির সঙ্গে মিল পাওয়া যায় করোনা ভাইরাসের। কোভিড-১৯-এর কারণে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, যা আসলে বাদুড় থেকে এসেছিল। একদিকে যখন এই মারণ ভাইরাসের জন্য মানুষের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হচ্ছে, এমনকী মারাও যাচ্ছে অথচ এই ভাইরাস বাদুড়ের কোনও ক্ষতি করতে পারছে না।
বাদুড় এই ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে পারে না
কানাডার ইউসাসক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকর তথা মাইক্রোবায়লজিস্ট বিক্রম মিশ্র বলেছেন, ‘বাদুড় এই ভাইরাস থেকে কখনই মুক্ত হতে পারে না এবং তাই এখনও পর্যন্ত তারা অসুস্থ হয়নি। আমরা বুঝতে চাইছি যে এই মের্স ভাইরাস মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বন্ধ করে দেয় সেটা বাদুড়ের ক্ষেত্রে কেন হয় না।' এই সমীক্ষায় বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে কয়েক মাসেই মধ্যেই কীট-পতঙ্গ খাওয়া বাদামি রঙের বাদুড়ের শরীরের কোষ অনবরত সংক্রমিত হয় মার্স করোনা ভাইরাসে। গুরুত্বপূর্ণ অভিযোজনের কারণে বাদুড় ও ভাইরাস একসঙ্গে কাজ করে। তিনি বলেন, ‘বাদুড়ের কোষগুলি মারার পরিবর্তে এই ভাইরাস মানুষের কোষগুলিকে মারে, বাদুড়ের সঙ্গে মের্স করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, যা দেখভাল করে চলেছে বাদুড়ের বিরল দারুণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।' একইভাবে কাজ করে সার্স-কোভ-২, মনে করেন গবেষকরা।
অন্য প্রজাতির প্রাণীও করোনা ছড়াতে পারে
গবেষকরা মনে করছেন, বাদুড়ের ওপর চাপ সৃষ্টি না করে বরং অন্য প্রজাতির প্রাণীরাও করোনা ভাইরাস রোগ ছড়াতে পারে। মিশ্র বলেন, ‘যখন কোনও বাদুড় তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতাতে চাপ অনুভব করে, তখন এটি এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা-ভাইরাসের ভারসাম্যকে ব্যাহত করে এবং ভাইরাসটিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।' এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা এর আগে মের্সের সম্ভাব্য চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন এবং বর্তমানে তাঁরা কোভিড-১৯ প্রতিষেধকের ওপর কাজ করছেন।
মের্স ও কোভিড–১৯ সহজেই অজানা পরিবেশে খাপ খেয়ে যায়
গবেষকদের মতে, মের্স-কোভের মধ্যবর্তী মাধ্যম হল যেমন হল উট তেমনি বাদুড়দের পূর্বপুরুষরা এই করোনা ভাইরাসের বাহককারী ছিল। এখনও পর্যন্ত সার্স-কোভ-২ বা মের্সের কোনও প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। ইউসাকের বিজ্ঞানী ডারিয়াল ফালজারানো বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে মের্স করোনা ভাইরাস খুব দ্রুত নিজেকে অজানা পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং যে কারণে আমরা বুঝতেই পারিনি কি হতে চলেছে, এটি প্রমাণ করে যে করোনা ভাইরাসগুলি সহজেই অনায়াসে প্রজাতি থেকে প্রজাতিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে সক্ষম হয়।' মিশ্রার মতে, করোনা ভাইরাস তাদের সংক্রমিত প্রজাতির সঙ্গে খাপ খেয়ে যায়। ভবিষ্যতে গবেষকরা গবেষণায় বুঝতে সক্ষম হবেন যে বাদুড় বাহিত মের্স ভাইরাস কীভাবে মানব কোষে সংক্রমণ এবং প্রতিরূপের সঙ্গে খাপ খায়।
কী বিষাক্ত গ্যাস ছড়াচ্ছে বিশাখাপত্তনমের কারখানা থেকে? কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে এই গ্যাস থেকে