For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

অবৈধ অভিবাসন: লিবিয়ার উপকূলে আটক বাংলাদেশিদের অর্ধেকই ফেরত আসতে চান না

  • By Bbc Bengali

মিসরাটা থেকে আটককৃতদের কয়েকজন।
Getty Images
মিসরাটা থেকে আটককৃতদের কয়েকজন।

লিবিয়ার উপকূল এবং দেশটির মিসরাটা শহর থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার সময় ৫২৮ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে ত্রিপলির ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে।

লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান জানিয়েছেন তাদেরকে এখন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

লিবিয়ার উপকুল হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন এরকম ছয়শ জনকে ২৩ এপ্রিল উদ্ধার করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।

এস এম শামীম উজ জামান জানিয়েছেন, "তাদেরকে গত পরশু ত্রিপলির তারিক আল মাতার নামে একটা ডিটেনশন সেন্টারে এনে রাখা হয়েছে। গতকাল দূতাবাস থেকে একটা দল সেখানে গিয়েছিল। আমরা এপর্যন্ত চারশো জনের সাথে সাক্ষাত করেছি। এর মধ্যে আনুমানিক দুইশ চুয়াল্লিশ জন দেশে ফেরত যাওয়ার অভিপ্রায় জানিয়েছে। তাদেরকে ফেরত আনতে আইওএম ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে যোগাযোগ করছি।"

আটককৃতদের ত্রিপলির একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে।
Getty Images
আটককৃতদের ত্রিপলির একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে।

মি. জামান জানিয়েছেন এই বাংলাদেশিদের বেশিরভাগের বয়স কুড়ি থেকে বাইশ বছর। এদের মধ্যে যারা বাংলাদেশে ফিরে আসতে চান না, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের নিয়ম অনুযায়ী জোর করে ফেরত পাঠাতে পারে না। বাংলাদেশি দূতাবাস কর্মকর্তারা তাই তাদের এখন বুঝিয়ে সম্মত করার চেষ্টা করছেন।

যেভাবে ইউরোপে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা

অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার জন্য রুট হয়ে উঠেছে যেসব দেশ, লিবিয়া তার একটি। সাধারণত ইতালি এবং গ্রীস উপকুল থাকে প্রথম গন্তব্য। সেখান থেকে পরে অপেক্ষাকৃত ধনী দেশগুলোতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন এই মানুষগুলো।

উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের দেয়া তথ্য মতে বিশ্বের যেসব দেশের নাগরিকেরা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশের চেষ্টা করেন তার মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান এখন তৃতীয় এবং গত এক বছরে এরকম সাড়ে নয় হাজার বাংলাদেশি আটক হয়েছেন।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান জানিয়েছেন তাদের গবেষণা বলছে বাংলাদেশের তিনটি অঞ্চল থেকে এমন যাত্রার প্রবণতা বেশি।

লিবিয়ায় কীভাবে হত্যা করা হলো ২৬ জন বাংলাদেশিকে?

ইউরোপে যাওয়ার সময় শীতে জমে সাতজন বাংলাদেশির মৃত্যু

কেন এবং কীভাবে বাংলাদেশি অভিবাসীদের গন্তব্য হয়ে উঠলো লিবিয়া?

সাধারণত ইতালি এবং গ্রীস উপকুল থাকে প্রথম গন্তব্য।
Getty Images
সাধারণত ইতালি এবং গ্রীস উপকুল থাকে প্রথম গন্তব্য।

বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের শরিয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা বেশি।

শরিফুল হাসান বলছিলেন, ইউরোপ যাওয়ার জন্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত আরব দেশ এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থায় থাকা আফ্রিকার দেশের নাগরিকদের সাথে বাংলাদেশিরা সেই সুদূর লিবিয়ায় যুক্ত হচ্ছেন।

"মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে যুদ্ধ চলছে বা আফ্রিকার যেসব দেশ চরম দারিদ্র পীড়িত- যেমন সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান বা সুদানের মতো দেশ থেকে মানুষজন জীবন বাঁচাতে উদ্বাস্তু হিসেবে এইভাবে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে, তাদের দলে বাংলাদেশিরা ঢুকে যায়।

"যেহেতু বাংলাদেশিরা যেতে চায় তাই তাদের সাথে আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্র একটা যোগসূত্র তৈরি করে। দেশের যে অঞ্চল থেকে বেশি যায় সেখানে এক ধরনের মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি হয়, তারা আন্তর্জাতিক চক্রের সাথে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়।"

রোমানিয়া, সার্বিয়ার মত দেশ কি অবৈধভাবে ইউরোপে ঢোকার নতুন রুট?

অভিবাসী শ্রমিক: নতুন কোন দেশে বাংলাদেশে কর্মীদের সুযোগ রয়েছে

যে সাতটি দেশে এখন বাংলাদেশি কর্মীরা সবচেয়ে বেশি যায়

নৌকা
Getty Images
নৌকা

তিনি বলছেন ইদানীং দুবাই হয়ে যাওয়ার একটা চেষ্টা তারা দেখতে পাচ্ছেন। কাছাকাছি সময়ে ইউরোপে ঢোকার পথে আটক হয়েছেন তাদের অনেকেই ভিজিট ভিসায় দুবাই গেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

মৃত্যুতেও কমছে না আগ্রহ

ঝুঁকিপূর্ণ এসব যাত্রায় বিভিন্ন সময় নৌকা ডুবিতে মৃত্যু ও মানব পাচারকারীদের হাতে জিম্মি হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এবছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার সময় শীতে জমে সাতজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।

২০২০ সালে ২৮ মে লিবিয়ার প্রত্যন্ত মিজদা অঞ্চলে মানব পাচারকারীদের কাছ থেকে অপহরণের শিকার হন ৩৮ জন বাংলাদেশি। পরে অপহরণকারীদের গুলিতে ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হন। আহত হন আরও ১১ জন।

কিন্তু তারপরও কেন বাংলাদেশিরা এতটা মরিয়া? শরিফুল হাসান বলছেন, "ইউরোপে থাকা তাদের আত্মীয় স্বজনরাই তাদের পথ দেখাচ্ছেন। যারা যাচ্ছেন তাদের পরিবার ও স্বজনেরা জানে, তারাই যাওয়ার জন্য টাকাটা দেয়। এদের কাউকে আমরা দরিদ্র মনে করছি না। কারণ তারা যাওয়ার জন্য পাঁচ থেকে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করছেন।"

"যতক্ষণ পর্যন্ত এই মানুষগুলো না বুঝবে যে এইভাবে যাওয়া নিরাপদ নয়, মৃত্যু হতে পারে, গ্রেফতার হতে পারে ততক্ষণ পর্যন্ত সংকটের সমাধান নেই। এই যে একটা ধারণা যে বিদেশে যেতে পারলেই সফলতা, অভিবাসনের এই দিকটা সম্পর্কে চিন্তা করার সময় এসেছে।"

তিনি আরও বলছেন, কোন একটা নৌকাডুবিতে ভূমধ্যসাগরে যখন বাংলাদেশিদের মৃত্যু হয়, শুধু তখনই বাংলাদেশের ভেতরে মানব পাচারকারী ও দালালদের বিরুদ্ধে অভিযানের প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু সারা বছর জুড়েই এই অভিযান চালানো দরকার।

English summary
Bangladeshis struck in libya shore don't want to come back
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X