'ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার মতো পরিস্থিতি হবে না গ্রামে'
'ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার মতো পরিস্থিতি হবে না গ্রামে'
ডেঙ্গু আতঙ্কের মধ্যেই ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সুযোগে ঢাকার বাইরে মারাত্মক আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার তেমন আশঙ্কা নেই।
রোগতত্ত্ব, রোগ-নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, "ঢাকায় থাকে এডিস অ্যাজিপ্টি। ঢাকার বাইরে থাকে এডিস অ্যালবোপিক্টাস। অ্যাজিপ্টি যত বেশি মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে, অ্যালবোপিক্টাসের এই রেটটা অনেক কম।"
তিনি বলেন, "গ্রামে যেহেতু অ্যালবোপিক্টাস বেশি থাকে তাই, সেক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ হলেও সেটা এতো দ্রুত হবে না যেটা ঢাকায় হয়েছে। সুতরাং সে হিসেবে ইনফেকশনের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে ঢাকার বাইরে কম হবে। তাই ঢাকার বাইরে আমরা ঢাকার মতো ডেঙ্গু অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছি না।"
আরো পড়তে পারেন:
ডেঙ্গু বিস্তারে নির্মাণাধীন ভবন,উন্নয়ন প্রকল্প দায়ী কতটা?
শ্রীনগরে হাজার লোকের বিক্ষোভের ছবি বিবিসির হাতে
ব্রিটেনে ১৫ মিনিট বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের যে প্রভাব পড়েছে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, চলতি মাসের এ কয়েক দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।
ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে রোগতত্ব, রোগ-নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট।
তবে কেউ এডিস মশার কামড়ে সংক্রমিত হওয়ার পরও জ্বর না আসলে তার মধ্যে ডেঙ্গু সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এছাড়া এমন অবস্থায় ওই ব্যক্তি বুঝতেও পারেন না যে তিনি ডেঙ্গু আক্রান্ত কি না।
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, "এক্ষেত্রে কারো যদি বাড়িতে যাওয়ার পর বা ঢাকার বাইরে চলে যাওয়ার পর জ্বর হয়, তাহলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং ডেঙ্গু নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে তাকে সবসময় মশারি ব্যবহার করতে হবে।"
ঈদের এই মৌসুমে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ কিছু পদক্ষেপের কথা জানানো হয়।
যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দেয়া।
রোগ-নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. ফ্লোরা বলেন, "প্রথমত, মশা যাতে বংশবৃদ্ধি করার মতো কোন পরিবেশ না পায় তার জন্য সচেতনতা জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।"
দ্বিতীয় হচ্ছে, যদি কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় তার চিকিৎসা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।।
তৃতীয়, ডেঙ্গুর ডায়াগনোসিসের জন্য ঢাকা থেকে কিট সরবরাহ করা হয়েছে উপজেলা পর্যন্ত।
"ডেঙ্গুর কোন চিকিৎসা নেই। বেশিটাই হচ্ছে সিম্পটোমেটিক ট্রিটমেন্ট। তো উপজেলা লেভেল, জেলা লেভেল এবং ঢাকার বাইরে যেসব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো আছে সেগুলোকেও আপডেট করেছি ডেঙ্গু কিট সাপ্লাই এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে," তিনি বলেন।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকাতেই পশু বিক্রি করতে ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন হাজারো মানুষ।
তাদের মধ্যে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কি ধরণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে ডা. ফ্লোরা বলেন, সচেতনতার বার্তা যে সব জায়গায় দেয়া হয়েছে যার মধ্যে গরুর হাটও রয়েছে।
"ডেঙ্গুর মশা বা এডিস মশা যেহেতু পরিষ্কার পানিতে ডিম পারে। ঢাকার গরুর হাটগুলোতে পরিষ্কার পানির তুলনায় নোংরা পানি জমার আশঙ্কাকাটা বেশি থাকে। সেদিক থেকে পরিষ্কার পানিতে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করার জন্য যতটা আশঙ্কা করে থাকি, গরুর হাটের আশঙ্কাটা তুলনামূলক ভাবে কম," তিনি বলেন।
তিনি বলেন, "তারপরও গরুর হাটে যদি কোন পানি জমে থাকে সেটা যাতে না থাকে সে বিষয়ে সচেতনতার বার্তা দিচ্ছি। আমাদের টার্গেটের মধ্যে গরুর হাট রয়েছে। সেখানেও সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।"
অন্যান্য খবর:
শ্রীনগরে হাজার লোকের বিক্ষোভের ছবি বিবিসির হাতে
ব্রিটেনে ১৫ মিনিট বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের যে প্রভাব পড়েছে
অন্যদের বিয়ে নিয়ে হাসি মশকরা করার বিষাক্ত জগত