পয়লা বৈশাখে আনন্দধারায় ভাসল গোটা দেশ
অন্যান্য বছরের মতো এবারও সারা দেশের নজর ছিল রমনায়। সকাল ছ'টা থেকে রমনার বটমূলে শুরু হয় নানা অনুষ্ঠান। গানবাজনা, নাটক, নৃত্যে বরণ করা হয় নতুন বছরকে। সকালেই ঢাকার রাস্তা লোকে লোকারণ্য। কেউ বেরিয়ে পড়েছেন পরিবার নিয়ে, কোথাও যুগলরা হাঁটছে হাত ধরাধরি করে। বাজছে ডুগডুগি, ভেঁপু। সকাল ন'টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। পড়ুয়ারা পুরোভাগে থাকলেও পা মেলান সমাজের নানা স্তরের মানুষ।
পয়লা বৈশাখ হল ছুটির দিন। নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি সুপ্রিমো খালেদা জিয়া দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। জাতীয় পার্টির কর্ণধার এরশাদ এদিন নিজের লেখা কবিতা পাঠ করে শুনিয়েছেন সমর্থকদের। গুলশানের একটি কমিউনিটি সেন্টারে তিনি কবিতা পাঠ করেন। পরে সাংবাদিকদের বলেন, "পয়লা বৈশাখ কিন্তু সরকারি ছুটি ছিল না। ১৯৮৭ সালে ক্ষমতায় থাকার সময় আমিই প্রথম একে সরকারি ছুটির মর্যাদা দিয়েছিলাম। এখন তাই সবাই ছুটি মেজাজে দিনটা উপভোগ করতে পারছে।"
পয়লা বৈশাখ কি আর খাওয়াদাওয়া ছাড়া সম্পূর্ণ হয়? স্বাভাবিকভাবেই এদিন সকাল থেকে মিষ্টির দোকান, রেস্তোরাঁয় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। আমবাঙালি সাতসকালেই পান্তাভাত খেয়ে বরণ করে নিয়েছে পয়লা বৈশাখকে। একটু সম্ভ্রান্ত ঘরে পান্তাভাতের সঙ্গে ইলিশ মাছ। সঙ্গে নানা রকম ভর্তা, ভাজাভুজি, মিষ্টি।
এ তো গেল এপার বাংলার ব্যাপার। ওপার বাংলা অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু পয়লা বৈশাখ আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার। ওপার বাংলাও সকাল থেকে মাতবে উৎসবে। কলকাতার পাঁচতারা রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে সাধারণ ভোজনালয়গুলিও রাঁধে বাঙালি খাবারের নানা পদ। মাছের বাজারে সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। বাংলা সংবাদপত্রগুলি বিলি করে বিশেষ ক্রোড়পত্র। বিকেলে দল বেঁধে সবাই যায় হালখাতা করতে দোকানে দোকানে। রাজ্যে থাকে ছুটির আবহ।
ইতিহাস বলে, মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা নববর্ষের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন। তখন এপার বাংলা-ওপার বাংলা ছিল মুঘল শাসনাধীন। সেই থেকে বাঙালি পালন করে আসছে বাংলা নববর্ষ।