ফের আলোচনায় 'তিস্তা'! আওয়ামি লিগ নেতৃত্বকে যা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী
তিস্তার জলবন্টন নিয়ে বাংলাদেশের আওয়ামি লিগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেছেন, সুখে-দুঃখে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
তিস্তার জলবন্টন নিয়ে বাংলাদেশের আওয়ামি লিগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেছেন, সুখে-দুঃখে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দিল্লি সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে যে সম্পর্কের শুরু, আজ তা এক অনন্য উচ্চতায় স্থাপিত। ভারত ও বাংলাদেশের এই সম্পর্ক কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
ভোটের আগে বাংলাদেশের কাছে যে বিষয় সবচেয়ে স্পর্শকাতর, সেই তিস্তার জলবন্টন নিয়ে আধ ঘণ্টার ওই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে মোদী আশ্বাস দেন বলেই সূত্রের খবর। দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে ভারত আগ্রহী বলে জানিয়েছেন মোদী। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূমিকা ভারত সমর্থন করে। ভারত চায় দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।
বিজেপির
সর্বভারতীয়
সম্পাদক
রাম
মাধবের
আমন্ত্রণে
ওবায়দুল
কাদেরের
নেতৃত্বে
আওয়ামি
লিগের
২০
জনের
এই
প্রতিনিধিদল
গত
রবিবার
তিন
দিনের
সফরে
দিল্লি
যান।
রাজঘাটে
জাতির
জনক
মহাত্মা
গান্ধীর
সমাধিতে
গিয়ে
শ্রদ্ধা
জানিয়ে
সোমবার
তাঁরা
ভারতীয়
সংসদ
ভবন
ঘুরে
দেখেন।
বিকেল
সোয়া
চারটায়
বৈঠক
হয়
প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র
মোদীর
সঙ্গে।
প্রতিনিধিরা
এরপর
যান
দীনদয়াল
উপাধ্যায়
মার্গে
বিজেপির
নতুন
সদর
দফতরে।
রাতে
তাঁরা
যোগ
দেন
রাম
মাধবের
দেওয়া
নৈশভোজে।
মঙ্গলবার
প্রতিনিধিরা
ঢাকা
ফিরে
যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের
বর্তমান
রাজনৈতিক
পরিস্থিতি
কী,
মোদীকে
তা
ব্যাখ্যা
করেন
আওয়ামি
লিগ
নেতারা।
বাংলাদেশ
হাইকমিশনের
মিনিস্টার
প্রেস
ফরিদ
হোসেন
বৈঠক
শেষে
জানান,
এ
আলোচনায়
প্রধানমন্ত্রী
শেখ
হাসিনার
দৃঢ়
নেতৃত্বের
ভূয়সী
প্রশংসা
করেছেন
নরেন্দ্র
মোদী।
তিনি
বলেছেন,
বঙ্গবন্ধুর
আদর্শে
শেখ
হাসিনা
বাংলাদেশকে
এগিয়ে
নিয়ে
চলেছেন।
তাঁর
নেতৃত্বে
দেশ
অর্থনৈতিক
ও
সামাজিক
ক্ষেত্রে
দ্রুত
উন্নতি
করছে।
মোদী
বলেছেন,
সফল
নেতৃত্ব
একটা
দেশকে
কোথায়
এগিয়ে
নিয়ে
যেতে
পারে,
বাংলাদেশ
তার
প্রমাণ।
তুলনা
টেনে
তিনি
বলেন,
আজ
কোথায়
পাকিস্তান,
আর
কোথায়
বাংলাদেশ।
বিজেপি
ক্ষমতাসীন
হওয়ার
পর
এই
প্রথম
আওয়ামি
লিগের
এত
বড়
এক
প্রতিনিধিদলের
দিল্লি
সফর।
এই
সফর
আরও
গুরুত্বপূর্ণ
বছর
শেষে
বাংলাদেশের
ভোটের
কারণে।
গতবার
সংসদীয়
ভোটে
বিএনপি
অংশ
নেয়নি।
এবারের
ভোটে
তারা
কী
করবে
তা
এখনেও
অজানা।
সে
দলের
নেত্রী
খালেদা
জিয়া
দুর্নীতির
মামলায়
জেলবন্দী।
তাঁর
জামিন
এখনেও
কার্যকর
হয়নি।
এই
রাজনৈতিক
অস্থিরতা
অব্যাহত
থাকলে
এবং
ভোট
হলে
তার
প্রতিক্রিয়া
ভারতে
কী
হতে
পারে,
তা
জানা-বোঝাও
এই
প্রতিনিধিদলের
অন্যতম
উদ্দেশ্য।
ঐতিহাসিক কারণে আওয়ামি লিগের সঙ্গে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সম্পর্ক সুবিদিত। ভারতে পালাবদলের পর বিজেপির সঙ্গে আওয়ামি লিগের সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে একটা সংশয় ছিল। গত চার বছরে সেই সংশয় শুধু ঘুচেই যায়নি, বিজেপির সঙ্গে আওয়ামি লিগের সম্পর্ক ক্রমশ জমাট বেঁধেছে। পারস্পরিক নির্ভরতাও সৃষ্টি হয়েছে। গত রবিবার বাংলাদেশ হাইকমিশনে এক নৈশভোজে প্রতিনিধিদলের এক শীর্ষ নেতা এই পারস্পরিক নির্ভরতার প্রসঙ্গে বলেন, সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দুই দেশের শাসক দলই সচেষ্ট।
সম্প্রতি কংগ্রেসের আমন্ত্রণে দলের প্লেনারি অধিবেশনে আওয়ামি লিগের নেত্রী দীপু মনির নেতৃত্বে তিন সদস্যের এক প্রতিনিধিদল দিল্লি গিয়েছিল। বিজেপির আমন্ত্রণে যাওয়া প্রতিনিধিদের সংখ্যা সেই তুলনায় বহুগুণ বেশি। সংখ্যার এই হেরফেরের মধ্য দিয়েও সম্পর্কের গভীরতা বোঝানোর এক প্রচ্ছন্ন চেষ্টা রয়েছে বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি-প্রকৃতি নিরীক্ষণকারী এক পূর্বতন কূটনীতিকের মতে, এত বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে এই সফরে যাওয়ার অন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রতিপক্ষকে বোঝানো, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা অব্যাহতই শুধু নেই, আরও দৃঢ় হয়েছে। পূর্বতন ওই ভারতীয় কূটনীতিকের মতে, বিএনপির বোঝা উচিত, জামাতের সঙ্গে তারা এখনেও সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। তা না করলে ভারতের কোনও রাজনৈতিক দলের নেকনজরে তারা আসতে পারবে না।
বাংলাদেশের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছাবার্তা নরেন্দ্র মোদীকে পৌঁছে দেন প্রতিনিধিদলের নেতা ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়া ভারতের পক্ষে আলোচনায় ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল।
এমাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের বিদেশ সচিব বাংলাদেশ সফরে গিয়ে তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।