করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে ৭ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা ওপার বাংলায়
নতুন করে ফের বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই অবস্থায় কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ বাংলাদেশের হাসিনা সরকার। লকডাউন নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নয়া এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭দিনের জন্যে সম্পূর্ণ লক
আশঙ্কাটা ছিল। বিশেষজ্ঞদের একাংশের পূর্বাভাস ছিলই যে বাংলাদেশে একবার যদি সেকেন্ড ওয়েভ আছড়ে পড়ে তাহলে ভয়াবহ আকার নেবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে চলেছ করোনার সংক্রমণ।
প্রত্যেইদিনই বাড়ছে সংক্রমণের হার। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞ, ডাক্তারদের পরামর্শ মানলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক বসেন। বৈঠক শেষে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিলেন প্রধানমন্ত্রী।
৭ দিনের লকডাউন
ক্রমশ বাংলাদেশে সংক্রমণ বাড়ছে। আর তা ক্রমশ উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছে। এই অবস্থায় এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করে দিল বাংলাদেশ। আগামী ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য লকডাউনের আওতায় বাংলাদেশ, ঘোষণা করল শেখ হাসিনা প্রশাসন। পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। পাশাপাশি, মিউটেশনের দরুণ আরও ভয়ানক হয়ে গিয়েছে কোভিড-১৯। আর সেই কারণেই লকডাউন ঘোষণা করা হল। কি কি খোলা থাকবে, আর কি বন্ধ থাকবে সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছে।
গত বছর এই সময় ছুটি ঘোষণা হয় বাংলাদেশে
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গতবছর ২৩ মার্চ প্রথমবার 'সাধারণ ছুটির' ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত 'ছুটি' ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা। সেই সময় সব অফিস আদালত, কল-কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ছুটির মধ্যে সব কিছু বন্ধ থাকার সেই পরিস্থিতি 'লকডাউন' হিসেবেই দেখা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে এই ছুটি চলায় অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কা লাগে। আর সেই কারণে ধীরে ধীরে উঠতে থাকে লকডাউন। বছর ঘুরতেই ফের সংক্রমণের হার সে দেশে বাড়ছে।
বাংলাদেশে নতুন স্ট্রেনের সন্ধান!
মার্চের শুরু থেকে বাংলাদেশে আবার নতুন রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬ হাজার ৮৩০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। যা মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। এমনটাই জানাচ্ছেন সে দেশের চিকিৎসকরা। অন্যদিকে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনে। আর তাদের মধ্যে মোট ৯ হাজার ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, বিদেশ থেকে যাতায়াতের ফলে সংক্রমণে লাগাম পরানো যায়নি। ইতিমধ্যে সে দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তার ধাক্কা সামলাতে না পেরে ফের হু হু করে বেড়েছে সংক্রমণ, মৃত্য়ু।
একাধিক সিদ্ধান্ত
সংক্রমণ ঠেকাতে একাধিক পদক্ষেপও নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা বাতিল করা হয়েছে, স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশের সমস্ত নির্বাচন, ইংল্যান্ড-সহ পৃথিবীর ১২ দেশ থেকে পর্যটকদের প্রবেশেও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে উঠল। আর তা উঠতেই নতুন করে লকডাউন জারি করতে কার্যত বাধ্য হু হাসিনা সরকার।
বাংলাতেও বাড়ছে সংক্রমণ
শুধু ওপার বাংলা নয়, ক্রমশ এপার বাংলাতেও বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ২৪ ঘন্টায় দ্বিগুণ হচ্ছে সংক্রমণের হার। ভোটের মধ্যে কার্যত কোনও নিয়মই মানা হচ্ছে না। ফলে ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণের হার। চিকিৎসকদের একাংশ লকডাউনের কথা বললেও তা মাণতে পারছে না সরকার। ভোট বড় বালাই যে!!