For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: প্রথমটি অলাভজনক রেখে দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের প্রয়োজন কী?

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ তৈরি এবং উৎক্ষেপণের জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত মহাকাশ সংস্থা রসকসমস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমস এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি একটি সমঝোতা-স্মারক স্বাক্ষর করেছে বুধবার।

  • By Bbc Bengali

স্যাটেলাইট
Getty Images
স্যাটেলাইট

বাংলাদেশের দ্বিতীয় আরেকটি স্যাটেলাইট 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২' নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য রাশিয়ার সাথে সমঝোতা-স্মারক স্বাক্ষর হলেও দ্বিতীয় আরেকটি স্যাটেলাইট-এর প্রয়োজন আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ উৎক্ষেপণ করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। সাড়ে তিন বছর পার হলেও সেটি এখনো বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়নি।

এমন অবস্থায় দ্বিতীয় আরেকটি স্যাটেলাইটের জন্য রাশিয়ার সাথে সমঝোতা-স্মারক সাক্ষর করা হয়েছে।

তাছাড়া স্যাটেলাইট নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য এক ধরনের বিশেষ চিপস এর প্রয়োজন হয়।

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া এ ধরনের চিপস আমদানি করতে পারছে না। ফলে তাদের স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।

দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের কাজ কী হবে?

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত মহাকাশ সংস্থা রসকসমস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমস এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি এই সমঝোতা-স্মারক স্বাক্ষর করেছে বুধবার।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী রাশিয়ার গ্লাভকসমস 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২' তৈরি এবং উৎক্ষেপণ করবে।

এই স্যাটেলাইট নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণে কত টাকা লাগবে সেটি এখনো ঠিক হয়নি।

আরও পড়তে পারেন:

এর আগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ যে 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১' উৎক্ষেপণ করেছিল, তখন মোট খরচ হয়েছিল তিন হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশের জন্য কোন ধরনের স্যাটেলাইট প্রয়োজন, সেটি নির্ধারণ করার জন্য প্যারিস-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছিল।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলেছে, বাংলাদেশের জন্য একটি আর্থ অবজারভেটরি স্যাটেলাইট ভালো হবে।

স্যাটেলাইট
Getty Images
স্যাটেলাইট

বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, এই স্যাটেলাইটের মূল কাজ হবে উপর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল দেখা।

তিনি বলেন, "সমুদ্রের একটি বিশাল এলাকায় বাংলাদেশের আধিপত্য স্থাপিত হয়েছে। সেটা পর্যবেক্ষণের জন্য এ ধরনের স্যাটেলাইট প্রয়োজন। এর মাধ্যমে আমরা সে এলাকা উপর থেকে দেখতে পারবো।"

"যখন বাংলাদেশে বন্যার পানি আসা শুরু করবে, তখন আমরা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বুঝতে পারবো আগামী কয়েকদিনে কী পরিমাণ পানি আসবে।"

এছাড়া ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন মি. মাহমুদ।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বাংলাদেশের উপরেই থাকবে। ঘন-ঘন বাংলাদেশকে প্রদক্ষিণ করবে।

তবে এই স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাইয়িদ খান।

দ্বিতীয় আরেকটি স্যাটেলাইটের একবারেই কোন প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করেন মি. খান।

তিনি বলেন, প্ল্যানেট ইনক এবং ম্যাক্সাস সারা পৃথিবীতে স্যাটেলাইটের কমার্শিয়াল সার্ভিস দেয়।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের সময় কীভাবে গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, অর্থাৎ গ্রামগুলোর আগের চিত্র কেমন ছিল এবং বর্তমান চিত্র কেমন - এসব এসেছে প্ল্যানেট ইনক স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে।

"আমি যদি পয়সা দিয়ে কিনতে চাই, সামান্য পয়সা। এজন্য আস্ত একটা স্যাটেলাইট ওড়ানোর প্রয়োজন নেই," বলেন মি. খান।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, দ্বিতীয় এই স্যাটেলাইট এমন কী সেবা দেবে যেটা বাণিজ্যিক-ভিত্তিতে পাওয়া যাবে না।

কর্মকর্তারা বলছেন, এসব তথ্য অন্য স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জানা যেত। তাতে রেজ্যুলুশন কম এবং সেগুলো অর্থ দিয়ে কিনতে হতো।

"যদি আমরা ঘন-ঘন দেখতে চাইতাম, তখন পেতাম না আমরা," বলেন শাহজাহান মাহমুদ।

আগের স্যাটেলাইট অলাভজনক

'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১' উৎক্ষেপণের সময় বলা হয়েছিল, এটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে। কিন্তু সাড়ে তিন বছর পার হলেও বাস্তবতা এখনো ভিন্ন।

লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাইয়িদ খান বলছেন, আগের স্যাটেলাইট লাভজনক না করে দ্বিতীয় আরেকটি স্যাটেলাইটের দিকে যাওয়া ''চূড়ান্ত বোকামি'' হবে।

"বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইটের আয়ুষ্কাল হচ্ছে ১৫ বছর। তিন বছর চলে গেছে। রহস্যজনক কারণে বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট কোম্পানি কোন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে না।"

মি. খান বলেন, "এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমরা কত টাকা আয় করেছি, আমার মাথার উপর ঋণের বোঝা কত, বিজনেস কেস কী - এসব সম্পর্কে আমরা একেবারেই অন্ধকারে।"

বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও শাহজাহান মাহমুদ স্বীকার করছেন, যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেটি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

"আমরা বাইরে যে পরিমাণ ক্যাপাসিটি বিক্রি করার প্ল্যান করেছিোম, সেটা আমরা করতে পারছি না।

"বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট যখন আমরা আকাশে তুললাম, ততদিন বিভিন্ন দেশের আরো স্যাটেলাইট হয়ে গেছে এই এলাকায়। আমরা যাদের কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছিলাম, তাদের আর প্রয়োজন নেই," জানান মি. মাহমুদ।

তিনি বলেন, এখন অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আশা করেন আগামী ছয়মাসের মধ্যে দেশের ভেতরে স্যাটেলাইট ক্যাপাসিটির অনেকটাই ব্যবহৃত হবে।

আরও পড়তে পারেন:

রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রভাব ফেলবে?

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আমেরিকা তার চিপ ইন্ডাস্ট্রিকে সতর্ক করে বলেছে, রাশিয়াতে চিপ রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে তারা যাতে তৈরি থাকে।

রাশিয়া যদি ইউক্রেন আক্রমণ করে তাহলে দেশটিতে চিপ রপ্তানির উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত স্পেস এজেন্সি রসকসমভ-এর প্রধান দিমিত্রি রগোজিন দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ২০২১ সালের ৭ই জুন জানিয়েছেন, চিপ আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে রাশিয়া কিছু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পারছে না।

মি. রগোজিনকে উদ্ধৃত করে রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, "আমাদের যথেষ্ট রকেট আছে। কিন্তু মহাকাশে পাঠানোর মতো অবস্থা নেই।"

রসকসমভ-এর প্রধান জানিয়েছেন, অনেক স্যাটেলাইটের কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। এজন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের মাইক্রোচিপ। কিন্তু আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে মাইক্রোচিপ আমদানি করতে পারছে না রাশিয়া।

রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করার পর রাশিয়ার উপর নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা এবং ইউরোপ।

তবে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন আবু সাইয়িদ খান। তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে। সুতরাং স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রেও সেটি সমস্যা হবার কথা নয়।

'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১' তৈরি হয়েছিল ফ্রান্সে এবং উৎক্ষেপণ হয়েছে আমেরিকা থেকে।

এবার কেন রাশিয়াকে নেয়া হলো?

এমন প্রশ্নে শাহজাহান মাহমুদ বলেন , "কোন কারণ নাই। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।"

English summary
Bangabandhu Satellite: What is the need of the second satellite leaving the first unprofitable?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X