স্বাধীনতা নয়, জুটেছিল পরাধীনতা! ১৪ অগাস্ট কালো দিবস পালন করবেন বালোচ-সিন্ধি-কাশ্মীরিরা
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ১৪ অগাস্ট। তবে সেই দিনটিকে কালো দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানেরই একাধিক জাতি। জানা গিয়েছে পাকিস্তানে জাতীয়তবাদী কয়েকটি গোষ্ঠী পাকিস্তানের সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বিক্ষোভ বিভিন্ন দেশে থাকা পাকিস্তানি এবং বিক্ষুব্ধ সেই জাতির মানুষরা দেখাবে বলেও জানা গিয়েছে।
সিন্ধি, বালোচ, পাশতুন, গিলগিট বালতিস্তানে কীলো দিবস
পাকিস্তানের ৭৩তম স্বাধীনতা দিবসের দিনে সিন্ধি, বালোচ, পাশতুন, গিলগিট বালতিস্তানের বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী ইসলামাবাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হতে কালো দিবস হিসাবে পালন করা হবে। গিলগিট বালতিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল গত কয়েক বছর ধরে এমনিতেই চিনকে বিক্রি করে আসছে পাকিস্তান। এবার সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চিনকে গিলগিট বালতিস্তানে খনন সত্ত্ব দিল ইসলামাবাদ। শুধু তাই নয়, এই সত্ত্ব দিতে গিয়ে ইসলামাবাদ নিজেদের সংবিধানের তোয়াক্কাও করেনি।
পাকিস্তানের সংবিধানের ২৫৭ নম্বর ধারা লঙ্ঘন
পাকিস্তানের সংবিধানের ২৫৭ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে এই চুক্তি। সেই ধারা অনুযায়ী পাকিস্তানের সরকরার এভাবে গিলগিট বালতিস্তান এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদের খননের সত্ত্ব অন্য কোনও দেশকে দিতে পারে না। তাছাড়া এসব প্রাকৃতিক সম্পদের খনির সত্ত্ব বিক্রির ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
পাকিস্তান চিনকে 'দান' করেছে বহু এলাকা
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা একটু একটু করে পাকিস্তান চিনকে 'দান' করেছে। এই অঞ্চলের এই এলাকাগুলি চিনের হাতে তুলে দেওয়ার মূল লক্ষ্য ছিল চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডোরের রাস্তা আরও মসৃণ করা। ৩২১৮ কিলোমিটার লম্বা এই করিডোর আদতে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের 'ড্রিম প্রোজেক্ট।'
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিক্ষোভ
সেই ড্রিম প্রজেক্টের অন্তর্গত আরও একটি প্রোজেক্ট হল পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঝিলাম নদীর উপর নির্মীয়মাণ একটি বাঁধ। আর এতেই খেপেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। করোনা উপেক্ষা করে চিনের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা। এই ইস্যুতে বেশ কয়েকটি মিছিল দেখা যায় মুজাফফারাবাদে।
হ্যাক করা হয়েছিল পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ওয়েবসাইট
কয়েকদিন আগেই হ্যাক করা হয়েছিল পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের গণসংযোগ আধিকারিকের সরকারি ওয়েবসাইট। আর সেখানে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি গতবছরের বালাকোট অভিযান পরবর্তীতে দুই দেশের যুদ্ধবিমানের ডগফাইট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয় সেই বার্তায়। এছাড়া কাশ্মীরে পাক সেনা ও পুলিশের মানবাধিকা লঙ্ঘনের প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয় ওই বার্তায়।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর ইসলামাবাদের জুলুম
এরই মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ইমরান খান প্রশাসনের অধিকার আরও দৃঢ় করতে সাংবিধানিক বদল আনতে চলেছে ইসলামাবাদ। জানা গিয়েছে দুই বছর আগে নওয়াজ শরিফের দল যে কাউন্সিল অবুলুপ্ত করে দিয়েছিল সেই কাউন্সিল ফের ফিরিয়ে আনতে চলেছে ইমরান খান প্রশাসন।
বালোচ স্বাধীনতার দাবি
এদিকে ৩১ জুলাই বালুচিস্তানে পাক সেনার উপর হামলা চালাল সেখানকার বিদ্রোহী সশস্ত্র বাহিনী। এই হামলায় সাতজন পাকিস্তানি সৈনিক মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই হামলার ঘটনাটি বালুচিস্তানের মাশকে উপত্যকার ঝাউ নামক একটি স্থানে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই হামলার দায় স্বীকার করে বালোচ লিবারেশন ফ্রন্টের মুখপাত্র গোয়ারহাম বালোচরা শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত স্বাধীনতার জন্যে লড়াই করে যাবে।
বালোচ সংগ্রাম
এর কয়েকদিন আগেই করাচিতে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা চালায় বালোচ বিদ্রোহীরা। জুন মাসের ২৯ তারিখ সকালে বালোচ বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় কেঁপে ওঠে করাচিতে অবস্থিত পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ। জানা যায় ঘটনায় মোট ১১ জন মারা যায়। সেই হামলার দায় স্বীকার করে বক্তব্য পেশ করে বালোচ লিবারেশন আর্মি। ভবিষ্যতেও পাক প্রশাসনেরর উপর তাদের হামলা জারি থাকবে বলে হুঁশিয়া দিয়ে রেখেছিল তারা। সেই মতো ফের এদিনের এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
গেহলট সরকারের প্রতি অনাস্থা আনছে বিজেপি, তাহলে কি বিজেপিতে সচিন! জল্পনা বাড়ছে রাজস্থানে