বঙ্গে পুজো শেষ কিন্তু আটলান্টায় শুরু পুজো, ট্রাম্পের দেশে দুর্গাবন্দনায় মাতল পূর্বাশা
বঙ্গে বিদায় নিয়েছেন মা। শিবের হাত ধরে সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে কৈলাসে ফিরে গিয়েছেন উমা। কিন্তু, বঙ্গে পুজো শেষ হলেও এখন মাতৃ-আরাধনায় মেতে উঠেছে আটলান্টা।
বঙ্গে বিদায় নিয়েছেন মা। শিবের হাত ধরে সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে কৈলাসে ফিরে গিয়েছেন উমা। কিন্তু, বঙ্গে পুজো শেষ হলেও এখন মাতৃ-আরাধনায় মেতে উঠেছে আটলান্টা। পূর্বাশা-র দুর্গাপুজোকে ঘিরে এখন আমেরিকার আটলান্টায় উৎসবের আমেজ।
কলাবউ স্নান করিয়ে পুজোর সূচনা হয়েছে। প্রথমদিনে মাতৃ-আরাধনার সঙ্গে ছিল নৈশভোজের আয়োজনও।
দুর্গা এখানে ডাকের বেশে
পূর্বাশার দুর্গা-প্রতিমার মূল আকর্ষণ হল ডাকের সাজ। এর সঙ্গে দেবী প্রতিমার অন্যন্য রূপ সকলকেই মুগ্ধ করে। বেনারসি শাড়িতে মা-দুর্গাকে দেখতে ছুটে আসেন বহু মানুষ।
আচার-নিয়মের যথাযথ পালন
বিদেশ বিঁভুই-এ পুজো মানে যে বিধি-আচার পালনে ফাঁক- এমনটা কখনই মনে করে না পূর্বাশা। সেই কারণে রীতিমতো রীতি ও আচার মেনেই পুজোর প্রতিটি উপকরণকে সাজিয়ে তোলা হয়।
পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ
পুজোর ক'টা দিন পুরোহিতের সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণে চারিদিক ভরে ওঠে। পুজোর মন্ত্র যাতে সকলে শুনতে পান তার ব্যবস্থাও করা হয়। পুজোর সময় পুরোহিতের সামনে মাউথপিস রেখে দেওয়া হয়। আর এভাবেই পুরোহিতের মন্ত্র স্পিকারে বেজে ওঠে।
পুজোয় ছোটদের সাজ
পুজোর দিনগুলিতে এক্কেবারে সেজে-গুজে তৈরি থাকে পূর্বাশার এই ক্ষুদে সদস্যরা। রীতিমতো পোজ দিয়ে পুজোর ফাঁকে চলে ফোটো-সেশন।
পিছিয়ে নেই বড়রাও
বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। সুতরাং এমন এক উৎসবে যে বড়রা পিছিয়ে থাকবেন না তাতে কোনও সন্দেহ নেই। পুজোর দিনগুলিতে নতুন জামা-কাপড় পরে সকলেই মেতে ওঠেন পুজোর আনন্দে।
গ্রুফি-র ফোটো-সেশনে পুজোর আনন্দ
পুজো মানেই ভিড়। পুজো মানেই সকলে মেতে ওঠা উৎসবের আনন্দে। এমন দিনে তাই কী করে বাদ যায় এমন সব গ্রুফি।
মহিলাদের হাতে বন্দি পুরুষ-দের দল
পুজোয় পুরুষদের গ্রুফি। আর ক্য়ামেরা হাতে মহিলারা। বোঝাই যায় উৎবের এই মিলনে কতটা আনন্দ বয়ে যায়। আর এমনই এক মুহূর্তে বড় বিষ্ময় নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে এক ছোট্ট শিশু।
তথাগত ভট্টাচার্য, সভাপতি, পূর্বাশা
'পূর্বাশা এমন একটা প্ল্য়াটফর্ম যার কাজ হল ভারতীয় এবং বিশেষ করে বাঙালিদের আরও বেশি করে কাছাকাছি আনা এবং প্রবাসের মাটিতে নিজস্ব সংস্কৃতিকে তুলে ধরা। পূর্বাশা বছরভর বিবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। এই সব অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রবাসীরা তাঁদের নানা ধরনের প্রতিভাকে মেলে ধরেন। এই ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিশেষ করে শিশুরা প্রবাসে তাদের সংস্কৃতি ও সংস্কার সম্পর্কেও অবগত হওয়ার সুযোগ পায়। বলতে গেলে পূর্বাশার মধ্যে দিয়ে একটা বৈচিত্রময় সংস্কৃতি-র প্রকাশ ঘটে, যেখানে বাঙালির নির্ভেজাল আড্ডা এবং লোভনীয় রসনার আয়োজন বাড়তি পাওনা।'- তথাগত ভট্টাচার্য
কুণাল সাহা, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পূর্বাশা
'২০১১ সালে পূর্বাশা-র প্রতিষ্ঠা লগ্নে মাত্র ১৫টি পরিবার ছিল। এর ফলে দুর্গাপুজোর মতো এতবড় একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বহু সমস্যায় পড়তে হত। কিন্তু বাঙালিদের চিরাচরিত উৎসাহ আমাদেরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। যার ফলে ৮ বছরে পূর্বাশার সদস্য সংখ্য়া ২৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আটলান্টা-তে পূর্বাশা এখন এমন একটি সংগঠন যেখানে অংসখ্য যুব সদস্য রয়েছে। আর আছে এর বৈচিত্রময় সংস্কৃতি- যা সকলকে আকর্ষণ করছে।'- কুণাল সাহা
বিপ্লব সাহা, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পূর্বাশা
'পূর্বাশা-র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই ছিল যেখানে সমমনস্ক মানুষদের একটা ছাতার তলায় নিয়ে আসা। পূর্বাশা এমন একটি প্ল্য়াটফর্ম যেখানে সকলে সকলে গুরুত্ব দেয় এবং যেখানে মূল্য়বোধের আদান-প্রদানটাও বড়় বিষয়। পূর্বাশা তৈরির প্রথম দিন থেকেই এই দর্শনকে সামনে রাখা হয়েছে। পূর্বাশার মাধ্যমে আমরা সমাজ-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ নিয়ে থাকি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য-দিবস পালন।'- বিপ্লব সাহা
রাকা দাস সাহা, সহ-সভাপতি
'আমরা সবসময়ে নারী শক্তির বিকাশের কথা বলি। কিন্তু, এই আলোচনা শুধু কিছু সময়ের মধ্যেই আবদ্ধ থাকে। কিন্তু, পূর্বাশা এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে নারী শক্তির বিকাশকে গুরুত্ব সহকারে বিচার করা হয়। আমাদের যে পুজো-র টিম বা মার্কেটিং টিম অথবা সেচ্ছাসেবক নিয়োগের যে দল আছে তাতে মহিলাদের সংখ্যাটা চোখে পড়ার মতো। এমনকী, পূর্বাশায় যে আগামী এক্সিকিউটিভ কমিটি তৈরি করা হচ্ছে তাতে সব সদস্য-ই হবে মহিলা। আটলান্টায় এটাই হবে প্রথম মহিলা পরিচালিত কমিটি।'- রাকা দাস সাহা