জেফ বেজোস নন, এখন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি ইলন মাস্ক
অ্যামাজনের জেফ বেজোসকে ছাপিয়ে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি হলেন টেসলা ও স্পেস এক্সের সিইও তথা কর্ণধার ইলন মাস্ক। ইলনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে ১৮৫ বিলিয়ন ডলারে। বেজোসের চেয়ে দেড় মিলিয়ন বেশি। ব্লুমবার্গ বিলোনিয়ারস সূচকে বিশ্বের ৫০০ জন ধনীদের মধ্যে শীর্ষেই নাম রয়েছে মাস্কের। মনে করা হচ্ছে এই জায়গায় উঠে আসার জন্য টেসলার শেয়ার ৪.৮ শতাংশ বৃদ্ধি দায়ি।

১২ বছর বয়সে ভিডিও গেম তৈরি করেন
যদিও এই র্যাঙ্কিং জানার পরও খুব একটা বিচলিত নন মাস্ক। তিনি ‘টেসলা ওনার্স অফ সিলিকন ভ্যালি'র টুইট থেকে টুইটে বলেন, ‘খুব অবাক হচ্ছি। যাইহোক কাজে ফেরা যাক'। ১৯৭১ সালের ২৮ জুন মডেল ও ডায়টেশিয়ান মায়ে মাস্ক ও ইলেকট্রোমেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইরল মাস্কের ছেলে ইলন মাস্ক জন্ম নন। তিনি খুব ছোট বয়সেই কোড শিখে ফেলন এবং ১২ বছর বয়সে তিনি ব্লাস্টার নামে একটি ভিডিও গেম তৈরি করেন এবং খেলাটির উৎস কোড তিনি ম্যাগাজিন পিসি ও অফিস টেকনোলজিকে ৫০০ ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন।

মাস্কের প্রথম সংস্থা জিপ২
১৯৯৫ সালে মাস্ক ও তাঁর ভাই তাঁদের প্রথম সংস্থা জিপ২, অনলাইন-মিডিয়া পরিষেবা সংস্থা শুরু করেন। যারা সিটি গাইড সফটওয়্যার থেকে সংবাদপত্রের লাইসেন্স বের করে। ১৯৯৯ সালে মাস্ক তাঁর জিপ২ সংস্থা ৩০৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে সেই চুক্তি থেকে উপার্জন করেন ২২ মিলিয়ন ডলার এবং বর্তমানে মাস্ক স্পেসএক্স, টেসলা মোটরের সিইও এবং সোলারসিটির চেয়ারম্যান। ২৭বছর বয়সেই তিনি লক্ষাধিক টাকার মালিক হয়ে বসেন। এরপর তিনি এক্স ডট কম নামে একটি অনলাইন ব্যাঙ্ক সংস্থা খোলেন এবং ১০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ১৯৯৯ সালে তিনি তাঁর সংস্থা চালু করেন। এক বছর পর এক্স ডট কমের সঙ্গে পেপল জোট বাঁধে এবং মাস্ককে নতুন পেপলের সিইও ঘোষণা করা হয়। যদিও মাস্কের সঙ্গে পেপলের সহ প্রতিষ্ঠাতার ঝামেলা হওয়ায় মাস্ক সিইও পদ ছেড়ে দেন।

২০০২ সালে স্পেস এক্সের সূচনা
২০০২ সালে মাস্ক এরপর পেপলের কাছ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পেয়ে মহাকাশ ভ্রমণ সংস্থা স্পেস এক্স নামে সংস্থা খোলেন। ২০০৪ সালে মাস্ক ইলেকট্রিক কারমেকার টেসলাতে ৭০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন। এই সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হলেন মার্টিন ইবারহার্ড। টেসলাতে মাস্ক অ্যাক্টিভ প্রোডাক্ট ভূমিকায় কাজ করেন এবং প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি হতে সহায়তা করেন। ২০০৬ সালে যখন এই গাড়ি প্রকাশ্যে আসে তখন মাস্ক সংস্থার চেয়ারম্যান। ২০০৮ সালে টেসলা যখন আর্থিক অনটনের মধ্যে পেছিল তখন মাস্ক ব্যক্তিগতভাবে সংস্থাকে বাঁচানোর জন্য ৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন। ওই বছরই তিনি সংস্থার সিইও হিসাবে নির্বাচিত হন। তবে স্পেসএক্স, টেসলা এবং সোলার সিটির মধ্যে মাস্ক প্রায় ভেঙে গিয়েছে। তিনি ২০০৮ সালকে ‘আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ বছর' হিসাবে বর্ণনা করেছেন। যদিও২০০৮ সালে স্পেস এক্সের সঙ্গে নাসার ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি হয় মহাকাশে যান পাঠানোর জন্য এবং টেসলা বাইরের থেকে বহু বিনিয়োগকারীকে পায়।

২০১৭ সাল থেকে শীর্ষ ধনী ছিলেন জেফ বেজোস
উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর খেতাবটি ২০১৭ সাল থেকে ধরে রেখেছিলেন অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস। এ বছর মাস্কের বিদ্যুত চালিত গাড়ি প্রতিষ্ঠান টেসলার মূল্যমান বেড়েছে। বুধবার ৭০ হাজার কোটি ডলার বাজার মূল্যমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। হিসেবে টয়োটা, ফোকসভাগেন, হিউন্দাই, জিএম এবং ফোর্ডের সম্মিলিত সম্পদও এখন টেসলার তুলনায় কম। গত বছর অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোসেরও সম্পদ বেড়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীতে অ্যামাজন আরও দৃঢ়ভাবে অনলাইন স্টোর ও ক্লাউড কম্পিউটিং খাত থেকে লাভবান হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদে সাবেক স্ত্রী ম্যাকেনজি স্কটকে ব্যবসায়ের চার শতাংশ দিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি প্রভাব ফেলেছে বেজোসের ব্যক্তিগত সম্পদে। এ কারণেও দৌড়ে এগিয়ে গিয়েছেন মাস্ক। এ ছাড়াও নিয়ন্ত্রকদের হুমকির মুখে অ্যামাজনের শেয়ার দর যতোটা বেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, ততোটা বাড়েনি।

নিজেই নিজেকে ক্ষমা করতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প! কী বলছে মার্কিন আইন?