For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

আইএস ছেড়ে আসা এক ব্রিটিশ যুবক মিডিয়াকে যা বললেন

মুসলিম হিসেবে ধর্মান্তরিত এই ব্যক্তি এখন কুর্দিশ কারাগারে হেফাজতে আছেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

  • By Bbc Bengali

জ্যাক লেটস।
BBC
জ্যাক লেটস।

জ্যাক লেটস, যিনি ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয়ার জন্য কিশোর বয়সে যুক্তরাজ্য ছেড়ে গিয়েছিলেন, তিনি বলছেন যে তিনি "ব্রিটেনের শত্রু"

মুসলিম হিসেবে ধর্মান্তরিত এই ব্যক্তি এখন কুর্দিশ কারাগারে হেফাজতে আছেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

একবার আত্মঘাতী হামলা চালানোর প্রস্তুতিও তিনি নেন। এমন কথাও স্বীকার করেন মিস্টার জ্যাক।

বিবিসি গত অক্টোবরে ২৩ বছর বয়সী এই তরুণের সাক্ষাৎকার নিলেও এতদিন তা প্রচার করা যায়নি।

সম্প্রতি জ্যাক লেটসের বাবা-মা, সন্ত্রাসবাদে তহবিল দেয়ার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সাক্ষাতকারটি প্রকাশ করা হল। তারা মূলত জ্যাক লেটসকে টাকা পাঠাতেন।

জ্যাক লেটসকে গণমাধ্যম জিহাদি জ্যাক হিসেবেই অভিহিত করে এসেছে।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দুই বছর পর, ২০১৪ সালে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে সিরিয়ায় চলে যান। সে সময় তিনি অক্সফোর্ডের একটি স্কুলে এ-লেভেলে পড়তেন।

সিরিয়ায় গিয়ে তিনি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস-এ যোগ দেন। যারা নৃশংস গণহত্যা ও শিরশ্ছেদের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত ছিল।

সেখানে তিনি ইরাকি এক নারীকে বিয়ে করেন, যার পরিবারও আইএস এর অনুগত ছিল।

তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তান হলেও, জ্যাক তাকে কখনোই দেখতে পারেননি।

২০১৭ সালে তিনি আইএস ত্যাগ করেন। এরপর এক অভিযানে তিনি ধরা পড়লে তাকে পূর্ব সিরিয়ার কুর্দি কারাগারে নিয়ে রাখা হয়।

ব্রিটিশ এই নাগরিকের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব এখনও ছিনিয়ে নেয়া হয়নি। তাছাড়া তার দ্বৈত কানাডীয় নাগরিকত্ব রয়েছে।

এই প্রথম তিনি বিবিসির মাধ্যমে আইএসে তার ভূমিকা সম্পর্কে সব খোলাখুলি প্রকাশ করতে রাজি হয়েছেন।

জ্যাক লেটস।
BBC
জ্যাক লেটস।

'আমি যা করেছি, তা করেছি'

রিপোর্টার কোয়েন্টিন সোমারভিল, কুর্দি নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে জ্যাকের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন।

তিনি বিশ্বাসঘাতক কিনা সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ ছোড়া হলে এই আইএস যোদ্ধা জবাব দেন: "আমি জানি আমি অবশ্যই ব্রিটেনের শত্রু।"

"আমি যা করেছি তা, করেছি,"আমি একটা বড় ভুল করেছি।" বলেন তিনি।

যারা সারা বিশ্ব জুড়ে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, সেই উগ্রবাদী গোষ্ঠীতে যোগ দিতে, তিনি কেন যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেছিলেন?

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মিস্টার জ্যাক বলেন, "আমি ভেবেছিলাম আমি পিছনে কিছু রেখে যাচ্ছি আর সামনে ভাল কিছু করতে যাচ্ছি।"

তার বাড়ির জীবন আরামদায়ক ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমার মায়ের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল, এবং আমার বাবার সঙ্গেও।

"আমি আমার বাবার সাথে কাজ করতাম। সে একজন কৃষক ছিলেন ... আমি আসলে তার সাথে কাজ করতে ভালবাসতাম। আমাদের খুব ভাল সম্পর্ক ছিল।"

তিনি মনে করেন তার সিরিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্তটি "চিন্তাভাবনার অদ্ভুত সমন্বয়" এবং "অদ্ভুত ধরণের বিভ্রান্তি" থেকে এসেছিল।

তিনি বলেন, "আমি সে সময় ভেবেছিলাম এটা এক ধরণের নৈতিকতা। আমার যে সুন্দর জীবন আছে, সেটা কেন অন্যদের নেই? এবং তারপরে, ইসলামী স্টেটের সদস্য হওয়ার চিন্তাটা আসে এই দায়িত্বটা পালন করার জন্যই।

"আমি মনে করি এটি সম্ভবত আমার জীবনের আবেগ-চালিত সময় ছিল। আমি খুব আনন্দিত যে আমি মারা যাইনি।"

'আমি আমাকে দ্বিতীয় সুযোগ দেব না'

সাবেক এই আইএস সদস্য বলেন, এই সংগঠনটি, আত্মঘাতী হামলার জন্য বিস্ফোরক জ্যাকেট পরতে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করত। তিনিও জঙ্গিদের কাছে এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, "যদি যুদ্ধ হয় তবে তিনি প্রস্তুত আছেন।

"বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, আমি এক পর্যায়ে আত্মঘাতী হামলায় যেতে চাইতাম। কবে জ্যাকেট পরে না। আমি গাড়ী নিয়ে হামলা চালাতে চেয়েছিলেন। যদি আমি সেই সুযোগ পেতাম, আমি করতাম।" তিনি বলেন

জ্যাক এখন বিশ্বাস করেন যে আত্মঘাতী হামলা ইসলামী আইনে "হারাম" বা নিষিদ্ধ।

তিনি শুরুতে রাক্কাতে বাস করতে ভালবাসতেন। তিনি ফ্রন্ট-লাইনে যুদ্ধ করেছিলেন এবং ইরাকে মারাত্মকভাবে আহত হন।

তিনি বলেন, আইএস ছাড়ার প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি হল, তারা মানুষদের খুন করে। যাদের প্রায় সবাই মুসলমান ছিল।

"আমার কাছে পুরো পরিকল্পনা ছিল না। আমি ভেবেছিলাম আমি তুরস্কে যাব এবং আমার মাকে ফোন করে বলবো যে, 'আমি যে করেই হোক তোমার সাথে দেখা করতে চাই।'

জ্যাক লেটস।
BBC
জ্যাক লেটস।

'পোস্টার বয়'

জ্যাকের বাবা ৫৮ বছর বয়সী জন লেটস এবং ৫৭ বছর বয়সী মা স্যালি লেন, বিচারের মুখোমুখি হন।

অভিযোগ ছিল যে, তাদের ছেলে আইএস এ যোগ দেয়ার পর তারা তাকে অর্থ পাঠাতেন বা অর্থ পাঠানোর চেষ্টা করতেন।

জ্যাকের বাবা মায়ের বিরুদ্ধে তিন দফা টাকা পাঠানোর অভিযোগ উঠলেও আদালতে একটি প্রমাণিত হয়। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থ সহায়তার অভিযোগ দায়ের করা হয়। যাতে তারা দোষী সাব্যস্ত হন।

ব্রিটেনের তাকে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার সুযোগ খুবই কম। তবে "এটা এমন না যে আমি দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়ার জন্য ব্রিটিশ জনগণের কাছে আবেদন করব।"- এমনটাই জানান জ্যাক।

"যদি আমি ব্রিটিশ জনগণের জায়গায় হতাম, তাহলে সম্ভবত আমি দ্বিতীয় সুযোগটি দিতাম না।"

পশ্চিমা নাগরিক, যিনি কিনা ব্রিটেন থেকে এসেছেন, এমন কাউকে আইএসে নিয়োগ দেয়ার পেছনে দলটির আরও বড় উদ্দেশ্য ছিল। আইএস তাকে ব্যবহার করতো অনেকটা পোস্টার বয় হিসেবে। সবাইকে একটা উদাহরণ হিসেবে দেখানোর জন্য।

জ্যাক আইএসের হয়ে যুদ্ধ করার কথা স্বীকার করলেও, তিনি কাউকে হত্যা করেননি বলে দাবি করছেন।

দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায়, তিনি কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন।

আরও পড়তে পারেন:

আইএস জঙ্গিরা কি বাংলাদেশে ফেরত আসছে?

পাঁচ বছর পর আইএস নেতা আল-বাগদাদির ভিডিও কেন?

মামলা লড়তে ব্রিটিশ অর্থ পাবেন আইএস বধূ শামিমা

তিনি বিশ্বাস করেন যে কানাডা তার সবকিছু বিবেচনা করে তাকে সেদেশে প্রবেশের অনুমোদন দেবে।

এবং তারা কানাডার জন্য সিরিয়া ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে এখনও কোন মন্তব্য করেনি, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যারা সিরিয়ায় ভ্রমণ করছে তারা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদে ফেলছে এবং সেটা যুক্তরাজ্যে জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

স্বরাষ্ট্র সচিব সাজিদ জাভিদ এর আগে বলেছিলেন, আইএসকে সমর্থন করার জন্য যারা সিরিয়ায় গিয়েছে তাদের ফেরত আসা ঠেকাতে তিনি কোন "দ্বিধা করবেন না"।

টাইমস-এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে মিস্টার জাভিদ বলেন, "যারা ব্রিটেনের ফিরে এসে এখানকার নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে চায় তাদের থামাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।"

English summary
arrested isis terrorist says Britain is his enemy
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X