ইরান - যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা: মধ্যপ্রাচ্যে আরো ১,০০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইরানের সঙ্গে তারা যুদ্ধ চায় না, তবে সব বিকল্প ব্যবস্থা তাদের বিবেচনায় রয়েছে। গত মাসে আরো একদফা সেনা ও সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল দেশটি।
ইরানের সঙ্গে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে আরো ১,০০০ সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান বলেছেন, ইরানি বাহিনীর শত্রুতামূলক আচরণের পাল্টা জবাব হিসাবে তারা সেনা পাঠানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মার্কিন নৌবাহিনী আরো কিছু নতুন ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে যে, সেগুলো ওমান উপসাগরে তেলের ট্যাংকারে ইরানি হামলার ছবি।
নতুন ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন ইরান ঘোষণা করেছে যে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে তারা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি অনুমোদিত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩০০কেজি পর্যন্ত স্বল্প মানের ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করার পর তারা ইউরেনিয়াম উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে ইরানকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছে চীন এবং পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে না যাওয়ার অনুরোধ করেছে।
আরো পড়ুন:
হরমুজ প্রণালী ইরানের কাছে কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ?
আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা কতটা?
আমেরিকার সাথে যুদ্ধ হলে ইরান ধ্বংস হবে - ট্রাম্প
তেলের ট্যাংকারে হামলার পেছনে ইরানের হাত?
অতিরিক্ত সেনা সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?
মার্কিন সময় সোমবার রাতের দিকে মধ্যপ্রাচ্যে আরো সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান।
একটি বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে লড়াই চায় না। তবে ওই অঞ্চলে আমাদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত সামরিক সদস্যদের নিরাপত্তা আর কল্যাণের জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।"
তিনি বলেছেন, সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সৈন্যদের সংখ্যা বাড়াবে বা কমাবে।
তবে এই অতিরিক্ত সেনা কোথায় মোতায়েন করা হবে, সেসব বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
এর আগে গত মাসেই ১,৫০০ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করার কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর।
তিনি রবিবার বলেছিলেন, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র, তবে সব বিকল্প বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:
বাংলাদেশের জয় নিয়ে ক্রিকেট তারকা, বিশ্লেষকরা যা বললেন
ডিআর কঙ্গোর ভয়ংকর বিষধর সাপের মুখোমুখি
বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা কতটা?
হংকং বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু কে এই জোশুয়া ওং?
নতুন করে কেন উত্তেজনা বাড়ছে?
২০১৫ সালে পারমাণবিক কর্মসূচী সীমিত করতে বিশ্বের পরাশক্তির দেশগুলোর সঙ্গে একটি চুক্তি করে ইরান।
ওই চুক্তি অনুযায়ী, দেশটি তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচী সীমিত রাখবে, যা পারমাণবিক চুল্লির জ্বালানি হিসাবে যেমন ব্যবহার করা হয়, তেমনি অস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহৃত হতে পারে। এর বদলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।
তবে গত বছর ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
এই পদক্ষেপের কারণে বিপর্যয়ে পড়ে ইরানের অর্থনীতি, যা মূলত দেশটির তেল বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। ফলে পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে ইরান।
এরই অংশ হিসাবে সোমবার ইরান ঘোষণা দিয়েছে যে, ২৭শে জুন নাগাদ তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের পরিমাণ চুক্তি সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে ইরান বলছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ইরানকে রক্ষা করতে এখনো ইউরোপীয় দেশগুলোর হাতে 'যথেষ্ট সময়' আছে।
একে 'পারমাণবিক চাঁদাবাজি' বলে বর্ণনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।