
গালোয়ান সংঘর্ষে চিনা সেনার হাতে অলিম্পিক্সের মশাল, ভারতের সমর্থনে কড়া বার্তা আমেরিকার
চিনের সঙ্গে ভারতের চাপা কূটনৈতিক উত্তেজনা সব সময় বিরাজ করে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে চিনকে কড়া বার্তা দিল আমেরিকা। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, চিন ক্রমাগত প্রতিবেশী দেশকে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এই বিষয়ে আমেরিকা উদ্বিগ্ন। শীতকালীন অলিম্পিক্সের মশাল হাতে দেখা যায় গালোয়ান সীমান্তে সংঘর্ষে যুক্ত থাকা চিনা সেনাকে। এই ঘটনার বিরোধিতা করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে আমেরিকা। এই ঘটনাকে উস্কানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন সেনেটররা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শীতকালীন অলিম্পিক্সের আয়োজন করে চিন।

চিনের সিদ্ধান্ত ভয়ঙ্কর ও উস্কানিমূলক
২০২০ সালে গালোয়ান উপত্যকায় চিন ও ভারতের সেনারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। ওই সংঘর্ষে উপস্থিত থাকা এক চিনা সেনাকে বেজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক্সে মশাল হাতে দেখতে পাওয়া যায়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন আমেরিকার সেনেটররা। ফ্লোরিডার সেনেটর মার্কো রুবিও বলেন, অলিম্পিক্সে চিনের রাজনীতিকরণের এটা একটা স্পষ্ট উদাহরণ। ২০২০ সালে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনাকে গেম চর্ট রিলেতে মশাল বাহক হিসেবে বেছে নেওয়া অত্যন্ত 'ভয়ঙ্কর' ও 'উসকানিমূলক' সিদ্ধান্ত। তিনি ভারতের পাশে থাকার বার্তা দেন।

অলিম্পিক্সের ঐতিহ্যকে ব্যবহার করেছে চিন
মার্কিন প্রশাসনের বিদেশি সম্পর্ক কমিটির ব়্যাঙ্কিং সদস্য সেনেটর জিম রিশো চিনের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। টুইটে তিনি বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শীতকালীন অলিম্পিক্সে চিন মশাল বাহক হিসেবে এমন একজনকে বেছে নিয়েছে, যিনি ভারতীয় সেনাদের ওপর অতর্কিতে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ওই চিনা সেনার বিরুদ্ধে ইউঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ভারতের সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করেন বলে অশ্বাস দেন। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পোলেসি জানিয়েছেন, চিনের সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টি রাজনৈতিক স্বার্থে অলিম্পিক্সের ঐতিহ্যকে ব্যবহার করেছে। চিনা সরকারের মদতে যে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, তা ফের একবার প্রমাণিত হয়ে গেল।

চিনকে কূটনৈতিক বয়কট
আমেরিকার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমের বেশ কয়েকটি দেশ চিনা সরকারের বিরোধিতা করেছে। মানবাধিকার ইস্যুতে তারা চিনকে কূটনৈতিকভাবে বয়কট করেছে। অভিযোগ, চিনের অভ্যন্তরে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। চিনের কারাগারে কয়েক লক্ষ ইউঘুর সম্প্রদায়ের মহিলা ও পুরুষ বন্দি রয়েছে। তারমধ্যেই ২০২২ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি শীতকালীন অলিম্পিক্সের আয়োজন করে বেজিং।

গালোয়ান সীমান্তে সংঘর্ষ
২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে ইন্দো-চিন সীমান্তে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেই সময় বিনা প্ররোচনায় চিনা সেনারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করে। ঘটনায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। হামলাকারী চিনা সেনাদের মধ্যে ছিলেন পিপলস লিবারেশন আর্মির কমান্ডার কিউ ফাবাও। তাঁকে বেজিংয়ে আয়োজিত শীতকালীন অলিম্পকে গেম টর্চ রিলেতে মশাল বাহক হিসেবে দেখা যায়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ভারত শীতকালীন অলিম্পিক্সের উদ্বোধনী ও সমাপ্তি অনুষ্ঠান বয়কট করে। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা চিনের নিন্দা করেছে।
বিদ্রোহী সেনা বিধায়কদের 'অযোগ্য’ ঘোষণা করা যেতে পারে? কী বলছে দলত্যাগী আইন