এশিয়ায় সংক্রমণ বাড়লেও সবথেকে বেশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলিই, আশঙ্কিত হু
ধীরে গোটা এশিয়া জুড়েই জাঁকিয়ে বসছে শীত। এদিকে তার মাঝেই বাড়ছে করোনার চোখরাঙানি। এদিকে দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ জোয়ার দেখেছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াও এগোচ্ছে একই পথে। শীতের হাত ধরে গোটা এশিয়াতে করোনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে যখন ক্রমেই বাড়ছে চিন্তা, তখন উল্টোদিকে পশ্চিমী দেশগুলির অবস্থা নিয়েও রীতিমতো চিন্তিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

উদ্বেগ বাড়াচ্ছে হংকং
এদিকে ইতিমধ্যেই কোভিডের 'চতুর্থ পর্বের সংক্রমণ' শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে হংকংও। গত ক'মাস ধরে হংকংয়ে প্রত্যহ আক্রান্তের সংখ্যা ১০-এর নীচে আটকে থাকলেও মঙ্গলবার তা লাফিয়ে হয়েছে ৮০! অন্যদিকে চিনের সাংহাই, তিয়ানজিন এবং মঙ্গোলিয়ার অভ্যন্তরে বেশ কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে কোভিড আক্রান্ত ধরা পড়েছে।

পশ্চিমী দেশগুলির তুলনায় নগণ্য এশিয়ার করোনা প্রাদুর্ভাব
এদিকে বিশ্ব করোনা মানচিত্রে চোখ রাখলেই দেখা যাবে ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা সমস্যা অনেকাটাই পিছনে ফেলেছে এশিয়াকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবারই আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১.২ কোটির গণ্ডি। দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলের থেকে প্রত্যেকদিন প্রায় ১০ গুণ বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে শুধুমাত্র মার্কিন মুলুকের লস অ্যাঞ্জেলস থেকেই। ইউরোপে এখনও প্রত্যহ আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষেরও অধিক।

তৎপরতা বাড়িয়েছে এশিয়ার দেশগুলি
করোনার ব্যাপকতা আটকাতে প্রথম থেকেই যেভাবে এশিয়ার দেশগুলি রুখে দাঁড়িয়েছে তা অভাবনীয়, এমনটাই মত হু-এর বিশেষজ্ঞদের। চিনই এই বিষয়ে অগ্রগণ্য। রবিবার রাতে সাংহাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হঠাৎ করেই করোনা পরীক্ষা হয় প্রায় ১৭,০০০ বিমানকর্মীর। একইভাবে তিয়ানজিন প্রশাসন তিনদিনে প্রায় ২৬ লক্ষ নমুনা পরীক্ষা করেছে বলে জানা যাচ্ছে। মাত্র ২ জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ায় ইতিমধ্যেই মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়ার সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নতুন বিধিনিষেধ জারি হংকং ও দক্ষিণ কোরিয়ায়
হংকংয়ে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আগমনে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে 'সিঙ্গাপুর-হংকং এয়ার বাবল' বন্ধ করে দেওয়া হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে এ বছরের শেষ পর্যন্ত জন-পরিবহন ব্যবস্থা রাত ১০টার পরে ২০% পর্যন্ত কমিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এক জায়গায় ১০ জনের বেশি সমাগমেও কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। অন্যদিকে প্রত্যহ প্রায় ৪০,০০০ স্বাস্থ্যকর্মীর পরীক্ষা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ফলে করোনা মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলি যে যথেষ্ট তৎপর, তা স্পষ্ট।

অসময়ে লকডাউনের বিধি তুলে নেওয়াই সমস্যার প্রধান কারণ ?
রবিবার সিওলে বিধি জারি হওয়ার পাশাপাশি জাপানেও 'যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে' চলছে করোনা মোকাবিলার কাজ। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিদা সুগার নির্দেশে বন্ধ হয়েছে অভ্যন্তরীণ উড়ান, হটস্পটগুলি চিহ্নিত করে জারি হয়েছে কড়া নিয়মাবলী। গোটা গ্রীষ্ম জুড়ে যেখানে এশিয়ার দেশগুলিতে পালন হয়েছে কড়া লকডাউন, সেখানে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলিতে অসময়ে লঘু করা হয়েছে বিধিনিষেধ। আমেরিকায় ভোট-উৎসব পালনের সময়ও ধরা পড়েছে একাধিক ঘটনা। ইউরোপে লকডাউন ওঠার পরেই পর্যটকদের ভিড়ের সঙ্গে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছে করোনার নতুন স্রোত!

আরও খারাপ হতে পারে ইউরোপের অবস্থা, আশঙ্কা হু-র
হু-এর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ডেভিড নাবারো জানিয়েছেন, "এশিয়ার সকল দেশেই কমবেশি নাগরিকরা মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবন পালন করছেন। অন্যদিকে ইউরোপে লকডাউন বলবৎ হলেও অধিকাংশ দেশের সিদ্ধান্ত অসম্পূর্ণ। পাশাপাশি করোনা বিধিও মানুষ যথাযথ ভাবে পালন করছেন না।" তিনি এও বলেছেন, এই অবস্থা চললে ২০২১-এ করোনার ভয়ংকর ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে গোটা ইউরোপে! স্বভাবতই তৃতীয় পর্যায়ের সংক্রমণের ভয়ে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতির দিকে নজর দিচ্ছে ইউরোপের দেশগুলি।
পিকের কাজে ক্ষোভ! উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের ঘোষণা আরও এক 'অপদস্থ' নেতার