পেটে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হয় 'বিয়ার', মদ না খেয়েও বিরল রোগ মদ্যপ প্রমাণিত করল এক ব্যক্তিকে
পেটে 'বিয়ার' তৈরি হয়, মদ না খেয়েও বিরল রোগ মদ্যপ প্রমাণিত করল এক ব্যক্তিকে
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে ২০১৪ সালে উত্তর ক্যারোলিনার ৪৬ বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশি জেরায় আকুতি মিনতি করে নিজের মদ্যপ অবস্থার কথা অস্বীকার করলেও মদ্যপ পরীক্ষণ যন্ত্রে পরীক্ষার তার শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতির কথা জানা যায়।
এদিকে মদ্যপানের পর গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট নির্দেশিকাও রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের। সূত্রের খবর, চল্লিশোর্ধ ওই ব্যক্তি ওই দিন গাড়ি গাড়ি চালানোর সময় মদ্যপানের নির্দিষ্ট সীমারেখা অতিক্রম করেন। এই অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে তিনি ক্রমাগত মদ্যপানের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এমনকি তার পরিবারের সদস্যরাও তার কথায় সহমত প্রকাশ করেননি।
এরপর ২০১৭ সালে নিউইয়র্কের রিচমন্ড বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের এক বিশেষজ্ঞকে ওইদিনের ঘটনার কথা খুলে বলেন ওই ব্যক্তি। পরবর্তীকালে তার উপর নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় তিনি অটো ব্রেউয়ারি সিনড্রোম (এবিসি) নামে এক বিরল রোগের দ্বারা আক্রান্ত। স্যাকারোমাইসেস সেরিভিসিয়া নামক একটি ছত্রাকের উপস্থিতও পাওয়া যায় তার মলে।
এরপরই চিকিত্সকেরা তার এই উদ্ভট রোগের কারণ সম্পর্কে কিছুটা নিশ্চিত হয়ে যান। খাদ্য গ্রহণের পর শরীরের মধ্যে থাকা ওই নির্দিষ্ট ছত্রাক খাবারের মধ্যে উপস্থিত শর্করার সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে তাকে অ্যালকোহলে রূপান্তরিত করে। বিয়ার প্রক্রিয়াকরণের সময়েও এই পদ্ধতির অবলম্বন করতে দেখা যায় বলেও জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা। ফলে তিনি যখনই কোনও শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করেন, তখনই ওই ছত্রাকের উপস্থিতিতে সেটি বিয়ারে পরিণত হয়। এই জাতীয় ছত্রাক 'ব্রিউয়ার ইস্ট’ নামেও পরিচিত।
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে ওই ব্যক্তি জানান ২০১১ সালে হাতের আঙুলের চোটের জন্য এক চিকিৎসকের কাছে গেলে, তিনি তাকে একধরনেরর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তারপর থেকেই তার স্মৃতি ভ্রম ও মাথা ঘোরার মত সমস্যার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় তার শরীরে।
চিকিৎসকদের কথায় ব্রিউয়ার ইস্টের’ সংক্রমণে এই ধরণের রোগ খুবই বিরল। গত ৩০ বছরের চিকিৎসার ইতিহাসে মাত্র ৫ জন রোগীর শরীরে এই বিরল রোগটির দেখা মেলে। যদিও ওই ব্যক্তিটি বর্তমানে জানান ২০১৭ সালের পর নতুন করে চিকিৎসার পর এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এমনকি ওই রোগের কোনও উপশমের দেখাও তার শরীরে মেলেনি।