
কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ থেকে বিলাসবহুল জীবন, বার বার বিতর্কের মুখে সুনক পত্নী অক্ষতা মূর্তি
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ঋষি সুনক। ঋষি সুনকের ভারতীয় যোগ স্পষ্ট। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁর স্ত্রী তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির মেয়ে। ঋষি সুনক নিয়মিত বেঙ্গালুরুতে আসেন। ঋষি সুনকের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে বার বার উঠে আসছে তাঁর ভারতীয় ব্রিটিশ স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির নাম।

অক্ষতা মূর্তির জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতে। তিনি একজন ব্রিটিশ ভারতীয় ফ্যাশন ডিজাইনার। তবে নিজের কর্মজীবনে অক্ষতা মূর্তি বিশেষ সাফল্য না পেলেও ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে হিসেবে তিনি বিলিনিয়র সম্পত্তির মালিক। বার বার বিতর্কে উঠে এসেছে তাঁর বিলাস বহুল জীবন। এমনকী যে সময়ে ব্রিটেনে আর্থিক সঙ্কটের সময়ও তাঁর বিলাস বহুল জীবনযাত্র ইংল্যান্ডের মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার প্রভাব ঋষি সুনকের ভাবমূর্তির ওপর পড়ে।
২০১২ সালে ফরচুন পত্রিকায় ১২ জন উদ্যোগপতির নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। তারমধ্যে দুই জন মার্কিন নাগরিক ছিলেন না। একজন হলেন এন নারায়ণমূর্তি। ১৯৭৪ সালে তিনি পূর্ব ইউরোপে চার রাতের জন্য বন্দি ছিলেন। অনেকে মনে করেন নারায়ণ মূর্তির জীবনে সেটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট। সুনকের শাশুড়ি অক্ষতার মা সুধা মূর্তি ছিলেন টটাটা মোটরসে প্রথম মহিলা প্রযুক্তি বিদ।
সুধা মূর্তি ইনফোসিসের সহ প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়, একজন দৃঢ়চেতা মহিলা ও সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত। প্রথমে তিনি টাট মোটরসে প্রযুক্তিবিদ হিসেবে চাকরি পাননি। কেন মহিলাদের নেওয়া হয় না টাটা মোটরসে, তা জানতে চেয়ে তিনি চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখেছিলেন। তারপরেই তাঁকে টাটা মোটরসে প্রথম মহিলা প্রযুক্তিবিদ হিসেবে তিনি যোগদেন। তিনি 'প্রিয় ঠাকুমা' হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে পরিচিত। তিনি একজন লেখিকা হিসেবেও পরিচিত। দুঃস্থদের সেবা করাই তাঁর জীবনের মূল ব্রত।
কঠোর অনুশাসনে সুধা মূর্তি রেহান ও অক্ষতা মূর্তিকে লালন-পালন করেন। ছোটবেলায় অক্ষতা মূর্তির টেলিভিশন দেখার অনুমতি ছিল না। অন্যান্য সহপাঠীদের মতো অক্ষতা ও তাঁর ভাই অটোতে করে স্কুলে যেতেন। অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাত্রায় নিজের ছেলে মেয়েকে সুধা মূর্তি বড় করেন।
অন্যদিকে, ঋষি সুনক একজন ডাক্তারের ছেলে ছিলেন। স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ পড়ার সময় সুনকের সঙ্গে অক্ষতার আলাপ হয়। প্রথম থেকেই সুনক মেধাবী ছাত্র ছিলেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে পাস করেন। ২০০৯ সালে ভারতে অতি সাধারণভাবে অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে ঋষি সুনকের বিয়ে হয়। বিয়েতে এক হাজার জন অতিথি ছিলেন। সেখানে যেমন ছিলেন খেলোয়ার জগতের ব্যক্তিত্ব। তেমনি ছিলেন রাজনীতিবিদ।
অক্ষতা মূর্তির বিরুদ্ধে একবার কর ফাঁকি দেওয়র অভিযোগ উঠেছিল। পরে স্বামীর ভাবমূর্তি বজায় রাখতে তিনি বলেছিলেন, বিশ্বব্যাপী আয়ের কর তিনি ব্রিটেন সরকারকে দেবেন।
ব্রিটেনে শাসকের কুর্সিতে ভারতীয় বংশোদ্ভুত, কী বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট