হিমবাহ গলছে জলবায়ু পরিবর্তনে! বেরিয়ে এল বিমানের ধ্বংসাবশেষ, মানুষের দেহাংশও
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গলতে শুরু করেছে হিমবাহ। আর সেই বরফ গলতেই বেরিয়ে আসছে বিমানের ধ্বংসাবশেষ। মানুষের দেহাংশও উদ্ধার হল সেই হিমবাহ থেকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা সুই আল্পসে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গলতে শুরু করেছে হিমবাহ। আর সেই বরফ গলতেই বেরিয়ে আসছে বিমানের ধ্বংসাবশেষ। মানুষের দেহাংশও উদ্ধার হল সেই হিমবাহ থেকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা সুই আল্পসে। সুইস আল্পসের হিমবাহ গলতেই বেরিয়ে আসছে একের এর এক জিনিস। অন্তত ৫০ বছর আগে ঘটা দুর্ঘটনায় বিমানের ধ্বংসাবশেষ সামনে এসেছে।
৫০ বছর আগে ছোট্ট বিমানটি হিমবাহে ভেঙে পড়েছিল
সুইস আল্পসের হিমবাহ গলতে শুরু করেছিল অনেকদিন ধরেই। কিন্তু তা গলে যাওয়ার পর যে এমনই ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যাবে তা ভাবা যায়নি। হিমবাল যত গলছে, ততই আশ্চর্যের প্রকাশ পাচ্ছে। সম্প্রচি যে বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া পাওয়া গিয়েছে মানুষের দেহাংশও। মনে করা হচ্ছে ৫০ বছর আগের সেই ছোট্ট বিমানটি হিমবাহে ভেঙে পড়েছিল।
১৯৬৮ সালে ৩০ জুন পাইপার চেরোকি ভেঙে পড়েছিল
জানা গিয়েছে, ১৯৬৮ সালে ৩০ জুন পাইপার চেরোকি নামের ছোট্ট বিমান সুইজারল্যান্ডের আল্পস হিমবাহে ভেঙে পড়েছিল। হিমবাহ থেকে উদ্ধার হওয়া বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও মানুষের দেহাংশ সম্পর্কে এই তথ্য জানানো হয়েছে সুইস সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন সার্ভিসকে, জানানো হয়েছে ক্যান্টনাল পুলিশকেও।
বিমান, মানুষের দেহ- সবকিছুই সংরক্ষিত থাকে
হিমবাহবিদরা জানিয়েছেন, হিমবাহের বরফ প্রায় সবকিছু সংরক্ষণ করে। বহু বছর আগে ওই হিমবাহে আটকে পড়া যে কোনও জিনিস অবিকৃত থাকতে পারে। সে বিমান হোক বা গাছপালা, কিংবা প্রাণীর অবশিষ্টাংশ পর্বতারোহীদের ফেলে যাওয়া সরঞ্জাম এবং আবর্জনা বা মানুষের দেহ- সবকিছুই সংরক্ষিত থাকে।
আল্পস হিমবাহের একাংশ ভেঙে অভিযাত্রীদের মৃত্যু হয়!
কিছুদিন আগেই আল্পস হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়েছিল। সেই হিমবাহে চাপা পড়ে বেশ কিছু অভিযাত্রীর মৃত্যু হয়। সেই মৃতদেহও এখন বেরিয়ে আসতে পারে। সুইস গ্লেসিওলজিস্ট অ্যান্দ্রিয়াস লিন্সবোয়ে জানান, গ্রীষ্মকালে আল্পসের বরফ গলতে শুরু করে। এখন জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে আরও বেশি করে বরফ গলছে। ফলে ওই হিমবাহে আটকে পড়া যাবতীয় বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।
ওই হিমবাহে প্রায় ৩০০ জন নিখোঁজ হয়েছেন
আরও জানা গিয়েছে গত শত্বাদীতে আল্পস পর্বতের ওই হিমবাহে প্রায় ৩০০ জন নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই সম্ভবত মারা যান। তাঁদের দেহাংশ হিমবাহের মধ্যে আবৃত থকাতে পারে। তাপমাত্রা বেড়ে চলায় সুইজারল্যান্ডে গলে যাওয়া হিমবাহগুলি থেকে মানব দেহ বেরিয়ে আসছে। বেরিয়ে আসছে বিমান-সহ বিভিন্ন জিনিস। হেলিকপ্টারে করে দেহাবশেষ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়াও হয়েছে এর মধ্যে।
রেকর্ড উচ্চতার হিমবাহ গ্রীষ্মে ৩৫০০ মিটারে নেমে আসে
শুধু আল্পস হিমবাহেই নয়, ব্রিটানিয়া পাহাড় থেকেও অনেক দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছে। ওই পাহাড়ে শিবির থেকে যাঁরা পর্বতারোহণ শুরু করেন, তাঁদের মধ্যেই কেউ আবিষ্কার করেছিলেন মানুষের দেহাংশ পড়ে থাকতে। ম্যাটারহর্নের উত্তর-পশ্চিমমে জারম্যাট রিসর্টের কাছে স্টকজি হিমবাহে আরও একটি মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৯২৫ থেকে নিখোঁজ হওয়া প্রায় ৩০০ জনের তালিকা রয়েছে। জুলাইয়ের তাপপ্রবাহের সময় ৫১৮৪ মিটারের রেকর্ড উচ্চতার হিমবাহ গ্রীষ্মে ৩৫০০ মিটারে নেমে আসে। তখনই প্রকট হয় অনেক কিছু।