এক জীবনের বিনিময়ে শত জীবন রক্ষা, সুনামিতে ‘হিরো’ এয়ার-ট্রাফিক কন্ট্রোলার
নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ইন্দোনেশিয়ার সুনামিতে হিরোর মর্যাদা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার অ্যানথোনিয়াস গুনাওয়ান আগুং। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কর্তব্যে অবিচল থাকলেন তিনি।
নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ইন্দোনেশিয়ার সুনামিতে হিরোর মর্যাদা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার অ্যানথোনিয়াস গুনাওয়ান আগুং। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কর্তব্যে অবিচল থাকলেন তিনি। বিমান উড়ে না যাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর হাতছানি জেনেও তিনি পালিয়ে গেলেন না। উড়ান নিশ্চিত করে শেষে যখন জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ঝাঁপ দিলেন তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
শেষ রক্ষা হল না বিমানবন্দরের ওই ট্রাফিক কন্ট্রোলারের। ইন্দোনেশিয়ার ভয়ঙ্কর সুনামির গ্রাসে হারিয়ে গেলেন চিরতরে। সুনামি হানা দেওয়ার পর তিনি যাত্রী সুরক্ষার দায়িত্বে অবিচল থাকলেন। শত শত যাত্রী বাঁচলেন, কিন্তু তিনি শত জীবন বাঁচিয়ে তলিয়ে গেলেন অজানার দেশে।
শুক্রবার রাতে পলু বিমানবন্দরে যাত্রীবাহী বিমান ওড়ানোর পর আনথোনিয়াস গুনাওয়ান আগুং-এর মৃত্যু ঘটেছে বলে জানান এয়ার নেভিগেশনের ইন্দোনেশিয়ার মুখপাত্র ইয়াহানস সিরাইত। ২৮ সেপ্টেম্বর পর পর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, যার ফলে উপকূলের সমুদ্রপথে বিশাল তরঙ্গের সৃষ্টি হয়েছিল। সুনামির আকারে তা আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে। তারপর ভাসিয়ে নিয়ে যায় ইন্দোনিশার বিস্তীর্ণ এলাকাকে।
আগুং বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন এবং হিরোর মর্যাদা পাচ্ছেন এই কারণেই যে, সবাই যখন নিজের জীবন বাঁচাতে চলে গিয়েছিল, আগুং কিন্তু অবিচল ছিল কর্তব্যে। তাঁর জীবনের বিনিময়ে বিমানটিকে নিরাপদে বিমানবন্দর থেকে উড়িয়ে দেওয়াই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। বিমান আকাশে ওড়ার পরই সাহসী যুবক নিজের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভাগ্য তাঁর সঙ্গে ছিল না।
ভূমিকম্প ও সুনামির জেরে টাওয়ার ভেঙে পড়ায় টাওয়ারের চারতলার জানলা দিয়ে লাফাতে বাধ্য হয় আগুং। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, সেখানে মারা যান তিনি। এয়ার নেভিগেশনের ইন্দোনেশিয়ার মুখপাত্র বলেন, নিজের জীবনের বিনিময়ে শত শত জীবন দিয়ে গেলেন আগুং। তাঁর সাহসের কথা অমর অক্ষরে লেখা থাকবে। উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ার সুনামি চার শতাধিক মানুষের জীবন কেড়ে নেয়।