২০১২ সালে বায়ুদূষণ প্রাণ নিয়েছে ৭০ লাখ মানুষের, বলল 'হু'
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঘরের ভিতর ও বাইরের দূষণ এখন সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা তৈরি করছে। সবাই এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উন্নত ও উন্নয়নশীল, উভয় দেশেই এই সমস্যা প্রকট হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তরফে মারিয়া নেইরা বলেন, ২০১২ সালে যে অকাল মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটেছে, তার প্রতি আটজনের একজনই মারা গিয়েছে বায়ুদূষণের শিকার হয়ে।
বায়ুদূষণকে দু'ভাগে ভাগ করে দেখানো হয়েছে। ঘরের ভিতরের দূষণ ও বাইরের দূষণ। ঘরের ভিতরে বা ঘরোয়া দূষণ সবচেয়ে বেশি গ্রামে। কারণ গ্রামে এখনও কাঠ, ঘুঁটে, শুকনো পাতা ইত্যাদি জ্বালিয়ে রান্নাবান্না করা হয়। এ থেকে তৈরি হয় বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস। ফুসফুসের ক্ষতি হয়। চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্তত ৩০ লক্ষ মানুষ ঘরোয়া দূষণের শিকার হয়ে মারা গিয়েছে ২০১২ সালে।
ঘরোয়া দূষণ শহরাঞ্চলে কম ঠিকই। কিন্তু এখানে আবার ঘরের বাইরের দূষণ থেকে ক্ষতি হয় শরীরের। শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণের কারণ হল গাড়ি, কলকারখানার ধোঁয়া। যতদিন যাচ্ছে, শিল্পায়ন বাড়ছে। শিল্পায়ন বাড়ায় কর্মসংস্থান হচ্ছে। মানুষের হাতে কাঁচা টাকা আসছে। ফলে গাড়ি কেনার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ। ৪০ লক্ষ মানুষ এর জেরে মারা গিয়েছে ২০১২ সালে।
রিপোর্টে আরও দাবি, বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, ত্বকের ক্যান্সার ইত্যাদি বেড়ে গিয়েছে মারাত্মকভাবে। দূষিত এলাকায় যে শিশুরা জন্মাচ্ছে, তারা ছোটো থেকে ফুসফুসের রোগের ভুগছে।
বায়ুদূষণের জেরে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। দক্ষিণ এশিয়া অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি। আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অর্থাৎ থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ইত্যাদি। উন্নত দেশ জাপানও রয়েছে এই তালিকায়। ২০০৮ সালেও বায়ুদূষণের জেরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩২ লক্ষ। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, কী ব্যাপক পরিমাণে দূষণ ছড়িয়েছে পরবর্তী চার বছরে।
'হু' বলেছে, বায়ু হল এক সর্বজনীন সম্পদ। তাই বায়ুদূষণ রোধ করতে সবার ভূমিকা আছে। একজন ব্যক্তি বা একটি দেশের সরকারের পক্ষে বায়ুদূষণ রোধ করা সম্ভব নয়। তারা আরও জানিয়েছে, খুব শীঘ্র বিশ্বের ১৬০০টি দূষিত শহরের একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।