
বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর রাখা হচ্ছে কড়া নজরদারি
আমরা প্রায়শই মনে করি যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা স্বাধীন এবং ইন্টারনেটের স্বাধীনতা আমাদের পছন্দ, আবেগ এবং আরও কিছু বিষয়কে গোপন করে রাখে। যদিও নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে এই সত্য একেবারেই মিথ্যা। যেটা ঘটে তা হল গোটা বিশ্বের নেটিজেনদের ওপর নির্বাচন ও সরকারি আধিকারিকেরা ক্রমাগত নজরদারি চালিয়ে চলেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর চলছে সরকারি নজরদারি
ফ্রিডম হাউস নামে এক সংস্থা এই সমীক্ষা চালায়, যার নাম দেওয়া হয় ২০১৯–এ নেটের স্বাধীনতা। তারা তাদের সমীক্ষায় জানতে পেরেছে, নির্বাচনের সময়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় হস্তক্ষেপের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। এমনকী নেটিজেনদের ওপর কড়া নজর রাখা হয়। ৬৫টি দেশের মধ্যে ৪০টি দেশকে নিয়ে ফ্রিডম হাউস উন্নত সামাজিক মিডিয়া নজরদারি প্রোগ্রাম শুরু করে। যেখানে রাশিয়া এবং এজিপ্টকে 'স্বাধীন নয়’ বিভাগে রাখা হয়, অন্যদিকে মোট ৮৯ শতাংশ অর্থাৎ ৩ বিলিয়ন মানুষ এমন রয়েছে, যাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নজর রাখা হয়েছে। যা সতিই অভাবনীয়। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ইরানের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর ৪২ হাজার সেনা প্রতিনিধির দল কড়া নজরদারি রেখেছে। চীনও একইভাবে এক সংস্থার মধ্য দিয়ে দেশের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নজর রেখেছে। চীনের সেম্পসিয়ান সংস্থা জানিয়েছে, তাদের দেশের ২০০ মিলিয়ন মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নজরদারি চলছে।
বাদ নেই আমেরিকা–বাংলাদেশও
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল যে তাদের ইন্টারনেট পদ্ধতি একেবারেই স্বাধীন। তবে সেই দাবি মোটেও ঠিক নয়। জানা গিয়েছে, আমেরিকা ইজরায়েলি সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম কলব্রাইট নামে এক সংস্থাকে দিয়ে দেশের ৩৫ বিলিয়ন মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নজর রাখছে। ৩০ মার্কিনি ডলারের বিনিময়ে ওই সংস্থা এমন এক টুল তৈরি করেছে যা সহজে নেটিজেনদের ফোন হ্যাক করে সব ধরনের তথ্য হাতিয়ে নিতে পারবে। সমীক্ষায় এও প্রমাণিত যে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান তথা র্যাব, সন্ত্রাস–বিরোধী সরকারি প্রশাসনও মানবাধিকারের আইন লঙ্ঘন করে তাদের দেশের মানুষের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে। ফ্রিডম হাউস জানিয়েছে, ৬৫টি দেশের মধ্যে ৪৭টি দেশের সোশ্যাল মিডিয়া রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে নজরবন্দী।