কনিষ্ঠতম সেনেটর থেকে প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট! একনজরে বাইডেনের ৫০ বছরের পথচলা
১৯৭৩ সালে ডেলাওয়ারের থেকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ সেনেটর নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ এরপর থেকে প্রায় পাঁচ দশক ধরে সাধারণের জন্য কাজ করেছেন৷ জো বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মঞ্চে প্রায় অর্ধ শতক পেরিয়েছেন এবং এবার প্রাক্তন এই ভাইস প্রেসিডেন্টের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন সফল হতে চলেছে৷

অভূতপূর্ব সময়কালে তিনি প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন
তবে আমেরিকার ইতিহাসের এক অভূতপূর্ব সময়কালে তিনি প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন৷ কারণ, বিশ্বব্যাপী প্যানডেমিক, অর্থনৈতিক পতন ও নাগরিক অশান্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে এই দেশকে। ২০২০ সালের এই লড়াই আসলে প্রেসিডেন্টের হওয়ার জন্য বাইডেন তৃতীয়বার প্রার্থী হন৷ তিনি ১৯৮৮ সালে প্রথমবার চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু চুরির অভিযোগ বাদ পড়েছিলেন। ২০০৮ সালে আইওয়া কোকাসের এক শতাংশেরও কম অংশ অর্জনের পরে তিনি দ্বিতীয় প্রচেষ্টা করেন ২০০৮ সালে৷

দীর্ঘ সময়ের সেনেটর এবং দুই বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট
৭৮ বছর বয়সের বাইডেন নিজেকে দীর্ঘ সময়ের সেনেটর এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছিলেন৷ তার সঙ্গে যুক্ত হয় বিশৃঙ্খল ও ক্রমবর্ধমান বিপজ্জনক বিশ্বে নিজেকে একটি ধীরস্থির নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি৷ তবুও এই লক্ষ্যে বাইডেনের পথ মসৃণ ছাড়া কিছু ছিল না।

ওবামা এবং বাইডেনের সম্পর্ক খুব ভালো
২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে বারাক ওবামার অধীনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু'বার দায়িত্ব পালন করার জন্য তিনি তাঁর পরিচিত জায়গা হোয়াইট হাউসে ফিরে আসবেন। ওবামা এবং বাইডেনের সম্পর্ক খুব ভালো ছিল, যখন তাঁরা ৮ বছর হোয়াইট হাউজে ছিলেন৷ ওবামা একবার তাঁদের ইন্টারনেট-আচ্ছন্ন 'ব্রোমান্স' নিয়ে কৌতুকও করেছিলেন।

২৯ বছর বয়সে প্রথমবার সেনেটে নির্বাচিত হয়েছিলেন
ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য বাইডেনের দীর্ঘ পথ এবং এখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর জয়, তাঁর অনেক ব্যক্তিগত বিপর্যয় ও বহু পেশাদার ভুলকে বিস্মৃত করেছে। বাইডেন ১৯৭২ সালে ২৯ বছর বয়সে প্রথমবার সেনেটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। জয় উদযাপনের ঠিক এক মাস পরে, তাঁর স্ত্রী এবং শিশু কন্যা একটি ট্র্যাক্টর-ট্রেলারের সঙ্গে দুর্ঘটনায় মারা যান।

বাইডেনের বড় ছেলে বিউ ব্রেন ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন
বাইডেনের দু'জন শিশুপুত্র - বিউ এবং হান্টারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আর হাসপাতালেই বাইডেন প্রথমবারের মতো সেনেটর হিসাবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তিনি তাঁর প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করার কয়েক মাস পর বাইডেন দু'টি প্রাণঘাতী মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজমিতে আক্রান্ত হন। তখন চিকিৎসকরা তাঁকে বলেছিলেন যে হোয়াইট হাউসের লড়াই তাঁর মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে৷ ২০১৫ সালের মে মাসে বাইডেনের বড় ছেলে বিউ বাইডেন ব্রেন ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন।

এই মৃত্যু বাইডেনের রাজনৈতিক জীবনকে থামিয়ে দিয়েছিল
এই মৃত্যু বাইডেনের রাজনৈতিক জীবনকে থামিয়ে দিয়েছিল৷ তিনি আর ফিরে আসবেন কি না সে বিষয়ে অনেকেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েন। পাঁচ বছর পর বাইডেন তাঁর করুণ অতীত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন৷ তিনি আমেরিকানদের জানিয়েছেন যে এটা তাঁকে এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করতে সহায়তা করেছে৷

সেনেটে ছয় বার জিতেছিলেন
সেনেটে ছয় বার জিতেছিলেন৷ তাছাড়া বাইডেন সেনেটের বিচার বিভাগীয় ও বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সভাপতির পদেও ছিলেন৷ ফলে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত বিষয়গুলিতে দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন শুনানির সভাপতিত্ব করেন। এরপর ২০২০ সালের আগাস্টে, বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের প্রাথমিক লড়াই জিতে আনুষ্ঠানিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মান্যতা পান৷ ক্যালিফোর্নিয়া সেনেটার কমলা হ্যারিসকে তাঁর রানিং মেট হিসেবে মনোনীত করেন৷ একটি প্রধান দলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য কমলাই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী৷ ৩ নভেম্বরে সেই নির্বাচনে জেতেন বাইডেন। আর ২০ জানুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথগ্রহণ করেন।