রেকর্ড সংখ্যায় হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা, ৫.৮ লক্ষ একদিনে আক্রান্ত, ওমিক্রনে কাবু আমেরিকা
করোনা ভাইরাস আপডেট আমেরিকার
আমেরিকায় কোভিড–১৯ সংক্রমণের ব্যাপক বৃদ্ধির প্রভাব দেখা দিয়েছে শিশুদের মধ্যে। রেকর্ড সংখ্যায় শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে যে আগামী সপ্তাহেই ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে যে হাসপাতালে ভর্তি বেশিরভাগ শিশুদেরই টিকা নেওয়া নেই।
একদিনে আক্রান্ত ৫,৮০,০০০
আমেরিকা নিজেদেরই রেকর্ড ভেঙে একদিনে ৫,৮০,০০০ নতুন কোভিড কেসের সাক্ষী থেকেছে। ফিলডেলফিয়ার শিশুদের হাসপাতালের সংক্রমক-রোগের বিশেষজ্ঞ ডাঃ পল অফিট বলেন, 'এটা সত্যিই মন ভাঙার মতো ঘটনা।' তিনি আরও বলেন, 'গত বছর এটা রোধ করা যথেষ্ট কঠিন ছিল, কিন্তু এখন আপনি জানেন যে আপনার কাছে এই সমস্ত প্রতিরোধ করার একটি উপায় আছে।' আমেরিকার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথায়, ২২-২৮ ডিসেম্বরের সপ্তাহে ১৭ বছর ও তার নীচে থাকা ৩৭৮ জন শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর এক সপ্তাহ আগে যে সংখ্যা ছিল তার থেকে ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এই সপ্তাহটিতে। সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে মহামারির সময় দৈনিক হাসপাতালে ভর্তির গড় সংখ্যা ছিল ৩৪২ বলে জানিয়েছে সিডিসি।
শিশুরা কম আক্রান্ত
সিডিসি জানিয়েছে, এটা খুবই আশাপ্রদ খবর যে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে খুব কম শিশুই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বরং ডিসেম্বরের একই সপ্তাহে প্রতিদিন ১০,২০০ জন করে সব বয়সের করোনায় আক্রান্তরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে গরমের সময় যারা ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছিল তাদের তুলনায় তরুণরা কম অসুস্থ হয়েছে।
একাইক নিষেধাজ্ঞা জারি
মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আমেরিকাবাসীকে আগামী সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন কারণ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জেরে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। যার ফলে হাসপাতাল, স্কুল ও অন্যান্য ক্ষেত্রের দৈনিক জনজীবনে প্রভাব পড়তে পারে। কোভিড-১৯ কেসে আমেরিকা রেকর্ড করার পরই এই সতর্কতা জারি করা হয়। ইতিমধ্যেই ফেডারেল আধিকারিকরা ভ্রমণ সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করেছে এবং আগামী সপ্তাহ থেকে ১২-১৫ বয়সীদের জন্য বুস্টার ডোজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। জানা গিয়েছে, টানা দ্বিতীয় দিনেও, সাতদিনের গড় সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আমেরিকায় নতুন করোনা কেস রিপোর্ট হয়েছে ২৯০,০০০টি।
ওমিক্রন কেস বাড়বে আমেরিকায়
এই
সংখ্যা
অনুসারে
এই
দেশের
কমপক্ষে
১৮টি
রাজ্য
এবং
পুয়ের্তো
রিকো
নতুন
কেসের
জন্য
মহামারি
রেকর্ড
স্থাপন
করেছে।
মেরিল্যান্ড,
ওহিও
এবং
ওয়াশিংটন,
ডি.সি.-তেও
রেকর্ড
হাসপাতালে
ভর্তির
ঘটনা
ঘটেছে
কারণ
সামগ্রিক
ইউএস
কোভিড-১৯
হাসপাতালে
ভর্তির
সংখ্যা
২৭
শতাংশ
বেড়েছে।
তবে
বিশেষজ্ঞরা
জানিয়েছে
যে
আগামী
সপ্তাহে
ওমিক্রনের
জন্য
কেস
সংখ্যা
বাড়বে
যার
প্রভাব
পড়বে
সমাজের
সব
ক্ষেত্রে।
ওমিক্রন আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে
প্রসঙ্গত, বছর শেষে করোনার নয়া আতঙ্ক বিশ্বজুড়ে। আমেরিকা সহ বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ, একমাসেই বিশ্বের ১১৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট। আমেরিকার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াতেও করোনার বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে ওমিক্রনে মৃত্যুও হয়েছে। একাধি দেশে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ব্রিটেনে কোভিড সংক্রমণে নতুন রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় সে দেশে আক্রান্ত ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৭ জন। বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। এর পাশাপাশি, ব্রিটেনে উদ্বেগ বাড়িয়ে ছড়াচ্ছে ওমিক্রনও। ফ্রান্সেও বেলাগাম করোনা পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৮ হাজার।এইসব দেশের পাশাপাশি ভারতেও ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়ছে। দেশের দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে। উদ্বেগ আর বাড়িয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা। খুব শীঘ্রই বিশ্বজুড়ে করোনার সুনামি আসতে চলেছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস অ্যাডানম গ্যাব্রিয়েসাস।