পুড়ে খাক আস্ত আমাজন, বিশ্বের কোপে ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট
নজির বিহীন অগ্নিকাণ্ড। রেকর্ড গতিতে পুড়ে খাক বিশ্বের সর্ববৃহৎ চিরহরিৎ বনাঞ্চল।
নজির বিহীন অগ্নিকাণ্ড। রেকর্ড গতিতে পুড়ে খাক বিশ্বের সর্ববৃহৎ চিরহরিৎ বনাঞ্চল। যে আমাজন নিয়ে অতোদিন গর্ব ছিল ব্রাজিলের। সেই আমাজনই আজ নিঃস্ব হতে চলেছে। চিন্তায় ঘুম উড়েছে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের। সমালোচনার কোপে প্রায় কোনঠাসা হয়ে গিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট।
কী করে লাগল আমাজনে আগুন?
বিশ্বের ২০ শতাংশ অক্সিজেন যোগায় এই আমাজন বনাঞ্চল। কোনওভাবেই এই বনাঞ্চল নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। এমনই পণ করেছিলেন পরিবেশকর্মীরা। কিন্তু তাঁদের শত চেষ্টাতেও লাভ হল না। আগুনে গ্রাসে শেষ হতে বসেছে এই চিরহরিত বনাঞ্চল। ব্রাজিল সরকারের দাবি বনভূমিতে বসবাসকারী আদিবাসী কৃষকরাই প্রথম আগুন ধরিয়েছিল বনে। সেটি যে এই ভয়ঙ্কর আকার নেবে সেটা বুঝতে পারেননি কেউ।
কেন লাগল আগুণ?
আমাজনে আগুন লাগার অন্যতম কারণ নাকি রুক্ষ শুষ্ক আবহাওয়া। যদিও পুরোটার জন্য দায়ী অনিয়ন্ত্রিত বৃক্ষছেদন। আমাজনের বানাঞ্চলে বেলাগাম গাছ কাটা চলেছে। কৃষিকাজ আর খনির জন্য গাছ কাটায় কোনও রেয়াত করা হয়নি। এমনকী সরকারের তরফেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেকারণেই আমাজনে বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটাই কমেছে। প্রখর গ্রীষ্মের সময় বর্ধিত হয়েছে। রুক্ষ আবহাওয়া ইন্ধন দিয়েছে আগুনে। তাই মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়েছে বাকি জঙ্গলে। এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে বেশ চাপে রয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। সুনির্দিষ্ট পরিবেশ নীতি না রাখার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আমাজনের ঠিক কোথায় লেগেছে আগুন?
ব্রাজিলের রনডোনিয়া এবং আকরের দিকের অংশেই প্রথম আগুন লাগে। পরে সেটি ছড়িয়ে পড়েছে। গোটা এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। সূর্যের আলো বোঝা যাচ্ছে না। সাও পাওলো এবং আটলান্টিক উপকূলের হাজার হাজার মাইল দূরে ছড়িয়ে পড়েছে সেই ধোঁয়া। ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পেস রিসার্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে ৯৫০০ টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে আমাজনে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৭২,৮৪৩টি জায়গায় আগুন ধরানো হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকেই নাকি আমাজনে আগুন লাগানোর ঘটনা দ্বিগুণ হারে বেড়েছে।
এতোটাই বিধ্বংসী এই অগ্নিকাণ্ড যে নাসার উপগ্রহ থেকে ধরা পড়েছে সেই ছবি। উদ্বেগে রয়েছেন পরিবেশবিদরা। বিশ্ব উষ্ণায়ণের প্রভাব যে ভাবে প্রতিবছর বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি যে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে আমাজনের এই অগ্নিকাণ্ড তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। পৃথিবীর শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। কয়েকদিন আগেই গ্রিনল্যান্ডে এক দিনে কয়েক বিলিয়ন বরফ গলে গিয়েছে। তারপরেই আমাজনের অগ্নিকাণ্ড।