কাবুলে তালিবানদের অ্যাম্বুলেন্স বোমা হামলায় নিহত ৯৫
বিস্ফোরক ভর্তি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পুলিশের একটি তল্লাশী চৌকির কাছে হামলাকারীরা বিস্ফোরণ ঘটায়।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শনিবারে অ্যম্বুলেন্স বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন ৯৫ জন; আহত হয়েছেন আরো ১৫৮ জন।
বিস্ফোরক ভর্তি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পুলিশের একটি তল্লাশী চৌকির কাছে হামলাকারীরা বিস্ফোরণ ঘটায়। তল্লাশী চৌকিটি এমন একটি এলাকার যেখানে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও সরকারী অফিস রয়েছে।
হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গীগোষ্ঠী তালিবান।
ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবন। তবে, বিস্ফোরণে পথচারীদের অনেকেই হতাহত হয়েছেন।
এক সপ্তাহ আগে কাবুলের একটি হোটেলে তালিবানদের বোমা হামলায় মারা যান ২২ জন।
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সহকারী মুখপাত্র নাসরাত রাহিমি বলেছেন, একজন অসুস্থ্য ব্যক্তিকে নিকটস্থ জমহুরিয়াত হাসপাতালে নেয়ার কথা পুলিশকে বলে হামলাকারীরা নিরাপত্তা তল্লাশী দিয়ে প্রবেশ করে।
আফগানিস্তান এই আক্রমণকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। জঙ্গীদের মদদ দেয়ার আভিযোগে পাকিস্তানেরও সমালোচনা করেছে আফগানিস্তান সরকার।
তবে পাকিস্তান এই হামলায় জড়িত জঙ্গীদের সহায়তা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি হামলায় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক বলে অভিহিত করেছে।
এই হামলায় হতাহতদের স্মরণে শনিবার রাতে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের বাতি নিভিয়ে রাখা হয়।
অক্টোবরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েকটি বোমা হামলায় ১৭৬ জন মারা যায় আফগানিস্তানে। দেশটির নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিল তালিবানদের আক্রমণের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
এর আগে মে'তে কাবুলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মারা যায় ১৫০ জন। তালিবানরা ঐ হামলার দায় স্বীকার না করলেও তাদের সাথে সম্পৃক্ত হাক্কানি নেটওয়ার্ক'কে অভিযুক্ত করে আফগান সরকার।
কারাএই তালিবান?
- সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ শেষে আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধের পর ১৯৯৬ এ কট্টরপন্থী ইসলামিক গোষ্ঠী তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে। এর ৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তান দখল করলে তালিবানরা পরাজিত হয়। তবে শক্তিসঞ্চয় করে ফিরে এসে কিছু বিশেষ এলাকার নিয়ন্ত্রণ দখল করে তারা।
- ক্ষমতায় এসে শারিয়া আইনের নৃশংস সঙস্করণ অনুসরন করে। জনসম্মুখে মৃত্যুদন্ড ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটার মত শাস্তিপদ্ধতি প্রচলন করে তারা।
- পুরুষদের বাধ্যতামূলকভাবে দাড়ি রাখতে ও নারীদের বূরকা পড়তে হোতো। টেলিভিশন, সঙ্গীত ও সিনেমা নিষিদ্ধ ছিল।
- আফগানিস্তান থেকে উচ্ছেদের আগে ও পরে আল-কায়েদা নেতাদের আশ্রয়দাতা ছিল তারা।
- জাতিসংঘের ভাষ্যমতে ২০১৬ ও ২০১৭ তে আফগানিস্তানে ব্যাপক বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ চালায় তালিবানরা।