'উনি চুমু খেয়ে বললেন, তোমায় ভালোবাসি', হলফনামায় দাবি ইন্টার্নের
এক আইনপড়ুয়ার শ্লীলতাহানির অভিযোগে এখন নিশানায় পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে তিনি জনৈকা ইন্টার্নের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণও পেয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট মেয়েটির অনুমতি নিয়ে ইন্দিরা জয়সিং জানালেন সেই রাতে ঘটা ঘটনাক্রম।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "যদি মেয়েটির সমর্থন না থাকত, তা হলে আমি সব কথা জনসমক্ষে বলতাম না। ওর হলফনামা থেকে জানা যাচ্ছে, গত বছর বড়দিনে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বিচারপতি ওকে ডেকে পাঠান হোটেলের ঘরে। এআইএফএফ (অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন) নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরির কথা ছিল। হলফনামায় মেয়েটি পরিষ্কার বলেছে, 'উনি আমায় বললেন, পরদিন সকালে রিপোর্টি জমা দিতে হবে এবং আমি যেন হোটেলে থেকে সারা রাত কাজ করি। আমি রাজি হইনি। ওঁকে বলেছিলাম, তাড়াতাড়ি করে কাজ শেষ করে আমি ফিরে যাব। এক সময় উনি হঠাৎ একটা লাল রঙের মদের বোতল বের করলেন। বললেন, সারাদিন আমার নাকি অনেক খাটনি হয়েছে। তাই ওঁর শোওয়ার ঘরে গিয়ে আমি যেন বিশ্রাম করি আর একটু মদ খাই। আমি তখন খুব অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু, উনি আবার বলেন, তুমি খুব সুন্দর। এটা শুনে আমি যখন চেয়ার ছেড়ে উঠে যাচ্ছি, উনি আচমকা আমার হাত টেনে ধরে বললেন, তুমি কি জানো না আমি তোমার দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছি। আমি তোমায় পছন্দ করি, আমি তোমায় ভালোবাসি। আমি পালাতে চেষ্টা করলে উনি আমার হাতে চুমু খান এবং বারবার বলেন, আমায় উনি কতটা ভালোবাসেন।' যে লোক একটা ছোটো মেয়েকে এই কথা বলে, তাঁর এক্ষুণি পদত্যাগ করা উচিত।"
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সংসদে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস এই মর্মে হট্টগোল জুড়ে দেয় যে, অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে হবে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিবালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "অপেক্ষা করছি, সুপ্রিম কোর্ট কখন ও কীভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করে তা দেখতে। তার পর দরকারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।" সমাজবাদী পার্টির নেতা নরেশ আগরওয়াল বলেন, "যদি রাজনীতিক, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়, তা হলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই বা হবে না কেন?" সিপিআইয়ের ডি রাজা বলেছেন, "ওঁর এক্ষুণি পদ ছাড়া উচিত।"