বুলডোজার দিয়ে ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভাঙার সঙ্গে সাম্পদায়িক অশান্তির যোগ নেই, সুপ্রিম কোর্টে দাবি যোগী সরকারের
বুলডোজার দিয়ে ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভাঙার সঙ্গে সাম্পদায়িক অশান্তির যোগ নেই, সুপ্রিম কোর্টে দাবি যোগী সরকারের
চলতি মাসের শুরুর দিকে কানপুর ও প্রয়াগরাজে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। যোগী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতা করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করার অপরাধেই বুলডোজার দিয়ে বাড়ি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের দুই শহরে বুলডোজার দিয়ে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরসঙ্গে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বা বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করার কোনও যোগ নেই।
সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামায় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন জানিয়েছে, বুলডোজার দিয়ে বাড়ি গুড়িয়ে ফেলার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্বে হয়েছে। অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতেই তারা বুলডোজার চালিয়েছিল। ইসলাম সংগঠন উলামা-ই-হিন্দ-ইসলামিক সুপ্রিম কোর্টে উত্তরপ্রদেশে অবৈধভাবে বাসস্থান ধ্বংস বন্ধ করার আবেদন করে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে দেশের শীর্ষ আদালত গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নোটিশ দেয়। সেখানে বলা হয়, কেবল আইন মেনেই বুলডোজার দিয়ে এই ধ্বংসের কাজ চালানো যেতে পারে। প্রতিশোধের জন্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিতে পারবে না।
প্রয়াগরাজে ছাত্র নেতা আফরিন ফতিমার বাড়ি বুলডোজারে গুড়িয়ে দেয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগের ভিত্তিতে আফরিনের বাবা তথা বাড়ির মালিক জাভেদ মহম্মদের নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ছিল।
উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, আবসিক এলাকায় তাঁরা অবৈধভাবে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছিলেন। এই নোটিশগুলো জাভেদ মহম্মদ বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। তাই তাঁদের বাড়ির দেওয়ালে নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নোটিশে বাড়িটি ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জাভেদ মহম্মদ এই নোটিশের কোনও উত্তর দেননি। ১২ জুন বাড়িটি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে বাড়িটি ভেঙে ফেলা সম্ভব হয় বলে উত্তরপ্রদেশ সরকার হলফনামায় সুপ্রিমকোর্টকে জানিয়েছে।
কানপুরের ঘটনার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, ২০২২ সালের জুনে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির অনেক আগেই ওই দুটো নির্মাণ ধ্বংসের পরিল্পনা নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কানপুরে একটি নির্মাণ ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের আগস্টে অন্যটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বা বিক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য নির্মাণ ধ্বংসের মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বলে হলফনামার জানানো হয়।
তৃণমূলের সঙ্গে আত্মিক যোগ! মমতার সঙ্গে দেখা হতেই কেঁদে ফেললেন শোভন
প্রসঙ্গত, জুন মাসের শুরুর দিকে বিজেপির দিল্লির প্রাক্তন দুই মুখপাত্র নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতা করে দেশে বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়। উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গাতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ক্রমেই এই বিক্ষোভ হিংসার আকার ধারণ করে। এই বিক্ষোভের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গায় বুলডোজার দিয়ে নির্মাণ ধ্বংস করে দেওয়া। উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অপরাধে তাঁদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে সেই অভিযোগ অস্বীকার করল উত্তরপ্রদেশ সরকার।