প্রতিবাদের জরিমানা ৫০ লক্ষ! বিক্ষুব্ধ কৃষকদের নোটিশ যোগী সরকারের, সাফাই পুলিশের
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর মূল্য নাকি জরিমানা ৫০ লক্ষ টাকা! সম্প্রতি সম্বলপুরের কৃষকনেতাদের এমনই নোটিশ পাঠিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক রাজ্য-রাজনীতিতে। এদিকে রাজ্য দেশ জোড়া বিতর্কের হাত থেকে যোগী সরকারকে বাঁচাতে এবার আসরে নামল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

সাফাই দিচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
সূত্রের খবর, সম্প্রতি সম্বলপুরের মহকুমা শাসকর তরফে আন্দোলনরত কৃষকদের এই বিশালাকার জরিমানা করা হয়। যদিও এই খবর জানাজানি হতেই মুকুম সমাজের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ। তারপরেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে আসরে নামে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পুলিশের যুক্তি, , সামান্য 'কেরানিসুলভ' ভুলের কারণেই এই সমস্যা। মহকুমা শাসক ছুটি থেকে ফিরে এলেই ভুল শোধরানোর আশ্বাসও দেওয়া হয়। এদিকে বিরোধী রাজনীতিকদের মতে, কৃষকদের প্রতিরোধ থেকে বিরত রাখতেই ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের মূল মাথাদের বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্রে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

ভারতীয় ফৌজদারী কার্যবিধির আওতায় জরিমানা
সূত্রের খবর, জেলাশাসকের তত্ত্বাবধানে গত ১২ ও ১৩ ডিসেম্বরে ছয় কৃষক নেতাকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানার নোটিশ পাঠানো হয়। আঅর ঠিক এখানেই পুলিশের যুক্তি জরিমানার অঙ্কে গোলযোগের কারণেই এই সমস্যা। আদপে তা ৫০ লক্ষের বদলে হবে ৫০ হাজার। তাই ৫০ হাজার কী করে ৫০ লক্ষ হলো বিষয়ে জেলাশাসক ফিরে এলেই বৈঠক করা হবে বলেও জানিয়েছেন সম্বলের সার্কেল অফিসার অরুণ কুমার সিংয়। পাশাপাশি সহকারী জেলাশাসকের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন সম্বলের পুলিশ সুপার। যদিও এতে চিঁড়ে ভিজবে না বলেই মত রাজনীতিকদের।

"আমরা কৃষক, সন্ত্রাসবাদী নই"
গত ২৬শে নভেম্বর থেকেই সম্বলে একত্রিত হয়ে নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন কৃষকরা। প্রতিবাদী কৃষকদের তরফে কৃষক সংগঠন বিকেইউয়ের জেলা সম্পাদক রাজপাল সিং এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমরা অহিংসার সাথে গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় রেখে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা কৃষক, সন্ত্রাসবাদী নই। তাহলে ৫০ লক্ষ টাকার জরিমানা কেন?" পুলিশকর্তাদের তরফে এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর মেলেনি। কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, "ছোট্ট একটি ভুল হয়েছে মাত্র।" যদিও কৃষকরা প্রতিবাদ করার জন্য কেন জরিমানা দেবেন, সে বিষয়ে নিরুত্তর উত্তরপ্রদেশ সরকার।

আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন প্রতিবাদীরা
এদিকে দেশব্যাপী যখন ক্রমেই বাড়ছে কৃষক আন্দোলনের ঝাঁঝ তখন উত্তরপ্রদেশে কিভাবে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন প্রতিবাদী কৃষকরা, তা ফুটে উঠেছে বিকেইউয়ের সঞ্জীব গান্ধীর কথায়। তিনি জানান, "সর্বত্র পুলিশ টহল দিচ্ছে। ঘেরাও কর্মসূচির আগেই বাড়ি থেকে তুলে আনা হচ্ছে আমাদের। ২৮শে ডিসেম্বর একদিনের জন্য কোনোভাবে দিল্লিতে যেতে পেরেছিলাম আমরা। তাছাড়া সবসময় আতঙ্কে থাকছি আমরা। রাতে মাঠে ঘুমাতে হচ্ছে, যাতে সকালে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালু করা যেতে পারে।" রাষ্ট্রীয় কিষাণ মজদুর সঙ্ঘের তরফে রাজবীর সিং জানিয়েছেন যে, ৫০ লক্ষের জরিমানা হোক বা প্রতিবাদের আগের দিন হেফাজতে রাখা, নাকাল করার কোনো কসুর ছাড়ছে না পুলিশবাহিনী।

আমিতের আসার আগেই কেন্দ্রের বিশেষ নিরাপত্তা শুভেন্দুকে, বিজেপি যোগের ইঙ্গিত ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে