রামদেবকে ফোনে কাতর অনুরোধ, যোগীর 'অসহযোগিতায়' উত্তরপ্রদেশে পতঞ্জলী প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রামদেব এবং বালকৃষ্ণকে ফোন করে রাজ্য থেকে পতঞ্জলীর ফুড পার্ক না সরানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। একের পর এক উপনির্বাচনে হারের পর দলের মধ্যেই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এর মধ্যে আবার মঙ্গলবার বাবা রামদেব উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রস্তাবিত পতঞ্জলি ফুড পার্ক প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। কারণ, 'যোগী সরকারের হতাশাজনক মনোভাব'। এরপরই তড়িঘড়ি বাবাজীকে যোগী ফোন করে প্রকল্পটি উত্তরপ্রদেশেই রাখার জন্য অনুরোধ করলেন।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যোগগুরু রামদেব এবং পতঞ্জলী আয়ুর্বেদের এমডি আচার্য বালকৃষ্ণ দুজনকেই ফোন করেন বলে জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের শিল্পোন্নয়ন মন্ত্রী সতীশ মোহন। তাঁর দাবি যোগগুরুর কাছ থেকে প্রকল্পটি উত্তরপ্রদেশেই রাখার কথা আদায় করে নিয়েছেন যোগী।
মঙ্গলবারই 'যোগী সরকারের হতাশাজনক মনোভাব'-এর কারণ দেখইয়ে পার্কটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন পতঞ্জলী আয়ুর্বেদের এমডি। আচার্য বালকৃষ্ণ অভিযোগ করেন, 'প্রকল্পটির জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ক্লিয়ারেন্সের জন্য অপেক্ষা করেছি, কিন্তু রাজ্য তা দেয়নি। তাই এখন আমরা প্রকল্পটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
তিনি আরও দাবি করেন এই প্রস্তাবিত ছয় হাজার কোটি টাকার ফুড পার্ক প্রকল্পটি হলে অনেক গরীব মানুষ উপক্ৃত হতেন। এখন তার আর সম্ভাবনা রইল না। তিনি বলেন, 'এই অঞ্চলের কৃষকদের জীবনযাত্রার উন্নতিই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। সরকারের এই মনোভাবে তা ধাক্কা খেল।'
গ্রেটার নয়ডাতে পতঞ্জলী ফুড অ্যান্ড হার্বাল পার্কের জন্য প্রায় ৪৫৫ একর জমির বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এই পার্কটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে প্র্সতাবিত এই ফুড এন্ড হার্বাল পার্ক প্রকল্পটির মোটে মূল্য প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। পতঞ্জলীর এক সূত্রের দাবি, পার্ক প্রকল্পটি থেকে প্রতি বছর ২৫ হাজার কোটি টাকার উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরাসরি ১০ হাজার জনের চাকরি হওয়ার সঙ্গে প্রকল্পটির মাধ্যমে মোট ৫০ হাজার পরিবার উপকৃত হবে বলে দাবি পতঞ্জলীর।
এদিন শিল্পোন্নয়ন মন্ত্রী সতিশ মোহন বলেন, 'প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে 'পতঞ্জলী আয়ুর্বেদ' নামে নিবন্ধিত হয়েছিল। কিন্তু পরে নাম বদলে 'পতঞ্জলী ফুড পার্ক' করা হয়। এতেই ক্লিয়ারেন্সগুলি পেতে কিছুটা সময় লাগছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন ফুড পার্কটি উত্তরপ্রদেশেই থাকবে এবং আমরা পরের মন্ত্রিসভা বৈঠকেই প্রয়োজনীয় সংশোধনীগুলি সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়া শেষ করবো।' রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স গুলি আদায় করার জন্য কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রক পতঞ্জলী সংস্থাকে জুন মাসের শেষ পর্যন্ত সময় দিয়েছে।