ফিরে দেখা ২০২০: করোনা অতিমারীর নতুন পর্যায়, জনতা কার্ফু দেখল ভারত
ফিরে দেখা ২০২০: করোনা অতিমারীর নতুন পর্যায়, জনতা কার্ফু দেখল ভারত
২০২০ নতুন উদ্যোমে শুরু করেছিলেন বিশ্ববাসী। বিংশতে নতুন কিছু পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন সকলে। নতুন কিছু এলো বটে। তবে সেই নতুন না এলেই ভাল ছিল একথা মানবনে সকলে। গোটা বিশ্ব কাঁপিয়ে হানা দিলেন করোনা মহামারী। অদ্ভুত এক শত্রুর সঙ্গে লড়াইয়ে নামতে হয়েছে মানবজাতিকে। যাকে চোখে দেখা যায় না। নিঃশব্দে শেষ করে দিয়ে যায় জীবন। ঢাল-তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দারের মতোই লড়াইয়ে নামতে হয়েছে মানুষকে। আর সেই লড়াইয়ের প্রথম পদক্ষেপটা ছিল জনতা কার্ফু।
মহামারী চ্যালেঞ্জ
অজানা শত্রু। যাকে চোখে দেখা যায় না। অথচ অগুনতি তার সংখ্যা। নিঃশব্দে শরীরে প্রবেশ করে একেবারে হানা দেয় শ্বাসযন্ত্রে। ফুসফুস দাপিকে নিংড়ে নিয়ে যায় প্রাণ। এই অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়াইয়ে নামতে হয়েছে গোটা মানবজাতিকে। সেখানে আর কোনও সীমান্ত, জাতি, ধর্ম, বর্ণের ভেদ নেই। সকলকে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। যার নাম মানবজাতি। এখনও পর্যন্ত তার মারণ অস্ত্র হাতে পায়নি কোনও দেশ। উন্নতীর শিখরে থাকা তাবর দেশও নিরুপায় এই ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ভাইরাসের কাছে।
ভারতে করোনা থাবা
পূবের দেশ থেকে ভারতে করোনা আসতে বেশি সময় নেয়নি। চিনের উহানে প্রথম করোনা মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়ে। তিন জানান দেওয়ার আগেই বিশ্বের একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল সেই ভাইরাস। রেয়াত করেনি ভারতকেও। ভারতে প্রথম করোনা থাবা বসায় জানুয়ারি মাসে। উহানের মেডিকেল কলেজে পড়তে যাওয়া কেরলেন এক ছাত্রের শরীরে প্রথম দেখা গিয়েছিল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। তারপরে আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। দাবানলের আগুনের মতোই কেরলে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরা। একটা দুটো করে এখন ১ কোটির দিকে এগিয়ে চলেছে দেেশর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। পাল্লা দিয়ে ২ লক্ষের দিকে এগোচ্ছে করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যাও।
জনতা কার্ফু
করোনা সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে একাধিক নতুন শব্দ এসেছে দেশে। তার মধ্যে অন্যতম জনতা কার্ফু। করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম এই শব্দটির ব্যবহার করেন। গত ২২ মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জনতা কার্ফু পালনের ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২২ মার্চ রবিবার সকাল ৭টা থেরে রাত ৯টা পর্যন্ত জনতা কার্ফু পালন করেছিল গোটা দেশ। সকাল সাতটা থেকে রাত নটা পর্যন্ত ঘরবন্দি থাকার একটা পোশাকি নাম দিয়েছিলেন মোদী। সেটাকে বলা হয়েছে জনতা কার্ফু। করোনা লকডাউনের ট্রায়াল রান ছিল সেই জনতা কার্ফু। এই জনতা কার্ফুর একটা অংশ ছিল সন্ধে সাতটার সময় বাড়ির দরজায়, ছাদে অথবা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থালা অথবা ঘণ্টা বাজিয়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানানো।
লকডাউনের প্রস্তুতি
জনতা কার্ফু এক কথায় ছিল লক ডাইনের ট্রায়াল রান। তারপরেই ২১ দিনের লকডাইন ঘোষণা করে মোদী সরকার। টানা ২১ দিন ঘরবন্দী থাকার লড়াই। অদৃশ্য শত্রুর থেকে বাঁচার মোক্ষম অস্ত্র যাকে বলে। সেই অস্ত্র প্রয়োগে বিপুল ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছে মানব জাতিকে। দোকান, বাজার বন্ধ, বন্ধ ট্রেন, বাস, মেট্রো বিমান পরিষেবাও। তার জেরে যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছে দেশবাসীকে সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠকে আরও কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। কিন্তু তার পরেও করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারছে না মানবজাতি। ভ্যাকসিন তৈরির লড়াই জারি রয়েছে।
ফিরে দেখা ২০২০: সিএএ থেকে কৃষক আন্দোলন, বিক্ষোভ আর অস্থিরতায় কাটল একটা বছর