ফিরে দেখা ২০১৯: ভয়াবহ ৫ প্রাকৃতিক বিপর্যয় যা দেশকে মারাত্মক প্রভাবিত করেছে
সারা বছরেই কোনও কোনও সময়ে দেশের কোনও না কোনও জায়গায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা গিয়েছে।
সারা বছরেই কোনও কোনও সময়ে দেশের কোনও না কোনও জায়গায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা গিয়েছে। তবে সেই বিপর্যয়ের মধ্যেই কোনও কোনওটির ভয়াবহতা অন্য ঘটনাগুলিকে ছাপিয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখ্য বিহারের তাপপ্রবাহ, বিহারের বন্যা, কেরলের বন্যা, সাইক্লোন ফেনি এবং কেরলের বন্যা। এই বিপর্যয় গুলিতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বিহারে তাপপ্রবাহ, কমপক্ষে ১৮৪ জনের মৃত্যু
২০১৯-এর মে থেকে জুনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে বিহারেও তাপপ্রবাহ চলেছে। দেশের ইতিহাসে এই তাপপ্রবাহ ছিল দিনের নিরিখে দীর্ঘতম। এই তাপপ্রবাহে এইবছর বিহারে সব থেকে বেশি ১৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ( ১৭ জুন, ২০১৯)। পূর্ব ভারতে বহু জায়গাত তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির ওপরে। আর পাটনা-সহ অনেক জায়গাতেই তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে স্কুলগুলিতে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে তাঁরা ১১-৪টের মধ্যে বাড়ির মধ্যেই থাকেন। এরপরেই বিহারে দেখা দেয় অ্যাকিউট এনকেফেলাইটিস সিনড্রোম। যার জেরে ১২০ ওপর শিশুর মৃত্যু হয়েছিল বিহারে( ১৯ জুন, ২০১৯)।
বিহারে বন্যা, কমপক্ষে ১৩০ জনের মৃত্যু
মে জুন তাপপ্রবাহ চলার পরেই বিহারে ব্যাপক বৃষ্টি। যার জেরে বিধ্বংসী বন্যা। যার জেরে বিহারের ৮৮.৪ লক্ষ মানুষ প্রভাবিত হয়েছিলেন। বন্যায় প্রভাব পড়েছিল বিহারের ১৩ টি জেলায়( ৩০ জুলাই, ২০১৯)। বন্যায় মৃতের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল ১৩০-এ।
কেরলে বন্যা, কমপক্ষে ১২১ জনের মৃত্যু
এনিয়ে পরপর দুবছর বর্ষাকালে কেরলে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জলাধারে জলের পরিমাণ বেড়ে যায়, প্লাবিত হয় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা। এই বন্যায় ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে(১৯ অগাস্ট, ২০১৯)। এছাড়াও ২১ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রায় ২৬ হাজার মানুষকে শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। মালাপ্পুরম জেলায় সব থেকে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। দুর্গতদের উদ্ধারে এনডিআরএফ-এর ৮৩ টি দল এবং সেনার ১৭৩ টি দলকে কাজে লাগানো হয়েছিল।
সাইক্লোন ফেনি, কমপক্ষে ৮৯ জনের মৃত্যু
১৯৯৯ সালের পর ২০১৯-এর এই ফেনি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে আঘাত করেছিল ওড়িশায়। ঘন্টায় ২০০ কিমি বেগে ঝড় আছড়ে পড়েছিল রাজ্যে। এই ঘূর্ণিঝড়ে ভারতে ৭২ জন আর বাংলাদেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর ভারতের বেশিরভাগ মৃত্যুই হয়েছিল ওড়িশায়। সংখ্যাটা ৬৪-র আশপাশে। প্রবল ঝড় ও বৃষ্টিতে গাছপালা ভেঙে পড়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থারও প্রভূত ক্ষতি হয়েছিল।
কর্নাটকে বন্যা, কমপক্ষে ৬১ জনের মৃত্যু
অগাস্টে ভারতের পশ্চিম উপকূলে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরল যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয় কর্নাটকে। সম্পত্তির ক্ষতির পাশাপাশি বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। রাজ্যের ৭ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল ৬১ জনের। আর এখনও নিখোঁদের তালিকায় রয়েছেন ১৪ জন( ১৪ অগাস্ট, ২০১৯)। পশ্চিমঘাটের যেসব জেলা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলি হল শিবমোগ্গা, উত্তরা কান্নাডা, দক্ষিণ কান্নাডা, কোডালু এবং চিকমাগালুরু।