রাষ্ট্রপতি পদে যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব বিরোধীদের একাংশের, কী প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের
বিরোধীরা সর্বসম্মত হয়ে এক প্রার্থী দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পদে। সেই মর্মে ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরহিত্যে একটি বৈঠক হয়েছে।
বিরোধীরা সর্বসম্মত হয়ে এক প্রার্থী দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি পদে। সেই মর্মে ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরহিত্যে একটি বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কে হবেন বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি তাঁরা। যাঁদের নাম প্রস্তাব হয়েছিল, তাঁরা সম্মত না হওয়ায় এবার উঠেছে যশবন্ত সিনহার নাম।
যশবন্ত সিনহা বর্তমানে তৃণমূলের সহ সভাপতি। তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। তাঁর নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে সামনে আসায় তৃণমূল তা কেমনভাবে নেবে সেটা যেমন একটা বিষয়, তেমনই সর্বসম্মতভাবে তা মেনে নেওয়া হয় কি না সেটাও দেখার। তৃণমূল থেকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যশবন্ত সিনহাকে কারা সমর্থন করেন, কারা ভ্রু কোঁচকান সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
শারদ পাওয়ার আগেই হাত তুলে নিয়েছিলেন। তিনি বিরোধীদের প্রস্তাব খারিজ করে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হতে চাননি। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বিরোধী বৈঠকে দিল্লিতে দুটি নাম উঠেছিল। দিল্লিতে গিয়ে এক প্রস্থ বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনও প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি বিরোধীরা। বিরোধীদের তরফে সর্বসম্মত এক প্রার্থী চূড়ান্ত করার ভার দেওয়া হয়েছিল শারদ পাওয়ারকে। সেই মর্মে শারদ পাওয়ার দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছেন আবার। তার আগেই তৃণমূলের যশবন্তের নাম সামনে আসে।
মমতার ডাকা বিরোধী বৈঠক থেকেই দুটি নাম উঠে এসেছিল। এক তৃণমূল প্রস্তাব করেছিল ফারুক আবদুল্লার নাম। আর তৃণমূল ও সিপিএম তথা বামেদের তরফে প্রস্তাব করা হয়েছিল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম। কিন্তু একে একে দুজনেই এই নির্বাচনী লড়াই থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। গোপালকৃষ্ণ গান্ধী জানিয়ে দিয়েছেন তিনি কোন নির্বাচনে নেই। যদি সর্বদলীয় সম্মতিতে তাঁকে বেছে নেওয়া হয়, তিনি সেই প্রস্তাব ভেবে দেখতে পারেন।
তবে তা হওয়ার নয়। কারণ বিজেপি ও তাদের সহযোগী দলগুলি যে বিরোধীদের প্রস্তাবিত গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম মেনে নেবেন না। এই অবস্থায় তৃণমূলের যশবন্ত সিনহার নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের তরফে তা নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দেওয়া হয়েছে। এদিন বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের সিংহভাগ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, যশবন্ত সিনহার নাম যদি সর্বসম্মতভাবে মেনে নেওয়া হয় তাদের আপত্তি নেই। শারদ পাওয়ারের নেতৃত্বে বিরোধীরা বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হবে।
তৃণমূলের তরফে এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাচ্ছেন না এই বৈঠকে যোগ দিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তে বিরোধী বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে কার নামে সিলমোহর পড়ে, তা-ই দেখার।
শারদ পাওয়ারের কাছে প্রত্যেক দলের তরফেঅ নাম জমা দেওয়ার কথা ছিল। তার উপরই মূলত আলোচনা হবে। সেই কারণেই মঙ্গলবার বিরোধী দলগুলির বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকতে না পারলেও তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাচ্ছেন। তবে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এড়িয়ে গেলেন তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।