এই প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে দু' দু'বার UPSC-র তালিকায় এই তরুণী
জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন ২৬ বছরের বৈশালী শর্মা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাশ করা বৈশালী পরপর দুই বছর ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়েছেন।
কানে শুনতে পান না প্রায় একদমই। তবে সেই ঘটনায় মুষড়ে না পড়ে জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন ২৬ বছরের বৈশালী শর্মা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাশ করা বৈশালী পরপর দুই বছর ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়েছেন।
ছোট থেকেই কানে প্রায় শুনতেই পান না বৈশালী। প্রায় ৮০ ভাগ শ্রবণক্ষম বৈশালীর সফল হওয়ায় তা অবশ্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বরং নিজের দুর্বলতাকেই নিজের শক্তিকে বদলে নিয়েছেন তিনি। নিজেকে এমনভাবে তৈরি করেছেন যে ঠোঁটের নড়াচড়া দেখেই কথা বুঝে নিতে পারেন তিনি। আলাদা করে শোনার প্রয়োজন হয় না।
আর এভাবেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় ২০২৫ নম্বরের মধ্যে ৮২৪ পেয়ে গতবছরে পাশ করেছিলেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্যাটেগরিতে বৈশালী দ্বিতীয় হন। তবে প্রয়োজনের চেয়ে ওজন বেশি হওয়ায় গতবছরে তাঁকে আনফিট ঘোষণা তকে বাদ দিয়ে দেন পরীক্ষকরা।
ঘটনা হল প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে লেখা পরীক্ষার পর মেডিক্যাল টেস্ট দিতে হয়। যেখানে বিএমআই সহ একাধিক পরীক্ষা দিতে হয়। আর সেখানেই গতবছরে আটকে গিয়েছিলেন বৈশালী।
তবে যেভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে বৈশালী এগিয়ে গিয়েছেন, ঠিক সেভাবেই মন খারাপ করে মুষড়ে না গিয়ে এবছরও ইউপিএসসিতে সাফল্য পেয়েছেন তিনি।
এবছর ১২০৯ জন প্রার্থী ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছেন। তার মধ্যে ৪৪জন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার মধ্যে ১৫ জন আবার শ্রবণক্ষম, ৭জন চোখে দেখতে পান না, ২২জন সেরেব্রাল পালসি সহ নানা সমস্যায় পুরোপুরি সুস্থ নন।
বৈশালী নিজের সাফল্যের খবরে জানিয়েছেন, গতবছরে তাঁকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় পরিবারের লোকেরা আইনের দ্বারস্থ হতে চেয়েছিলেন। তবে বৈশালী চাননি। তিনি ফের একবার নিজেকে প্রমাণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আর এবছর ফের পাশ করে তা করে ছেড়েছেন।
তবে সাফল্য পেলেও তা কতটা ধরে রাখতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গিয়েছে বৈশালীর মনে। তিনি জানিয়েছেন, কানে শুনতে পান না বলে তিনি স্নাতকোত্তর পড়তে পারেননি। কারণ স্টেথোস্কোপের স্পন্দন শোনা ও এমার্জেন্সি ফোন কল ধরতে না পারা এর অন্যতম কারণ। এমনকী ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য গ্রুপ করে টিউশনও নিতে পারেননি নিজের শারীরিক সমস্যার জন্য। তাই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে গিয়ে বহু সময় তিনি কাটিয়েছেন।
এবছর ইন্টারভিউয়ে ২৭৫ নম্বরের মধ্যে ১৭০ পেয়েছেন বৈশালী। ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন মথুরা হাসপাতালে। তাঁর পিতা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী। দুই বোন ও এক ভাই-সকলেই বৈশালীর বাড়িতে মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনা করে চিকিৎসা জগতের সঙ্গে যুক্ত।