মহিলাদের দিয়ে গড়া ৬২০ কিলোমিটার 'প্রাচীর'! শবরীমালায় প্রবেশ-প্রশ্নে অভিনব প্রতিবাদ
সু্প্রিম কোর্টের সম্মতি মিললেও এখনও কেউ প্রবেশ করতে পারেননি শবরীমালা মন্দিরে। কেরল সরকারের শত চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, প্রবেশাধিকার পাননি কোনও মহিলারা।
সু্প্রিম কোর্টের সম্মতি মিললেও এখনও কেউ প্রবেশ করতে পারেননি শবরীমালা মন্দিরে। কেরল সরকারের শত চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, প্রবেশাধিকার পাননি কোনও মহিলারা। তার প্রতিবাদেই এবার পথে নামলেন মহিলারা। কেরলের উত্তরে কসোরগড় থেকে দক্ষিণে তিরুবনন্তপুরম পর্যন্ত ৬২০ কিলোমিটার মানব প্রাচীর তৈরি করলেন মহিলারা।
লক্ষ মহিলার মানব-বন্ধন
শবরীমালায় প্রবেশাধিকারের সমর্থনে অভিনব এই প্রতিবাদে নামলেন কেরলের লক্ষ লক্ষ মহিলা। মহিলারা হাতে হাত ধরে মানব প্রাচীর তৈরি করলেন। তিরুবনন্তপুরমে মানব প্রাচীরের শেষে ছিলেন বৃন্দা কারাত। বছরের প্রথম দিনে এই ধরনের অভিনব উদ্যোগে কেরলের শবরীমালা মন্দির ইস্যু ফের খবরের শিরোনামে।
শবরীমালা প্রবেশের দাবিতে
সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মন্দিরে কোনও মহিলাকে মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়ার যে প্রথা রয়েছে, তা আসংবিধানিক। কিন্তু তারপরও মন্দিরে মেয়েদের ঢুকতে দিতে রাজি নন অনেকে। তা নিয়েই বিবাদ, প্রতিবাদ। তাই মঙ্গলবার বছরের প্রথম দিনে সমানাধিকারের দাবিতে মানব প্রাচীর গড়লেন কেরলের মহিলারা।
বামফ্রন্টের নেতৃত্বে ১৭৬ সংগঠন
এদিন দুপুর তিনটে থেকে সমবেত হন মহিলারা। তারপর বিকেল চারটেয় গড়া হয় মানব প্রাচীর। এই মানব প্রাচীরের মাধ্যমে অভিনব প্রতিবাদের নেপথ্যে রয়েছে সিপিএম, সিপিআই, শ্রী নারায়ণ ধর্ণ পরিপালন যোগম, কেরল পুলায়ার মহাসভা সহ ১৭৬টি সংগঠন। উদ্যোক্তাদের দাবি, ৩১ লক্ষ মহিলা সক্রিয় ছিলেন। অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৫০ লক্ষ মহিলা।
মহিলা-প্রাচীরে অভিনব প্রতিবাদ
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, শবরীমালা মন্দিরে মেয়েদের ঢুকতে যেভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে, তা বেআইনি। এর ফলে মহিলাদের নামিয়ে মানব বন্ধন বা মানব প্রাচীর তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা ছিলেন কসোরগড়ে, আর তিরুবনন্তপুরমে ছিলেন বৃন্দা কারাত।
মহিলাদের সমানাধিকার দাবি
একদিকে মহিলা প্রাচীর, অন্যদিকে প্রাচীর গড়েন পুরুষরা। সেই প্রাচীরে শপথ নেওয়া হয়, আমরা প্রগতিশীল চিন্তাধারায় বিশ্বাসী। প্রগতিশীল মূল্যবোধকে সমর্থন করব। মেয়েদের সমানাধিকার নিয়ে আমরা লড়াই চালিয়ে আসছি, লড়াই চালিয়ে যাব। কেরলকে আমরা পাগলা গারদে পরিণত হতে দেব না। আমাদের লড়াই ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও পথে
এদিনের মিছিলে অংশগ্রহণ করেন কেরলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। সেই তালিকায় ছিলেন মালায়.লাম লেখক থেকে শুরু করে সমালোচক, শিক্ষাবিদ, শিল্পপতি প্রমুখ। দুই শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি লড়াই অংশগ্রহণ করেন। এই মানব প্রাচীর গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়ছিল মাস খানেক আগে। এই মানবপ্রাচীর নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক।