গ্রামের সাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজস্থানের সবচেয়ে বড় ড্রাগ মাফিয়া এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ
জয়পুর, ১৪ অক্টোবর : রাজস্থানের আর পাঁচটা সাধারণ ঘরের বৌয়েরা যেমন হয়, দেখতে-শুনেত তেমনই ছিল ৩১ বছরের সুমিতা বিষ্ণোই। তবে গ্রামের সাধাসিধে দেখতে এই মহিলাই যে রাজস্থানের সবচেয়ে বড় আফিমের কারবারি তা বোধহয় ঘুণাক্ষরেও আন্দাজ করতে পারেনি পুলিশ। [পুরনো বইয়ের ভাঁজে রাখা ১ লক্ষ টাকা কাগজওয়ালাকে দিয়ে দিলেন এক গৃহবধূ!]
তবে শেষপর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। সুমিতা আপাতত যোধপুর পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়েই রাজস্থানের সবচেয়ে বড় ড্রাগ চোরাচালান নেটওয়ার্ককে গুড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। [আজমেরে ভিখারিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, এটিএম কার্ড!]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দুয়েক আগে ড্রাগসের চোরাচালান করার অভিযোগে পুলিশ ২জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তারাই জানায়, সুনিতা নামে এক মহিলার নির্দেশে তারা কাজ করে। এরপরই সুনিতা ওরফে সুমিতার যোধপুরের বোরানাডা এলাকায় চারতলা বিলাসবহুল বাড়িতে হানা দিয়ে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুলিশ। [রাজস্থানে গর্ভবতী হলেই মিলবে ৫ লিটার ঘি, সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভায়]
সুমিতার বাড়ি থেকে ৭৬ গ্রাম ড্রাগস উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, সুমিতার বাড়ি থেকে একটি জিপিএস উদ্ধার হয়। এছাড়া বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। সেই গাড়ি চড়েই কোটি কোটি টাকার ড্রাগসের ব্যবসা ঘুরে ঘুরে সামাল দিত সুনিতা। এমনটাই জানা গিয়েছে। [অশিক্ষায় ডুবে থাকা ভারতের প্রথম ১০ স্থানাধিকারী রাজ্য]
পুলিশ জানাচ্ছে, ৬ বছর আগে গ্রাম থেকে নিজের স্বামীকে নিয়ে যোধপুরে আসে সুমিতা। স্বামী পেশায় গাড়ি চালক ছিল। তিনি পেশার তাগিদে কর্ণাটকে চলে গেলে সুমিতার সঙ্গে আলাপ হয় রাজুরাম ইকরামের সঙ্গে। এই রাজুরাম আগে থেকেই বেআইনি মদ ও ড্রাগসের ব্যবসা করত। এছাড়া হিস্ট্রি শিটার হিসাবেও নাম রয়েছে তার।
এই রাজুরামই সুমিতাকে ড্রাগসের ব্যবসায় নামিয়ে দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। বছরখানেক আগে রাজুরাম কিছু সময়ের জন্য গ্রেফতার হলে সুমিতা পুরো ব্যবসার ভার নিজের কাঁধে তুলে নেয়। সে নিজে গিয়ে মধ্যপ্রদেশের নীমাচ ও রাজস্থানের চিত্তোরগড় থেকে আফিম সংগ্রহ করে আনত। কারণ এই জায়গাগুলিতে আফিমের চাষ হয়।
এছাড়া জিপিএস সিস্টেম গাড়িতে লাগিয়ে সুমিতা ড্রাগসের সাপ্লাই ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা বাড়িতে বসে যাচাই করত। নিজের পরিবারের বেশ কিছু সদস্যকেও সুমিতা নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
সুমিতাকে গ্রেফতারের পরই তার চারতলা বাড়ি সিল করে দিয়েছে পুলিশ। রাজুরামের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সুমিতা ছাড়াও আরও চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।