সামান্য অসতর্কতায় করোনার শিকার হতে পারেন ৮৫ শতাংশ ভারতীয়, উদ্বেগ কেন্দ্রীয় রিপোর্টে
সামান্য অসাবধানতা জেরে করোনার গ্রাসে যেতে পারেন ৮৫% ভারতীয়
করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ফের আশঙ্কার কথা শোনা গেল কেন্দ্রীয় রিপোর্টে। মঙ্গলবার জাতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানান হয়েছে, যতক্ষণ না করোনা টিকা আবিষ্কার হচ্ছে ততক্ষণ মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব বজায়ের মতো করোনা বিধি না মানলে মারণ করোনার শিকার হতে পারেন প্রায় ৮৫% ভারতীয়। এমনিতেই লকডাউনের সময়ে দেশবাসীর নিয়ম ভাঙার হিড়িকে নাস্তানাবুদ হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। এখন সাম্প্রতিক রিপোর্টে জনসাধারণের টনক নড়ে কিনা সেটাই দেখার।
শারীরিক দূরত্ব ও মাস্কই করোনার দাওয়াই
সম্প্রতি নীতি আয়োগের আধিকারিক ভি কে পাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "ভারতের প্রায় ৮০ থেকে ৮৫% মানুষ দ্রুত করোনার গ্রাসে যেতে পারেন। তাই কোভিডের মত সংক্রামক রোগ থেকে বাঁচতে গেলে শারীরিক দূরত্ব বজায় ও মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে।" তিনি আরও বলেছেন, "আমরা দেখেছি মাস্ক পরলে ও প্রাথমিক করোনা বিধি মেনে চললে মহামারীর ব্যাপকতাকে ৩৬-৫০% কম করা সম্ভব।" ওই কেন্দ্রীয় আধিকারিকের মতে বর্তমান গোটা দেশেই করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, যদিও পরিসংখ্যান সে কথা বলছে না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
গোষ্ঠী অনাক্রম্যতার মাধ্যমে কতটা ঠেকানো সম্ভব ভাইরাসের প্রকোপ ?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতিকে সমর্থন করতে দেখা যায় আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গবকে। এই প্রসঙ্গে তাঁর মত, আগামীতে ভারতের ৮০-৮৫% মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন এবং বাকি ১৫% হয়তো আগেই আক্রান্ত হয়েছেন অথবা তাঁদের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা শক্তিশালী বলে তাারা করোনা ছোঁয়াচ এড়াতে পেরেছেন। অন্যদিকে রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন আগেই জানিয়েছিলেন যে, ভারতে গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা গড়ে উঠতে গেলে প্রায় ৭০% ভারতীয়ের আক্রান্ত হওয়া প্রয়োজন, যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর তাই কন্টেইনমেন্ট অঞ্চলেগুলিতে করোনা বিধির যথাযথ পালন ও স্বাস্থ্যপরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকারের মন দেওয়া উচিত বলে মত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর।
সেরোলজিক্যাল সমীক্ষায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
ইতিমধ্যেই
দেশের
প্রায়
৮০টি
জেলার
২৮,০০০
মানুষের
উপর
'সেরোলজিক্যাল
সার্ভে'
সম্পন্ন
করেছে
আইসিএমআর।
আর
তাতেই
প্রমাণিত
হয়েছে
যে
ভারতের
সিংহভাগ
জনগণেরই
কোভিডে
আক্রান্ত
হওয়ার
সম্ভাবনা
প্রবল।
ফলে
আইসিএমআরের
বিশেষজ্ঞরা
জানিয়েছেন,
দ্রুত
সংক্রমণের
সম্ভাবনাকে
মাথায়
রেখেই
সরকারকে
আগাম
পদক্ষেপ
ঠিক
করতে
হবে।
চিকিৎসকদের
মতে,
আইসিএমআরের
'সেরো
সার্ভে'-র
মতো
সমীক্ষা
বারংবার
করলে
দেশের
ভিন্ন
ভিন্ন
স্থানে
করোনা
প্রতিরোধে
কি
রকম
কৌশল
অবলম্বন
প্রয়োজন,
তা
ঠিক
করতে
আখেরে
সুবিধা
হবে
প্রশাসনেরই।
উৎসবের মরসুমে ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ
জুলাইয়ে দিল্লিতে আইসিএমআর-র সেরো সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, রাজধানীর প্রায় ২৩% মানুষের মধ্যে করোনারোধী অ্যান্টিবডি গড়ে উঠলেও ঝুঁকিপ্রবণ ছিলেন ৭৭% মানুষ। আইসিএমআরের মহামারী বিশেষজ্ঞ ললিত কান্ত বলেছেন, "আগামী মাসগুলি উৎসবের সময়। এই সময়ে ঝুঁকি বহুগুণে বাড়বে। অন্যদিকে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ আক্রান্ত না হলেও গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা গড়ে ওঠা অসম্ভব।" ললিতের মতে, আগামী দিনগুলিতে প্রত্যেক ভারতবাসীকে দায়িত্ব নিতে হবে। এদিকে উৎসবের মরসুমে বিধি না মেনে যে বহু মানুষ করোনার কবলে পড়তে চলেছেন, সে বিষয়ে প্রশাসনকে আগেই সতর্ক করছে আইসিএমআর।
শীতেও দাপাতে পারে করোনা ভাইরাস! এখন থেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করলেন মমতা